মঙ্গলবার, ২৪ জুলাই, ২০১৮ ০০:০০ টা
আজ শুরু সম্মেলন

ডিসিদের ৩৪৭ প্রস্তাব নির্বাচন সামনে রেখে দেওয়া হবে নির্দেশনা

নিজস্ব প্রতিবেদক

তিন দিনব্যাপী জেলা প্রশাসক (ডিসি) সম্মেলন শুরু হচ্ছে আজ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ সম্মেলনের উদ্বোধন করবেন। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের শাপলা হলে সকাল ১০টায় সম্মেলনের উদ্বোধন করবেন তিনি। গতকাল সচিবালয়ে ডিসি সম্মেলন-২০১৮ শীর্ষক এক সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব (সমন্বয় ও সংস্কার) জিয়াউল আলম এ তথ্য জানান। স্থানীয় পর্যায়ের সরকারি সিদ্ধান্তসমূহ সুষ্ঠুভাবে বাস্তবায়নের জন্য সরকারের নীতিনির্ধারক ও জেলা প্রশাসকদের মধ্যে সরাসরি মতবিনিময় এবং প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দেওয়ার জন্য প্রতি বছর ডিসি সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। চলতি বছরের শেষে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। ফলে এবারের ডিসি সম্মেলন একটু হলেও ভূমিকা রাখবে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা। ঢাকাসহ সারা দেশে চলমান মাদকবিরোধী অভিযান, নির্বাচন সামনে রেখে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখাসহ আরও কিছু জনগুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে ডিসিদের কিছু নির্দেশনা দেওয়া হবে। তবে জিয়াউল আলম বলেছেন, ডিসি সম্মেলন একটা নিয়মিত ইভেন্ট। এখানে নির্বাচন নিয়ে কোনো আলাপ-আলোচনা হবে না। জিয়াউল আলম বলেন, সম্মেলন উদ্বোধনের পর পর্যায়ক্রমে বিভিন্ন অধিবেশন অনুষ্ঠিত হবে। এবার সম্মেলনে মোট ২২টি অধিবেশন হবে। এর মধ্যে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সঙ্গে কার্য অধিবেশন ১৮টি। এ ছাড়া একটি উদ্বোধনী ও একটি সমাপনী অনুষ্ঠান। একটি মুক্ত আলোচনা এবং রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ। আজ শুরু হয়ে ২৬ জুলাই পর্যন্ত সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়সহ মোট ৫২টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগ অংশগ্রহণ করবে। কার্য অধিবেশনগুলোয় মন্ত্রণালয় ও বিভাগের প্রতিনিধি হিসেবে মন্ত্রী, উপদেষ্টা, প্রতিমন্ত্রী, উপমন্ত্রী, সিনিয়র সচিব ও সচিবরা উপস্থিত থাকবেন। অধিবেশনগুলো হবে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সভাকক্ষে। কার্য অধিবেশনগুলোয় সভাপতিত্ব করেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম। সংবাদ সম্মেলনে জিয়াউল আলম বলেন, এবারের সম্মেলন উপলক্ষে জেলা প্রশাসক ও বিভাগীয় কমিশনাররা ইতিমধ্যে ৩৪৭টি প্রস্তাব লিখিত আকারে জমা দিয়েছেন। এর বাইরেও জেলা প্রশাসকদের তাত্ক্ষণিক কোনো প্রস্তাব থাকলে সেটিও অধিবেশনে উপস্থাপিত হতে পারে। এ বছর সবচেয়ে বেশি প্রস্তাব পাওয়া গেছে ভূমি মন্ত্রণালয়সংক্রান্ত। এরপর জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ও স্থানীয় সরকার বিভাগসংক্রান্ত প্রস্তাবও পাওয়া গেছে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক। এবারের ডিসি সম্মেলনের মূল বিষয়গুলোর বিষয়বস্তু তুলে ধরে জিয়াউল আলম বলেন, ভূমি ব্যবস্থাপনা, আইনশৃঙ্খলা, স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, ত্রাণ-পুনর্বাসন কার্যক্রম, স্থানীয় পর্যায়ে কর্মসৃজন, দারিদ্র্য বিমোচন, সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী কার্যক্রম, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যবহার, শিক্ষার মান উন্নয়ন, স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ, পরিবেশ সংরক্ষণ ও দূষণ রোধ, ভৌত অবকাঠামো উন্নয়ন এবং উন্নয়ন কার্যক্রমের বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও সমন্বয়। নির্বাচন সামনে রেখে সম্মেলন হচ্ছে কিনা— এ বিষয়ে সচিব বলেন, ‘প্রতি বছর সাধারণত এই সময়েই সম্মেলন হয়। এর সঙ্গে নির্বাচন কোনোমতেই সংশ্লিষ্ট নয়।’ সচিব জিয়াউল আলম বলেন, আমরা আশা করছি এই সম্মেলনের মাধ্যমে সরকারের উন্নয়ন কার্যক্রমের সঙ্গে মাঠের যে কর্মকর্তা জেলা প্রশাসকরা আছেন তারা পরিচিত হবেন। এসব উন্নয়ন কর্মকাণ্ড বাস্তবায়নে সরকারের দিকনির্দেশনা সরাসরি এখান থেকে গ্রহণ করতে পারবেন। সরকারের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে যে নতুন নতুন নীতি-কৌশল বা নীতিমালা জারি হয়েছে, সে বিষয়ে জেলা প্রশাসকরা সম্যক ধারণা লাভ করতে পারবেন।

তিনি জানান, বুধবার (২৫ জুলাই) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ ও দিকনির্দেশনা গ্রহণ করবেন জেলা প্রশাসকরা। এটা হবে বঙ্গভবনের দরবার হলে। ২৬ জুলাই বৃহস্পতিবার বেলা ৩টায় সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ কক্ষে অনুষ্ঠিত হবে সমাপনী অধিবেশন। গত বছরের ডিসি সম্মেলনে নেওয়া সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের সমন্বিত হার ৯৩ দশমিক ৯৫ শতাংশ বলে বলে জানান এই সচিব।

সর্বশেষ খবর