বৃহস্পতিবার, ২১ জুন, ২০১৮ ০০:০০ টা
তনু হত্যার ২৭ মাস

সন্দেহভাজনদের ডিএনএ রিপোর্ট আগামী সপ্তাহে

মহিউদ্দিন মোল্লা, কুমিল্লা

সন্দেহভাজনদের ডিএনএ রিপোর্ট আগামী সপ্তাহে

কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজের ছাত্রী সোহাগী জাহান তনু হত্যার ২৭ মাস ২০ মে। দীর্ঘ সময়েও তনুর খুনিরা শনাক্ত হয়নি। নেই মামলার উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি। খুনি চিহ্নিত না হওয়ায় ক্ষুব্ধ তনুর পরিবার এবং কুমিল্লার বিশিষ্টজনেরা। তনুর পরিবার সন্দেহভাজন আসামিদের গ্রেফতার করে জিজ্ঞাসাবাদের দাবি জানিয়েছে। এদিকে সিআইডি থেকে দাবি করা হয়েছে, সন্দেহভাজন কয়েকজনের ডিএনএ রিপোর্ট আগামী সপ্তাহে তাদের হাতে আসবে। তনুর পারিবারিক সূত্র জানায়, ২০১৬ সালের ২০ মার্চ সন্ধ্যায় কুমিল্লা সেনানিবাসের ভিতর একটি বাসায় টিউশনি করতে গিয়ে আর বাসায় ফেরেননি তনু। পরে স্বজনরা খোঁজাখুঁজি করে রাতে বাসার অদূরে সেনানিবাসের ভিতর একটি জঙ্গলে তার মরদেহ পান। পরদিন তার বাবা কুমিল্লা ক্যান্টনমেন্ট বোর্ডের অফিস সহায়ক ইয়ার হোসেন বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে কোতোয়ালি মডেল থানায় হত্যা মামলা করেন। থানা পুলিশ ও ডিবির পর ২০১৬ সালের পয়লা এপ্রিল থেকে মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পায় সিআইডি কুমিল্লা। তনুর দুই দফা ময়নাতদন্তে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগ মৃত্যুর সুস্পষ্ট কারণ উল্লেখ করেনি। শেষ ভরসা ছিল ডিএনএ রিপোর্ট। গত বছর মে মাসে সিআইডি তনুর জামাকাপড় থেকে নেওয়া নমুনার ডিএনএ পরীক্ষা করে তিনজন পুরুষের শুক্রাণু পাওয়ার কথা গণমাধ্যমকে জানিয়েছিল। পরে সন্দেহভাজনদের ডিএনএ ম্যাচ করার কথা থাকলেও তা করা হয়েছে কিনা এ নিয়েও সিআইডি বিস্তারিত কিছু বলছে না। সর্বশেষ সন্দেহভাজন হিসেবে তিনজনকে ২০১৭ সালের ২৫ থেকে ২৭ অক্টোবর পর্যন্ত সিআইডির একটি দল ঢাকা সেনানিবাসে জিজ্ঞাসাবাদ করে। জিজ্ঞাসাবাদ করা ব্যক্তিরা তনুর মায়ের সন্দেহভাজন আসামি বলেও সিআইডি জানায়। তবে তাদের নাম জানানো হয়নি।

এদিকে সর্বশেষ ২০১৭ সালের ২২ নভেম্বর ঢাকা সিআইডি কার্যালয়ে বাবা ইয়ার হোসেন, মা আনোয়ারা বেগম, চাচাতো বোন লাইজু ও চাচাতো ভাই মিনহাজকে দিনভর পুরনো বিষয়গুলো জিজ্ঞেস করেন ঢাকা সিআইডির কর্মকর্তারা। নারীনেত্রী রাশেদা আখতার বলেন, ‘একটি সুরক্ষিত স্থানে তনুর মতো একটি প্রাণবন্ত মেয়েকে হত্যা করা হলো। ২৭ মাসেও কোনো আসামি শনাক্ত করা হলো না। হত্যাকারীদের দ্রুত শনাক্ত করার দাবি করছি।’

গণজাগরণ মঞ্চ কুমিল্লার সংগঠক খায়রুল আনাম রায়হান বলেন, ‘২৭ মাসেও অপরাধীদের শনাক্তে সিআইডি সফলতা দেখাতে পারেনি। তাদের ব্যর্থতায় মানুষের নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়ছে। দ্রুত খুনিদের শনাক্তের দাবি জানাচ্ছি।’ তনুর মা আনোয়ারা বেগম বলেন, সার্জেন্ট জাহিদ ও তার স্ত্রীকে গ্রেফতার করে জিজ্ঞাসাবাদ করলে হত্যাকারী কে বেরিয়ে আসবে। কারণ সার্জেন্ট জাহিদের বাসায় টিউশনি করতে যাওয়ার পর জঙ্গলে তনুর মরদেহ পাওয়া যায়। দেখছি দেখছি বলে সিআইডি ২৭ মাস পার করেছে। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও সিআইডি কুমিল্লার সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার জালাল উদ্দীন আহমেদ বলেন, মামলার স্বার্থে পুনরায় অনেককে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। সন্দেহভাজন কয়েকজনের ডিএনএ রিপোর্ট আগামী সপ্তাহে পাওয়া যাবে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর