সিলেট সিটি করপোরেশন (সিসিক) নির্বাচনে বিরামহীন প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন সাত মেয়র প্রার্থী। ভোটারদের নজড় কাড়তে তারা নানা প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন। প্রচারণা ও প্রতিশ্রুতিতে স্বাভাবিকভাবেই এগিয়ে আছেন বড় দুই দল আওয়ামী লীগ প্রার্থী বদর উদ্দিন আহমদ কামরান ও বিএনপি প্রার্থী আরিফুল হক চৌধুরী। তারা ভোটারদের দ্বারে দ্বারে যাচ্ছেন। জমকালো এক নগরের স্বপ্ন দেখাচ্ছেন উভয় প্রার্থী। সিলেটকে পরিকল্পিত নগরী হিসেবে গড়ে তোলার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন তারা। সিসিকের প্রথম দুই মেয়াদের মেয়র ছিলেন মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি বদর উদ্দিন আহমদ কামরান। দ্বিতীয় মেয়াদে দায়িত্ব পালনের সময় সিলেট নগরীর উন্নয়নে একটি মাস্টারপ্ল্যান করেছিলেন তিনি। কিন্তু সেই মাস্টারপ্ল্যান বাস্তবায়নের কাজ তখন শুরু করে যেতে পারেননি কামরান। নির্বাচনে হেরে তাকে নগর ভবন থেকে বিদায় নিতে হয়েছিল। এবার সেই মাস্টারপ্ল্যান যুগোপযোগী ও আধুনিক করে নতুনভাবে আলোর মুখ দেখাতে চান কামরান। তিনি বলছেন, ৫০ বছর সময়কে বিবেচনা করে বিশেষজ্ঞদের মতামত অনুসারে মাস্টারপ্লান করা হবে। প্রতীক বরাদ্দ পাওয়ার পর থেকে প্রচারণায় নগরীর উন্নয়নে মাস্টারপ্ল্যানের বিষয়টি গুরুত্ব দিচ্ছেন কামরান। এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সদস্য বদর উদ্দিন আহমদ কামরান বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, এবার যদি নির্বাচিত হতে পারি, তবে আগের মাস্টারপ্ল্যান নিয়ে বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে বসব। তাদের মতামত, পরামর্শ অনুসারে ৫০ বছরের জন্য যুগোপযোগী মাস্টারপ্ল্যান করে সিলেট নগরীর উন্নয়ন কাজ করা হবে। সিসিকের তৃতীয় নির্বাচনে মেয়র নির্বাচিত হন মহানগর বিএনপির সাবেক সভাপতি আরিফুল হক চৌধুরী। আগের মেয়াদে আওয়ামী লীগ নেতা কামরান যে মাস্টারপ্ল্যান করেছিলেন, সেই প্ল্যান বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেননি আরিফ। এক্ষেত্রে আরিফ দাবি করেন, কামরানের করা মাস্টারপ্ল্যান সঠিক ছিল না। সেই প্ল্যানে বিভিন্ন সমস্যা ছিল। মেয়রের দায়িত্ব নেওয়ার পর আরিফ প্রায় ২৯ মাস সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এ এম এস কিবরিয়া হত্যা মামলায় কারান্তরীণ ছিলেন। বাকি সময়ে আরিফ মাস্টারপ্ল্যান করে কাজ করতে পারেননি। তবে বিশেষজ্ঞদের মতামত নিয়ে একটি মাস্টারপ্ল্যান মন্ত্রণালয়ে পাঠান তিনি। এবার নির্বাচিত হয়ে সেই মাস্টারপ্ল্যান বাস্তবায়ন করতে চান আরিফ। নির্বাচনের প্রচারণায় এ বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে তুলে ধরছেন তিনি। এ ব্যাপারে বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, সিলেট নগরীর উন্নয়নে একটি অত্যাধুনিক মাস্টারপ্ল্যান করে মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছি। কিন্তু সেটা অনুমোদিত হয়ে আসার আগেই আমার দায়িত্বকাল শেষ হয়েছে। এবারের নির্বাচনে জয়ী হয়ে মাস্টারপ্ল্যানটি বাস্তবায়ন করে সিলেট নগরীর চেহারা পুরোপুরি বদলে দিতে চাই। বিদেশি নগরীর মতো গড়ে তুলতে চাই সিলেটকে। কামরান ও আরিফ তাদের মাস্টারপ্ল্যান সম্পর্কে বলছেন, এই মাস্টারপ্ল্যানে সিলেট নগরীর বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, পানি সংকটের সমাধান, স্বাস্থ্যসেবা, আধুনিক বহুতল পার্কিং ভবন নির্মাণ, সৌন্দর্যবর্ধন, সড়ক সম্প্রসারণ, বিনামূলে ওয়াইফাই সেবা, বিনোদনের সর্বোত্তম ব্যবস্থা, নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ প্রভৃতি বিষয় থাকবে।