বুধবার, ১৮ জুলাই, ২০১৮ ০০:০০ টা

শিল্পকলায় অনিকেত সন্ধ্যা

সাংস্কৃতিক প্রতিবেদক

শিল্পকলায় অনিকেত সন্ধ্যা

বার্ধক্য বেলার অক্ষমতা, আপনজনের অসহায়তা আর নিয়তির মর্মস্পর্শী গল্প নিয়ে নাটকের দল বহুবচন থিয়েটার মঞ্চায়ন করেছে ভিন্নধর্মী গল্পের নাটক ‘অনিকেত সন্ধ্যা’। গতকাল সন্ধ্যায় শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার পরীক্ষণ থিয়েটার হলে মঞ্চায়ন হয় নাটকটি। চন্দন সেন রচিত এই নাটকটির নির্দেশনায় ছিলেন আরহাম আলো।

৮৭ বছর বয়সী সুরকার-গীতিকার গায়ক মুখার্জি মশাই বর্তমানে পরিত্যক্তের মতো নিজ গৃহে আসাড় হয়ে শয্যাশায়ী। এখন আর গলায় সুর নেই, অনুরাগী শ্রোতাও আজ আর আসে না, তাকে সময় দেওয়ার মতো সময়ও হাতে কারও নেই। নাতি প্রিয়তোষ এবং নাত বৌমা মালবিকা বাড়িতে থাকলেও তাদের হাতে তিনি খান না। তখনই খান যখন তার একমাত্র ৬১ বছর বয়সী পুত্র যে কিনা পার্টটাইম লেকচারার এবং স্ত্রী হারিয়ে একা, সেই পুত্র কর্ণদেব গান গেয়ে খাওয়ান। পুত্রের অবর্তমানে দাদুকে নিয়ে নাতি-নাত বৌয়ের অশান্তি, দাদুর পাশে থাকতে যেয়ে নাতির চাকরির প্রমোশন নিয়ে দূরে না যেতে পারা, চতুর্থ জেনারেশনের আগমনে গৃহে ঘরের স্বল্পতা এবং সর্বোপরি মানসিক চাপমুক্ত হতে নাতি-নাতবৌ সিদ্ধান্ত নেয় এবং দিন ধার্য করে মুখার্জি মশাইকে বৃদ্ধাশ্রমে পাঠাবার। অপর দিকে কর্ণদেবের আশৈশব বন্ধু যাত্রার অভিনেতা নটরাজ কালিদাস যে একসময় সিরাজউদদৌলা, আওরঙ্গজের প্রভৃতি চরিত্র করে মানুষকে মাতিয়েছে, যে সন্তানকে চাকরি পাইয়ে-বিয়ে দিয়ে মঞ্চ এবং সংসার উভয় স্থান থেকে বিতাড়িত সেই কালিদাস চায় বাঁচতে, আরও বাঁচতে, তার ভয় সে মারা গেলে তাকে মুখাগ্নি করার মতো যে কেউ নেই। থাকা আর না থাকার মাঝে দাঁড়িয়ে গাড়ি আসে, মুখার্জি মশাইকে বৃদ্ধাশ্রমে যেতে হয়। বাবা মুখার্জি মশাইয়ের বৃদ্ধাশ্রমের সহযাত্রী হয় পুত্র কর্ণদেব।

ঘর ছেড়ে বাবা-ছেলের বৃদ্ধাশ্রমে যাওয়ার মধ্য দিয়ে শেষ হয় নাটকটির কাহিনী। নাটকটির বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন নূর রোহান, আরহাম আলো, মাহ্মুদ, রুমানা, সাহিত্য, পংকজ, মনু মাসুদ, তৌফিকুর রহমান প্রমুখ।

অন্যদিকে একই সময়ে জাতীয় নাট্যশালার মূল মিলনায়তনে মঞ্চায়ন হয় পদাতিক নাট্য সংসদ প্রযোজিত নাটক ‘কালরাত্রি’।

সর্বশেষ খবর