মঙ্গলবার, ৩১ জুলাই, ২০১৮ ০০:০০ টা
১৯ কর্মকর্তার দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা

বড়পুকুরিয়া কয়লাখনির সাবেক এমডিকে দুদকে তলব

নিজস্ব প্রতিবেদক

পেট্রোবাংলার ১৯ কর্মকর্তার বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। জালিয়াতির মাধ্যমে ১ লাখ ১৬ হাজার মেট্রিক টন কয়লা খোলাবাজারে বিক্রি করে প্রায় ২০০ কোটি টাকা আত্মসাতের ঘটনায় করা মামলার ১৯ আসামিসহ পেট্রোবাংলার ১৯ জন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে গতকাল দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞার চিঠি দিয়েছে দুদক। গতকাল দুদকের প্রধান কার্যালয় থেকে সংস্থাটির উপপরিচালক মো. শামসুল আলমের স্বাক্ষর করা পাঠানো পৃথক চিঠিতে কর্মকর্তাদের বিদেশযাত্রায় ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদফতরকে নিষেধাজ্ঞা আরোপের অনুরোধ করা হয়েছে।

এ ঘটনায় আগামীকাল ১ আগস্ট দুদকে তলব করা হয়েছে বড়পুকুরিয়া কোল মাইনিং কোম্পানি লিমিটেডের (বিসিএমসিএল) সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক এস এম নুরুল আওরঙ্গজেবকে। নিষেধাজ্ঞা দেওয়া অন্য আসামিরা হলেন সাময়িক বরখাস্ত হওয়া বড়পুকুরিয়া কয়লাখনির মহাব্যবস্থাপক (মাইন অপারেশন) নুর-উজ-জামান চৌধুরী, উপমহাব্যবস্থাপক (স্টোর) এ কে এম খালেদুল ইসলাম, সদ্য বিদায়ী ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী হাবিব উদ্দিন আহমেদ, সদ্য বিদায়ী কোম্পানি সচিব ও মহাব্যবস্থাপক (প্রশাসন) আবুল কাশেম প্রধানিয়া, ব্যবস্থাপক (এক্সপ্লোরেশন) মোশাররফ হোসেন সরকার, ব্যবস্থাপক (জেনারেল সার্ভিসেস) মাসুদুর রহমান হাওলাদার, ব্যবস্থাপক (প্রোডাকশন ম্যানেজমেন্ট) অশোক কুমার হালদার, ব্যবস্থাপক (মেইনটেনেন্স অ্যান্ড অপারেশন) আরিফুর রহমান, ব্যবস্থাপক (ডিজাইন, কনস্ট্রাকশন অ্যান্ড মেইনটেনেন্স) জাহিদুল ইসলাম, উপব্যবস্থাপক (সেফটি ম্যানেজমেন্ট) একরামুল হক ও উপব্যবস্থাপক (কোল হ্যান্ডলিং ম্যানেজমেন্ট) মুহাম্মদ খলিলুর রহমান। এদের মধ্যে বড়পুকুরিয়া কোল মাইনিং কোম্পানি লিমিটেডের (বিসিএমসিএল) সাবেক এমডি হাবিব উদ্দিন আহমেদ ও মহাব্যবস্থাপক (প্রশাসন ও কোম্পানি সচিব) আবুল কাশেমকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে দুদক। এর আগে বড়পুকুরিয়া কয়লাখনির মহাব্যবস্থাপক (মাইন অপারেশন) নুরুজ্জামান চৌধুরী ও ডিজিএম (ভাণ্ডার) এ কে এম খালেদুল ইসলামের ওপর ২৬ জুলাই দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়। ২৭ জুলাই রাত ১২টায় বড়পুকুরিয়া কয়লাখনির ব্যবস্থাপক (প্রশাসন) মোহাম্মদ আনিছুর রহমান বাদী হয়ে মামলা করেন। প্রায় ২০০ কোটি টাকার কয়লা আত্মসাতের ঘটনায় বাংলাদেশ তেল, গ্যাস ও খনিজ সম্পদ করপোরেশনের (পেট্রোবাংলা) চেয়ারম্যান আবুল মনসুর মো. ফয়েজউল্ল্যাহ ও বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (বিপিডিবি) চেয়ারম্যান মো. শামসুল হাসান মিয়ার বক্তব্যও নিয়েছে দুদক। দিনাজপুরের বড়পুকুরিয়া তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে কাগজে-কলমে বেশি কয়লার মজুদ দেখিয়ে প্রায় ২০০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ খতিয়ে দেখতে ২৩ জুলাই তিন সদস্যের অনুসন্ধান কমিটি গঠন করেছিল দুদক। খনি দুর্নীতি অনুসন্ধানে দুদকের উপপরিচালক শামসুল আলমের নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠিত হয়। অভিযোগের বিষয়ে দুদক জানায়, ২০০৫ সালে বড়পুকুরিয়া কয়লাখনি থেকে বাণিজ্যিকভাবে কয়লা উত্তোলন শুরু করা হয়। দীর্ঘ ১৩ বছরে কয়লা উত্তোলন হয়েছে ১ কোটি ২০ লাখ টন। বর্তমানে কোল ইয়ার্ডে কয়লার মজুদ থাকার কথা ১ লাখ ৩০ হাজার টন। কিন্তু বাস্তবে কয়লার মজুদ পাওয়া গেছে মাত্র ১৪ হাজার টন।

সর্বশেষ খবর