বুধবার, ১৮ জুলাই, ২০১৮ ০০:০০ টা

জাসদ- ওয়ার্কার্স পার্টির ফর্মুলায় ক্ষমতা চায় ইসলামী দলগুলো

শফিকুল ইসলাম সোহাগ

জাসদ- ওয়ার্কার্স পার্টির ফর্মুলায় ক্ষমতা চায় ইসলামী দলগুলো

আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোটের শরিক দল জাসদ ও ওয়ার্কার্স পার্টির মতোই আওয়ামী লীগের সঙ্গে সম্পর্ক রেখে অথবা জোট বেঁধে আগামী একাদশ সংসদের এমপি হতে চান ইসলামী দলগুলোর নেতারাও। সে জন্য ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সঙ্গে লবিং করছে। আশায় রয়েছে সরকারি দলের আনুকূল্যের। এমন উদ্যোগকে ইসলামী দলগুলোর অনেক নেতাই ‘জাসদ-ওয়ার্কার্স পার্টি’ ফর্মুলা বলে আখ্যায়িত করছে। এর মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে ইসলামী ঐক্যজোট, বাংলাদেশ ইসলামী ঐক্যজোট, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস ও তরিকত ফেডারেশন। তবে ধর্মভিত্তিক দলগুলোর মধ্যে সবচেয়ে আলোচিত ইসলামী আন্দোলন কোনো জোটেই যাচ্ছে না।

মিসবাহুর রহমান চৌধুরীর নেতৃতে আসছে নতুন জোট : জানা গেছে, ২১ জুলাই বাংলাদেশ ইসলামী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান মিসবাহুর রহমান চৌধুরীর নেতৃত্বে ‘পিপলস ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স’ নামে একটি জোটের আত্মপ্রকাশ ঘটতে যাচ্ছে। গণতান্ত্রিক ইসলামিক মুভমেন্টের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট নুরুল ইসলাম এ জোটের সমন্বয়কের দায়িত্ব পালন করবেন। তিনিই হবেন সম্ভাব্য এ জোটের মহাসচিব। সূত্র জানায়, জোট গঠনের পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে জোট নেতাদের সাক্ষাৎ করার সম্ভাবনা রয়েছে। সাক্ষাতের ওপর নির্ভর করছে আরও অন্তত চারটি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের জোটে অংশগ্রহণ। নুরুল ইসলাম জানান, নতুন জোটের শরিক হতে ১০টি রাজনৈতিক দল ইতিমধ্যে সম্মতি দিয়েছে। জোট গঠনের পর আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ হলে আরও চারটি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল এই জোটে যুক্ত হবে।

বৃহত্তর নির্বাচনী সমঝোতা চায় ইসলামী ঐক্যজোট : ২০১৬ সালে বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট থেকে বেরিয়ে আসে ইসলামী ঐক্যজোট। ওই সময় আলোচনা ছিল আওয়ামী লীগের সঙ্গে সুসম্পর্কের কারণেই বিএনপি ত্যাগ করেছে। এ বছরের ফেব্রুয়ারিতে দলটির পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে একটি চিঠিও দেয় ইসলামী ঐক্যজোট। চিঠিতে অন্তত ২০টি আসন দাবি করে দলের জন্য। যদিও দেড় বছর ধরে দলটির শীর্ষ নেতারা বলছেন, তারা একটি বৃহত্তর ঐক্যের চেষ্টা করছেন ইসলামী দলগুলোর মধ্যে। নেতারা বলছেন, তাদের এখনো চেষ্টা চলছে নির্বাচনী সমঝোতাভিত্তিক ইসলামী ঐক্য গঠনের। ইসলামী ঐক্যজোটের মহাসচিব মুফতি ফয়জুল্লাহ বলেন, আমরা আওয়ামী লীগও না বিএনপিও না, মধ্যপন্থা অবলম্বন করছি। সমমনা দলগুলোর সঙ্গে আমরা নির্বাচনী সমঝোতায় পৌঁছানোর চেষ্টা করছি, মোটামুটি যারা আগে ইসলামী ঐক্যজোটের শরিক ছিল।

জোট চায় তরিকতও : ১৪ দলীয় জোটের শরিক দলের নেতা তরিকত ফেডারেশনের সাবেক মহাসচিব এম এ আউয়াল এমপিও চাইছেন একটি ধর্মভিত্তিক জোট করতে। এ জোটে কওমি, তরিকতপন্থি ও খানকাকেন্দ্রিক সংগঠনকে রাখার চেষ্টা চলছে। এক বছর ধরে এ চেষ্টা চলছে। গত ১৭ এপ্রিল এম এ আউয়ালকে তরিকত ফেডারেশনের মহাসচিবের পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। তার অভিযোগ, ওই সিদ্ধান্ত অগণতান্ত্রিক। জানা গেছে, দলের মহাসচিব পদ থেকে অপসারিত হলেও নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগের অনুকূলে একটি বৃহত্তর ধর্মীয় রাজনৈতিক ঐক্য করতে তার বৈঠক হয়েছে। এ ছাড়াও একটি নিবন্ধিত দলের চেয়ারম্যানের সঙ্গেও তার কয়েক দফা বৈঠক হয়েছে। এম আউয়াল বলেন, ধর্মীয় ও মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় অসাম্প্রদায়িক ইসলামী দলগুলোর একটি কার্যকর ঐক্য এখন সময়ের দাবি। আমি এ বিষয়ে তরিকতপন্থি, খানকা, মাজার ও মাদ্রাসাভিত্তিক অনেক দলের নেতাদের সঙ্গে কথা বলেছি। তারা ইতিবাচক সাড়া দিয়েছেন।

এরশাদের জোটে যেতে পারে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস : আগামী নির্বাচনে জাতীয় পার্টির নেতৃত্বাধীন সম্মিলিত জাতীয় জোটে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের। শায়খুল হাদিস আল্লামা আজিজুল হক প্রতিষ্ঠিত এ দলের চেয়ারম্যান হলেন মাওলানা হাবিবুর রহমান ও মহাসচিব মাওলানা মাহফুযূল হক। জানতে চাইলে এরশাদের রাজনৈতিক সচিব ও জাপার প্রেসিডিয়াম সদস্য সুনীল শুভ রায় বলেন, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের সঙ্গে আমাদের ঐক্যের বিষয়টি ইতিবাচক। এটা দিনক্ষণ বলা যাবে না কবে নাগাদ তারা আসবে। তবে এটা ঠিক যে, তাদের সঙ্গে জাপার আলোচনা অত্যন্ত ইতিবাচক।

সর্বশেষ খবর