সোমবার, ৩০ জুলাই, ২০১৮ ০০:০০ টা

ইউলুপে অন্যরকম বাড্ডা

ঝর্ণা মনি

ইউলুপে অন্যরকম বাড্ডা

বাড্ডা ইউলুপে চলছে গাড়ি। হেঁটে দেখছেন অনেকে। গতকাল তোলা ছবি — জয়ীতা রায়

রাজধানীর বাড্ডা-রামপুরা সড়কে গতকাল রবিবারের চিত্রটা ছিল ভিন্ন। ছিল না নিত্যদিনের ভোগান্তি তীব্র যানজট। বরং যানবাহনগুলো চলছিল দ্রুতগতিতেই। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দীর্ঘ প্রতীক্ষিত বাড্ডা ইউলুপ দিয়ে পুরোদমে যান চলাচল শুরু হওয়ায় কমেছে চিরচেনা যানজট। এতে স্বস্তি মিললেও ইউলুপকে ঘিরে তৈরি হয়েছে বেশ কিছু নতুন সমস্যা। পথচারী পারাপারে ফুটওভার ব্রিজ তৈরি, ল্যান্ডমার্ক দেওয়াসহ সংশ্লিষ্ট সমস্যাগুলোর সমাধান করা হলে এর সুফল পাবেন রাজধানীবাসী। গতকাল ইউলুপটি ঘুরে দেখা গেছে, রামপুরা-মেরুল বাড্ডার দিক থেকে আসা গাড়ি, সিএনজি, প্রাইভেটকারগুলো ইউলুপ দিয়ে বাঁক নিয়ে বনশ্রী, আফতাবনগর, রামপুরা বা মালিবাগ অভিমুখে সহজেই যাতায়াত করতে পারছে। অন্যদিকে, এসব এলাকা থেকে বের হয়ে হাতিরঝিল হয়ে কারওয়ানবাজার এলাকায় যেতে পারছেন যাত্রীরা।

হাতিরঝিল-রামপুরা ব্রিজসংলগ্ন রাস্তা দিয়ে বের হয়ে ইউলুপটি দিয়ে ঘুরে মালিবাগের দিকে প্রাইভেটকার নিয়ে যাচ্ছিলেন একটি বেসরকারি সংস্থার চাকরিজীবী চৌধুরী ফারহান আলম। তিনি বলেন, আগে হাতিরঝিল থেকে বের হয়ে রামপুরা-বনশ্রীর দিকে যেতে সিগন্যালসহ যানজটে পড়তে হতো। কিন্তু আজ যানজটবিহীন ইউলুপ দিয়ে গাড়ি ঘুরিয়ে আনলাম। মনে হচ্ছে এখন থেকে যানজট ছাড়াই এই রাস্তাটি গাড়ি নিয়ে ফিরতে পারব। তবে ল্যান্ডমার্ক না থাকায় অনেকেই বিভ্রান্তিতে পড়ছেন।  হাতিরঝিলের মতো এখানেও ল্যান্ডমার্ক থাকা উচিত ছিল। এছাড়া পথচারীদের পারাপারের রাস্তা বন্ধ করায় সমস্যা দেখা দিয়েছে। এক্ষেত্রে ফুটওভার ব্রিজ প্রয়োজন বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। দক্ষিণ বাড্ডার বাসিন্দা ব্যবসায়ী মো. বাহাদুর বলেন, ইউলুপ পথচারীদের কোনো কাজে আসছে না। পথচারীদের রাস্তা বন্ধ করে দেওয়ায় তারা বুঝতে পারছে না কীভাবে রাস্তা পারাপার হবে। ফুটওভার ব্রিজ না করা হলে এটি দুর্ঘটনার কারণ হবে। দুই শিশু সন্তানকে নিয়ে ইউলুপ দেখতে এসেছেন বেসরকারি স্কুল শিক্ষক মো. ফেরদৌস হাসান। তিনি বলেন, ইউলুপের কাছে কোনো স্পিড ব্রেকার নেই। ফলে যানবাহনগুলো দ্রুতগতিতে আসছে। গতি নিয়ন্ত্রণ না করতে পারলে ভয়ানক দুর্ঘটনা ঘটবে। মেসার্স ভাই ভাই স্টিল করপোরেশনের স্বত্বাধিকারী মো. রাব্বি বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, হাতিরঝিলের ক্রসিং বন্ধ করা হলে ইউলুপের ব্যবহার আরও বাড়বে এবং যানজট কমবে। ব্যবসায়ীদের জন্য কিছুটা সমস্যা হয়েছে। আগে এপার-ওপার মালামাল স্থানান্তর করতে কোনো সমস্যা ছিল না। এখন লিংক রোড দিয়ে অনেকটা ঘুরে মালামাল স্থানান্তর করতে হবে। এছাড়া বাড্ডা থানার কাছের রাস্তাটিও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এপাশ থেকে প্রয়োজনীয় সামগ্রী আনতে হলে রামপুরা ব্রিজ হয়ে ঘুরে আসতে হবে। ফলে খরচ ও সময় দুই-ই বাড়বে। নিউ স্বদেশ মেটাল ওয়ার্কসের বিক্রেতা মো. শাহ আলম বলেন, ইউলুপের পাশে ট্রাফিক পুলিশ নেই। দুটি প্রবেশমুখেই বাস থামিয়ে যাত্রী উঠানামার কাজ শুরু হয়েছে। এতে করে ইউলুপের মুখেই যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। ইউলুপের সুবিধা পেতে দ্রুত এসব সমস্যার সমাধান প্রয়োজন।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর