বুধবার, ১১ জুলাই, ২০১৮ ০০:০০ টা

তলিয়ে যাচ্ছে নতুন এলাকা

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা ও বগুড়া

তলিয়ে যাচ্ছে নতুন এলাকা

প্লাবিত হচ্ছে নতুন নতুন এলাকা। কুড়িগ্রাম থেকে তোলা ছবি —বাংলাদেশ প্রতিদিন

বগুড়ার সারিয়াকান্দিতে যমুনা নদীর পানি কমতে শুরু করলেও কিছু নতুন এলাকা ও ফসলের খেত ডুবে গেছে। উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে তিন দিন পানি বাড়ার পর গতকাল থেকে পানি কমতে শুরু করেছে। তবে বন্যার আশঙ্কা দূর হয়নি যমুনা নদীপারে বসবাসকারীদের। যমুনা ও বাঙালি নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে নদী এলাকার নিম্নাঞ্চলে পানি প্রবেশ করেছে। দুই শতাধিক বসতবাড়ি ও বেশ কিছু পাটের খেতে পানি জমে আছে। এদিকে পানি কমলেও নদী চর এলাকার প্রায় তিন হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়ে আছে।

বগুড়া পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, যমুনা নদীর পানি গত ১২ ঘণ্টায় ৩ সেন্টিমিটার কমে বিপদসীমার ৭ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। যমুনা নদীর পানি কমলেও সারিয়াকান্দি উপজেলার চন্দনবাইশা ইউনিয়নের ঘুঘুমারী গ্রামে বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দা ফজলু মিয়া, সুবাশি বেওয়া, মেহেরুন ও খোকা মিয়া জানান, তারা ছয় দিন ধরে বাড়িঘর ছেড়ে স্থানীয় ওয়াপদা বাঁধে আশ্রয় নিয়েছেন। খেয়ে না খেয়ে তাদের দিন যাপন করতে হচ্ছে। যমুনা নদীর পানি সামান্য কমলেও বন্যায় বোহাইল ইউনিয়নের চর মাঝবাড়ি, কালিয়ান, কর্ণিবাড়ী ইউনিয়নের শনপচা, ইন্দুরমার, কাজলা ইউনিয়নের চরঘাগুয়া, পাকুরিয়া, চালুয়াবাড়ী ইউনিয়নের চরকাকালিহাতা, শিমুলতাইর, বিরামের পাঁচগাছি, হাটশেরপুর ইউনিয়নের কর্ণিবাড়ী, চকরতিনাথ, করমজাপাড়া ও সারিয়াকান্দি সদর ইউনিয়নের চরবাটিয়া গ্রামের কয়েক হাজার লোক পানিবন্দী হয়ে আছে। তারা চলাচল করছে নৌকা-ভেলায়। বগুড়ার সারিয়াকান্দির চন্দনবাইশা ইউনিয়নের ঘুঘুমারী গ্রামের বাসিন্দারা জানান, যমুনা নদীতে পানি বৃদ্ধির পর এলাকায় পানি প্রবেশ করেছে। গতকালও হাঁটু পানি রয়েছে। বগুড়ার সারিয়াকান্দি উপজেলা কৃষি অফিসার শাহাদুজ্জামান জানান, কয়েকটি পাট খেতে পানি জমেছে। যেসব খেতে পানি উঠেছে সেসব খেতের পাট কাটা শুরু করেছে চাষিরা। এই পাট খেতগুলো নদী এলাকায়। বগুড়ার সারিয়াকান্দি উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা সারওয়ার আলম জানান, কিছু পানি বৃদ্ধি পাওয়ার পর গতকাল থেকে কমতে শুরু করেছে। বন্যায় ক্ষয়ক্ষতি নিরুপণের জন্য সব ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানকে তালিকা প্রণয়নের বিষয়ে সহযোগিতার জন্য বলা হয়েছে। ক্ষয়ক্ষতি নিরুপণের পর বন্যা পুনর্বাসন কর্মকাণ্ড শুরু করা হবে।

নয় জেলা কবলিত : দেশের নয়টি জেলা বন্যা কবলিত হয়েছে, এসব স্থানে প্রয়োজনীয় নগদ অর্থ, টিন ও চাল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া। গতকাল দুপুরে সচিবালয়ে আন্তঃমন্ত্রণালয় সমন্বয় কমিটির সভা শেষে তিনি একথা জানান। এ সময় মন্ত্রী বলেন, কক্সবাজার জেলায় দুর্যোগ ঝুঁকিতে থাকা প্রায় ৩৫ হাজার রোহিঙ্গা পরিবারকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেয়া হয়েছে। মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বলেন, নয়টি জেলা আমাদের বন্যা কবলিত হয়েছে। সেখানে পানিও বেশি বেড়েছে। দুই জেলায় বেশ কিছু এলাকা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তা হল মৌলভীবাজার ও নীলফামারী। পহেলা জুলাই থেকে ৬৪ জেলায় একযোগে ১ কোটি ১২ লাখ টাকা এবং সাড়ে ৫ হাজার মেট্রিক টন চাল দেওয়া হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর