রবিবার, ৮ জুলাই, ২০১৮ ০০:০০ টা
অষ্টম কলাম

সেই অন্ধকার গুহায় যেভাবে দিন কাটছে কিশোরদের

প্রতিদিন ডেস্ক

দুই সপ্তাহ ধরে থাইল্যান্ডের জলমগ্ন গুহায় আটকে থাকা ১২ খেলোয়াড় কিশোরকে নিয়ে দুশ্চিন্তা কেটে গেছে। তাদের কেউ মারা যায়নি, সবাই জীবিত আছে। এমনকি তারা গুহা থেকে প্রথমবারের মতো আবেগঘন চিঠি পাঠিয়ে বাবা-মাদের জানিয়েছে, ‘কেউ দুশ্চিন্তা করো না। আমরা সবাই ভালো আছি।’ সূত্র : বিবিসি।

হাতে লেখা চিঠিতে কেউ কেউ বলেছে, ‘আমাদের জন্য ফ্রাইড চিকেন পাঠাও।’ একজন লিখেছে, ‘টিচার আমাদের আর বেশি বেশি হোমওয়ার্ক দেবেন না!’ কিশোর ফুটবল দলটির ২৫ বছর বয়সী কোচও গুহায় আটকা আছেন। তিনি আলাদা চিঠিতে কিশোরদের পিতা-মাতার কাছে ক্ষমা চেয়ে বলেছেন, ‘কিশোরদের খেয়াল রাখার সর্বোচ্চ চেষ্টা করবেন।’ কোচ এক্কাপোল চ্যাংটাওং চিঠিতে আরও লেখেন, ‘সব বাচ্চাদের প্রিয় বাবা-মা, এখন তারা সবাই ভালো আছে। উদ্ধারকারী দল আমাদের সঙ্গে খুব ভালো ব্যবহার করছে এবং আমি আমার সর্বস্ব দিয়ে শিশুদের যত্ন নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি। যারা আমাদের সাহায্য করতে এসেছেন তাদের সবাইকে ধন্যবাদ। সেইসঙ্গে আমি বাচ্চাদের পিতা-মাতার কাছে আন্তরিকভাবে ক্ষমা চাইছি।’ উল্লেখ্য, ২৩ জুন বিকালে ফুটবল প্রশিক্ষণের পর কিশোরদের এ দলটি তাদের কোচের সঙ্গে মিয়ানমার সীমান্তবর্তী একটি ফরেস্ট পার্কের ভিতর অবস্থিত ‘থাম লুয়াং’ গুহায় প্রবেশ করে। দলের কিশোরদের বয়স ১১ থেকে ১৬ বছরের মধ্যে। গত সপ্তাহে গুহার ভিতর ফোনের লাইন বসানোর চেষ্টা করে ব্যর্থ হতে হয়। পরে শিশুদের পিতা-মাতাদের চিঠি গুহার ভিতর পৌঁছে দেওয়া হয়। যেগুলোর জবাব দিয়েছে তারা। থাইল্যান্ডের উত্তরাঞ্চলীয় প্রদেশ চিয়াই রাইয়ের এ গুহাটিতে তারা যখন প্রবেশ করে তখন এতে পানি ছিল না বলে মনে করা হচ্ছে। কিন্তু তারা গুহার ভিতরে প্রবেশের পর তুমুল বৃষ্টি শুরু হয় এবং আকস্মিকভাবেই পানি বেড়ে গিয়ে গুহার কিছু সংকীর্ণ অংশ পুরোপুরি ডুবে যায়। গুহায় প্রবেশের পরদিনই দলটির খোঁজ শুরু করেন উদ্ধারকর্মীরা। যদিও প্রচণ্ড বৃষ্টিপাতের কারণে উদ্ধার তৎপরতা ভীষণভাবে বিঘ্নিত হচ্ছিল। শেষ পর্যন্ত ১০ দিনের মাথায় গত সোমবার গভীর রাতে যুক্তরাজ্যের দুই ডুবুরি কিশোর দলটিকে খুঁজে পায়। পানি বাড়তে থাকায় প্রাণ বাঁচাতে তারা গুহার প্রবেশমুখ থেকে প্রায় ৪ কিলোমিটার ভিতরে ছোট একটি পাথুরে তাকের ওপর আশ্রয় নিয়েছিল। দলটিকে বের করে আনতে উদ্ধারকর্মীরা নানাভাবে চেষ্টা করছেন। নৌবাহিনীর ডুবুরি, সামরিক বাহিনীর সদস্য, বেসামরিক স্বেচ্ছাসেবীসহ হাজারখানেক মানুষ বিস্তৃত এ উদ্ধার অভিযানে অংশ নিচ্ছেন। গুহার ভিতর রসদ ও অক্সিজেন সরবরাহ করতে গিয়ে এরই মধ্যে একজন ডুবুরির মৃত্যুও হয়েছে। মারা যাওয়া সামান গুনান থাইল্যান্ড নৌবাহিনীর সাবেক ডুবুরি। তিনি স্বেচ্ছায় কিশোর দলটির উদ্ধার অভিযানে অংশ নিচ্ছিলেন।

সর্বশেষ খবর