রবিবার, ৮ জুলাই, ২০১৮ ০০:০০ টা

দূরত্ব ঘোচাতে ব্যস্ত শিক্ষামন্ত্রী বিএনপিতেও একাধিক প্রার্থী

শাহ্ দিদার আলম নবেল, সিলেট

দূরত্ব ঘোচাতে ব্যস্ত শিক্ষামন্ত্রী বিএনপিতেও একাধিক প্রার্থী

শিক্ষামন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য নুরুল ইসলাম নাহিদের নির্বাচনী আসন সিলেট-৬ (গোলাপগঞ্জ ও বিয়ানীবাজার)। তিনি গত দুই মেয়াদে টানা শিক্ষামন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করলেও তৃণমূল নেতা-কর্মীদের সঙ্গে তাঁর দূরত্ব বেড়েছে। অভিযোগ আছে দলের ত্যাগী নেতা-কর্মীদের মূল্যায়ন না করার। তাই আগামী সংসদ নির্বাচনের আগে সেই দূরত্ব ঘোচাতে চাইছেন শিক্ষামন্ত্রী। এ ছাড়া এ আসনে আওয়ামী লীগ থেকে একাধিক মনোয়ননপ্রত্যাশী রয়েছেন। আর মহাজোটের শরিক জাতীয় পার্টিও আসন ভাগাভাগিতে শিক্ষামন্ত্রীর আসনটি পেতে চাইছে। বিরোধী দল বিএনপিতেও একাধিক প্রার্থী চাইছেন দলীয় মনোনয়ন। জানা যায়, গত নির্বাচনের পর থেকে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের সঙ্গে ক্রমেই দূরত্ব বাড়তে থাকে শিক্ষামন্ত্রীর। নিজের নির্বাচনী এলাকায় এলেও তিনি নেতা-কর্মীদের সঙ্গে খুব একটা যোগাযোগ রাখতেন না বলে অভিযোগ আছে। ফলে অভিমানে দূরে সরে যেতে থাকেন নেতা-কর্মীরা। এখন তিনি নেতা-কর্মীদের মান ভাঙানোর চেষ্টা করছেন। ৩০ জুন ঢাকায় গণভবনে সিলেটের তৃণমূল নেতাদের নিয়ে বৈঠক করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ওই সভায় যোগ দিতে সিলেট-৬ আসনের গোলাপগঞ্জ ও বিয়ানীবাজার উপজেলার বিভিন্ন স্তরের নেতা ঢাকায় যান। এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে নিজের নির্বাচনী এলাকার নেতাদের বাসায় ডেকে নেন নুরুল ইসলাম নাহিদ। নেতাদের নিয়ে তিনি খাবারও খান। ওই সময় তৃণমূল নেতাদের অভিমানের কথা শুনে পুরনো দিনের ভুলভ্রান্তি মনে না রাখতে অনুরোধ করেন শিক্ষামন্ত্রী। তবে নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন পেতে প্রতিদ্বন্দ্বিতার মুখেই পড়তে হচ্ছে নাহিদকে। আগামী নির্বাচনে সিলেট-৬ আসন থেকে দলীয় মনোনয়ন পেতে দীর্ঘদিন ধরে তৎপর কানাডা আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি সরওয়ার হোসেন। এলাকায় শিক্ষামন্ত্রীর বিরুদ্ধে অসন্তোষকে কাজে লাগিয়ে স্থানীয় আওয়ামী লীগের একটি বড় অংশকে নিজের বলয়ে নিয়ে এসেছেন তিনি। ব্যাপক জনসংযোগ, মানুষের সুখে-দুঃখে পাশে থেকে নির্বাচনী এলাকায় নিজের শক্তিশালী অবস্থানও করেছেন সরওয়ার হোসেন। বিএনপি আগামী নির্বাচনে অংশ নিলে সিলেট-৬ আসনে একাধিক প্রার্থী মনোনয়ন চাইবেন। এ তালিকায় বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ইনাম আহমেদ চৌধুরী, সিলেট জেলা বিএনপি সভাপতি আবুল কাহের শামীম, জেলা ছাত্রদলের সাবেক আহ্বায়ক ফয়সল আহমদ চৌধুরী, জেলা বিএনপির উপদেষ্টা মাওলানা রশিদ আহমদ, জাসাসের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক চিত্রনায়ক হেলাল খানের নাম রয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে উপজেলা, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড কমিটিগুলো পুনর্গঠনের মাধ্যমে গোলাপগঞ্জ ও বিয়ানীবাজারে দলের সাংগঠনিক কাঠামো শক্তিশালী করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন জেলা সভাপতি আবুল কাহের শামীম। ফয়সল আহমদ চৌধুরীও বন্যার্তদের মধ্যে ত্রাণ বিতরণসহ সামাজিক ও রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে নির্বাচনী মাঠে শক্ত অবস্থান তৈরির চেষ্টা করছেন।

বিএনপি নেতা আবুল কাহের শামীম বলেন, স্থানীয় নেতা-কর্মীরাও আমাকে নির্বাচন করতে চাপ দিচ্ছেন। দল নির্বাচনে গেলে আমি মনোনয়ন পেতে পারি। সিলেট-৬ আসনে নির্বাচন করতে চান জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের বৈদেশিক বিষয়ক উপদেষ্টা সেলিম উদ্দিন। গত নির্বাচনে তিনি এ আসনে নির্বাচন করতে চেয়েছিলেন। তখন মহাজোটের কারণে আসনটি আওয়ামী লীগকে ছেড়ে দিয়ে সিলেট-৫ আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সংসদ সদস্য হন সেলিম। তবে এবার নিজের এলাকা সিলেট-৬ আসনে নির্বাচন করতে তৎপর তিনি। এ ব্যাপারে সেলিম উদ্দিন বলেন, ‘গত নির্বাচনে জোটের স্বার্থে সিলেট-৬ আসন ছেড়ে দিয়েছিল জাতীয় পার্টি। এবার আসনটিতে আমরা নির্বাচন করতে চাই।’

অতীতে স্বতন্ত্র লড়ে সিলেট-৬ আসনে দুবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন মকবুল হোসেন লেচু মিয়া। এই শিল্পপতি আগামী নির্বাচন ঘিরেও তৎপর রয়েছেন। এ ছাড়া জামায়াতের সিলেট জেলা দক্ষিণের আমির মাওলানা হাবিবুর রহমান ও জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের নেতা মো. শামসুদ্দীন এ আসনে নির্বাচন করতে চান।

সর্বশেষ খবর