শুক্রবার, ২০ জুলাই, ২০১৮ ০০:০০ টা
তনু হত্যার ২৮ মাস

‘কোথাও আশার বাণী শুনি না’

কুমিল্লা প্রতিনিধি

আজ কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের ছাত্রী সোহাগী জাহান তনু হত্যার ২৮ মাস। কিন্তু তনুর খুনিরা শনাক্ত হয়নি। এ অবস্থায় তনুর মা আনোয়ারা বেগমের ভাষ্য, ‘আমরা শুধু এখন বসে বসে মেয়ে তনু হত্যাকাণ্ডের মাস গুনি। কোথাও কোনো আশার বাণী শুনি না।’ তনুর পরিবারের লোকজন জানায়, ২০১৬ সালের ২০ মার্চ সন্ধ্যায় কুমিল্লা সেনানিবাসের ভিতরে একটি বাসায় টিউশনি করতে গিয়ে আর বাসায় ফেরেনি তনু। পরে সেনানিবাসের ভিতর একটি জঙ্গলে তনুর মরদেহ পাওয়া যায়। পরদিন তার বাবা কুমিল্লা ক্যান্টনমেন্ট বোর্ডের অফিস সহায়ক ইয়ার হোসেন বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে কোতোয়ালি মডেল থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। থানা পুলিশ ও ডিবির পর ২০১৬ সালের পয়লা এপ্রিল থেকে মামলাটির তদন্তের দায়িত্ব পায় সিআইডি কুমিল্লা। তনুর দুই দফা ময়নাতদন্তে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ফরেনসিক বিভাগ মৃত্যুর সুস্পষ্ট কারণ উল্লেখ করেনি। শেষ ভরসা ছিল ডিএনএ রিপোর্ট। গত বছরের মে মাসে সিআইডি তনুর জামা-কাপড় থেকে নেওয়া নমুনার ডিএনএ পরীক্ষা করে তিনজন পুরুষের শুক্রাণু পাওয়ার কথা গণমাধ্যমকে জানিয়েছিল। পরে সন্দেহভাজনদের ডিএনএ ম্যাচিং করার কথা থাকলেও তা করা হয়েছে কিনা- এ নিয়েও সিআইডি বিস্তারিত কিছু বলছে না। সর্বশেষ সন্দেহভাজন হিসেবে তিনজনকে ২০১৭ সালের ২৫ অক্টোবর থেকে ২৭ অক্টোবর পর্যন্ত সিআইডির একটি দল ঢাকা সেনানিবাসে জিজ্ঞাসাবাদ করে। জিজ্ঞাসাবাদ করা ব্যক্তিরা তনুর মায়ের সন্দেহ করা আসামি বলেও সিআইডি জানায়। তবে তাদের নাম জানানো হয়নি।

এ ব্যাপারে নারী নেত্রী মায়মুনা আক্তার রুবী বলেন, ‘তনুকে একটি সুরক্ষিত স্থানে হত্যা করা হয়েছে। ২৮ মাসেও কোনো আসামি শনাক্ত করা যায়নি, যা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। হত্যাকারীদের দ্রুত শনাক্ত করার দাবি করছি।’ সচেতন নাগরিক কমিটি কুমিল্লার সভাপতি বদরুল হুদা জেনু বলেন, ‘আইনের গতি এত প্রলম্বিত হলে সঠিক বিচার নিয়ে মানুষের সন্দেহ সৃষ্টি হয়। দীর্ঘদিনেও তনুর হত্যার কোনো ক্লু উদ্ধার না হওয়া দুঃখজনক।’ তনুর মা আনোয়ারা বেগম বলেন, ‘দেখছি দেখছি বলে সিআইডি ২৮ মাস পার করেছে।’ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও সিআইডি কুমিল্লার সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার জালাল উদ্দীন আহমেদ বলেন, ‘সন্দেভাজন কয়েকজনের ডিএনএ রিপোর্ট চলতি মাসে পাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু পাইনি। ডিএনএ পরীক্ষার সরঞ্জাম আমেরিকা থেকে আনতে হয়। তাই সময় লাগছে। আশা করছি দ্রুত রিপোর্ট হাতে পাব।’

সর্বশেষ খবর