শুক্রবার, ১৩ জুলাই, ২০১৮ ০০:০০ টা

রাজনৈতিক মেলা বসল জামালপুরে

রফিকুল ইসলাম রনি, শফিক জামান ও জুলফিকার বাবলু (জামালপুর) মাদারগঞ্জ থেকে

রাজনৈতিক মেলা বসল জামালপুরে

মাদারগঞ্জের বালিজুড়ি এফএম উচ্চবিদ্যালয়ের মাঠে গতকাল শুরু হয়েছে তিন দিনব্যাপী সংগঠন মেলা। আওয়ামী লীগের এক ডজনেরও বেশি কেন্দ্রীয় নেতা এতে উপস্থিত ছিলেন —বাংলাদেশ প্রতিদিন

নানা রকম মেলার ভিড়ে অপরিচিতই বটে। আর নামে মেলা হলেও নেই কোনো পণ্য, নেই কোনো ক্রেতা। ‘সংগঠন মেলা’ নামে এমনই এক ব্যতিক্রমী মেলার আয়োজন করে জামালপুরের মাদারগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগ। কোনো রাজনৈতিক দলের এমন আয়োজন অতীতে কখনো চোখে পড়েনি। সুষ্ঠু ও সুশৃঙ্খল প্রতিযোগিতায় সংগঠনকে শক্তিশালী করার লক্ষ্যে নেওয়া পদক্ষেপ উপস্থাপন করতেই এই মেলার আয়োজন করা হয়।

মাদারগঞ্জের বালিজুড়ি এফএম উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠে গতকাল সকাল থেকে শুরু হয় তিন দিনব্যাপী সংগঠন মেলা। আওয়ামী লীগের এক ডজনেরও অধিক কেন্দ্রীয় নেতার উপস্থিতিতে এ সংগঠন মেলা শুরু হয়। মেলায় মাদারগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগ এবং এর সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের ৭২৯টি ইউনিট অংশ নিচ্ছে। মেলার পৃষ্ঠপোষক স্থানীয় সংসদ সদস্য, বস্ত্র ও পাট প্রতিমন্ত্রী মির্জা আজম। এ মেলার মধ্য দিয়ে দলের সাংগঠনিক গতি বাড়বে বলে মনে করেন আয়োজকরা। ব্যতিক্রমী এই মেলার উদ্বোধন করেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক। অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, বি এম মোজাম্মেল হক, এ কে এম এনামুল হক শামীম, আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, সাংস্কৃতিক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল, শিক্ষা সম্পাদক শামসুন নাহার চাপা, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক আফজাল হোসেন, উপ-প্রচার সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন, কেন্দ্রীয় সদস্য আজমত উল্লাহ খান, এস এম কামাল হোসেন, এবিএম রিয়াজুল কবির কাওছার ও মারুফা আকতার পপি।  মেলার এই আয়োজন দেখে মুগ্ধ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা। তারা বলেন, এ ধরনের আয়োজন বাংলাদেশে প্রথম। তাই তারা সবাই দেখতে এখানে এসেছেন।

জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, ‘সংগঠন মেলার ধারণাটি একেবারেই নতুন। আমি এ আয়োজন দেখে মুগ্ধ। আমরা চাই সংগঠন মেলার ধারণাটি সারা দেশে ছড়িয়ে দিতে। স্থানীয় সংসদ সদস্য এবং বস্ত্র ও পাট প্রতিমন্ত্রী মির্জা আজম বলেন, সংগঠনের কাজে গতি ধরে রাখতে মাদারগঞ্জের প্রত্যেকটি ইউনিট নিয়মিত সাংগঠনিক কর্মকাণ্ডের মধ্যে থাকে। দল সরকারে থাকলে অনেক সময় নেতা-কর্মীদের সাংগঠনিক কাজের প্রতি আগ্রহ কমে যায়। কিন্তু সংগঠন মেলাকে সামনে রেখে যদি ইউনিটগুলোর মধ্যে সাংগঠনিক কাজের ইতিবাচক প্রতিযোগিতা থাকে তাহলে দল লাভবান হয়। আমার সংসদীয় আসনের দুটি থানার প্রত্যেকটি ইউনিটের নেতা-কর্মীরা নিয়মিত সাংগঠনিক কর্মকাণ্ডের চর্চা করে থাকে। আমরা চাই এ ধারণাটি সারা দেশে ছড়িয়ে দিতে। সংগঠন মেলার ধারণাটি কীভাবে পেলেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটি আমাদের মাদারগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল রহমান বাদল প্রথম চিন্তা করেন। পরে আমরা সবাই মিলে এ ধারণাটি বাস্তবায়ন করলাম। মেলায় গুনারীতলা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের স্টলে গিয়ে দেখা যায়, প্রতিষ্ঠাকাল থেকে এখন পর্যন্ত ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকদের একটি নামের তালিকা ঝুলছে। পাশেই ঝুলছে ইউনিয়নের গণ্যমান্য ব্যক্তিদের একটি তালিকা ও ছবি। ব্যানারে প্রকাশ করা হয়েছে এক বছরের সাংগঠনিক প্রতিবেদন। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, জীবনে অনেক মেলা দেখেছি। কিন্তু সাংগঠনিক মেলা করা যায়-এটা ভাবিনি। মাদারগঞ্জের আওয়ামী লীগ তা করে আমাদের দেখিয়ে দিল। এই মেলা সারা দেশে ছড়িয়ে দিতে হবে। বস্ত্র ও পাট প্রতিমন্ত্রী মির্জা আজম বলেন, দেশে মাদারগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগ যে একটি মডেল সংগঠন তা প্রমাণিত। স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতারা জানান, প্রতিটি সাংগঠনিক ইউনিটের প্রতি মাসের সাংগঠনিক দক্ষতা বিবেচনায় সংগঠন ও সংগঠক পর্যায়ে পুরস্কার দেওয়া হয়। ফলে নেতাদের মধ্যে সব সময় এক ধরনের প্রতিযোগিতা থাকে। উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জীবন কৃষ্ণ সাহা অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন।

সর্বশেষ খবর