শিরোনাম
মঙ্গলবার, ১৯ জুন, ২০১৮ ০০:০০ টা

রাজধানীতে আওয়ামী লীগ নেতা খুন

নিজস্ব প্রতিবেদক

রাজধানীর উত্তর বাড্ডায় আওয়ামী লীগ নেতা ফরহাদ আলীকে গুলি করে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। ফরহাদ আলী উত্তর বাড্ডা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। ঈদের আগের দিন শুক্রবার দুপুরে জুমার নামাজ পড়ে মসজিদ থেকে বের হওয়ার সময় হত্যকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। হত্যাকাণ্ডে অংশ নেওয়া দুই ঘাতকের ছবি ধরা পড়েছে পাশের বিল্ডিংয়ের সিসিটিভি ফুটেজে। খিলগাঁওয়ে নিখোঁজ সাফওয়ান আল নিনাদ নামে প্রথম শ্রেণির এক শিক্ষার্থীর লাশ উদ্ধার হয়েছে ঈদের দিন দুপুরে। ওই এলাকার একটি বিস্কুট ফ্যাক্টরির পিছনে ভ্যানের ভিতর থেকে শিশুটির লাশ উদ্ধার করা হয়। শ্বাসরোধ করে শিশুটিকে হত্যা করা হয়েছে বলে ধারণা পুলিশের। বাড্ডায় আওয়ামী লীগ নেতা ফরহাদ আলী খুনে জড়িত দুজনকে পুলিশ খুঁজছে। তবে হত্যাকাণ্ডের চার দিন পার হলেও গতকাল পর্যন্ত মামলা হয়নি। পুলিশ বলছে, সিসিটিভির ফুটেজ বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, দুই ঘাতক দৌড়ে পালাচ্ছে। তাদের একজন সাদা টি-শার্ট পরা, অন্যজনের গায়ে ছিল লাল টি-শার্ট। তদন্ত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দুই ঘাতকের একজন জুয়েল, অন্যজনের নাম মিরাজুল। জুয়েলকে হাতে পিস্তল নিয়ে দৌড়াতে দেখা যাচ্ছে। তবে দুজনের একেক সময় একেক নাম পাচ্ছে পুলিশ। তাই এখনো তাদের সম্পর্কে প্রাপ্ত তথ্য যাচাই-বাছাই চলছে। দুই ঘাতককে গ্রেফতারে মাঠে পুলিশ। পুলিশ জানায়, জুয়েল ও মিরাজুল দুজনকেই ঘটনার বেশ কিছুদিন আগে থেকে বাড্ডা এলাকায় ঘোরাঘুরি করতে দেখা গেছে। তারা বাড্ডায় স্থায়ীভাবে বসবাস করেন না মনে করছে পুলিশ। পুলিশ বলছে, ঘটনার দিন ফরহাদ আলী জুমার নামাজ শেষে স্থানীয় বায়তুস সালাম জামে মসজিদ থেকে বের হচ্ছিলেন। তখন তাকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে দুর্বৃত্তরা। দ্রুত উদ্ধার করে তাকে ইউনাইটেড হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। তিনটি বিষয় সামনে রেখে এই হত্যাকাণ্ডের তদন্ত চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। তা হলো— ডিস ব্যবসা নিয়ে দ্বন্দ্ব, ফুটপাথের ভাসমান দোকানের নিয়ন্ত্রণ ও কাউন্সিলর প্রার্থী হিসেবে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন চাওয়া। এ ছাড়া আরও বেশ কিছু বিষয় আমলে নিয়ে তদন্ত চলছে। এ বিষয়ে বাড্ডা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী ওয়াজেদ আলী জানান, ভিডিও ফুটেজ থেকে পাওয়া দুই ব্যক্তির সম্পর্কে নানা ধরনের তথ্য পাওয়া যাচ্ছে। আমরা এখনো তাদের শনাক্ত করতে পারিনি। তবে খুনিদের গ্রেফতারে কাজ শুরু হয়েছে। এদিকে খিলগাঁওয়ে শুক্রবার রাত থেকেই নিখোঁজ ছিল বনশ্রীর ন্যাশনাল আইডিয়াল স্কুলের ছাত্র সাফওয়ান আল নিনাদ। পরদিন লাশ উদ্ধারের সময় তার গলায় পলিথিন প্যাঁচানো ছিল। সন্তানের মৃত্যুর খবরে কান্নার রোল ওঠে রাজধানীর খিলগাঁও মেরাদিয়া এলাকায় তাদের বাড়িতে। হারিয়ে যাওয়া সন্তানকে খুঁজতে খুঁজতে সন্তানের লাশ উদ্ধারের খবর পায় বাবা-মা। পারিবারিক কলহ থেকেও এই হত্যাকাণ্ড হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন স্বজনরা। সম্ভাব্য সব সন্দেহের বিষয় মাথায় রেখেই তদন্ত শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। নিহত শিশু নিনাদের মামা এন এম শাহিন জানান, নিনাদের লাশ উদ্ধারের পর শরীরে আঘাতের চিহ্ন দেখা গেছে। গলায় ফাঁসের চিহ্ন, পায়ে ও হাতে মারধরের দাগ দেখা গেছে। গতকাল এ বিষয়ে খিলগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মশিউর রহমান জানান, পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে। নিহতের গলায় দাগ রয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে। পরিবারের সন্দেহ তার মামাদের দিকে। অভিযোগ পাওয়া যায়— জমিজমা নিয়ে তার মামাদের সঙ্গে পারিবারিক দ্বন্দ্ব ছিল।

সর্বশেষ খবর