ঢাকার জাতীয় চিড়িয়াখানায় আফ্রিকান এক উট পরিবার স্থায়ী বাসিন্দা হিসেবে জায়গা করে নিয়েছে। দরপত্রের মাধ্যমে এ উট দম্পতিকে কেনা হয়। গতকাল আফ্রিকা থেকে বিশেষ বিমানযোগে ঢাকায় আনা হয়। দুই উটের নাম রাখা হয়েছে প্রিন্স ও রানী। এ দেশে উট পালনের প্রধান শর্ত হলো নিবিড় পরিচর্যা। কারণ এ প্রাণী মরু অঞ্চলের। জানালেন উটের তত্ত্বাবধায়ক কামাল উদ্দিন। তিনি বলেন, কৃত্রিম মরুভূমি তৈরি করতে হবে চিড়িয়াখানায়। সেখানে ব্যাপকহারে মশা-মাছি নিধনের ব্যবস্থা থাকতে হবে। যাতে কোনোভাবে একটি মশা কিংবা মাছিও না থাকে। মলমূত্র পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার দিকে বিশেষ নজর দিতে হবে। মনে রাখা দরকার, নোংরা পরিবেশ উটের প্রধান শত্রু। একটি উটের জন্য কমপক্ষে দশ বর্গফুট জায়গা দরকার হয়। অন্যদিকে দেড় বছর হলে গর্ভধারণ করে স্ত্রী প্রজাতির উট। উট প্রথমবার একটি বাচ্চা দেয়। দ্বিতীয়বার থেকে দুই থেকে তিনটি করে বাচ্চা দেয়। একটি উট ৫০ বছর পর্যন্ত বাঁচে। এ সময়ে কমপক্ষে ১৫ থেকে ২০টি বাচ্চা দেয়। জানতে চাইলে জাতীয় চিড়িয়াখানার কিউরেটর ডা. এস এম নজরুল ইসলাম বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, উট চিড়িয়াখানার জন্য নতুন এক অধ্যায়। দেড় ও দুই বছর বয়সী দুই উটকে রাখা হয়েছে চারদিকে গাছ-গাছালি দ্বারা পরিবেষ্টিত বেষ্টনীতে। নেওয়া হয়েছে কঠোর মনিটরিং ব্যবস্থা। এ ছাড়া উটের বেষ্টনীর মাঝে খোলা রাখা হয়েছে। যেখানে সূর্যের আলো সরাসরি পৌঁছাতে পারে। বিকাল ৩টায় সেখানে গিয়ে দেখা যায় দুই উটের চারদিকে সতর্ক চাহনি। নতুন জায়গায় তারা মানিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছে। অপরিচিত কাউকে আসতে দেখলে আগলে রাখে নিজেদের। সবুজ ঘাস, শাকসবজি ও ফলফলাদি এদের প্রধান খাদ্য। এরা উন্মুক্ত অবস্থায় ৪০-৫০ বছর বেঁচে থাকে। শিশুরাই উটের সবচেয়ে বেশি ভক্ত। নতুন দুই অতিথিকে দেখতে ভিড় জমে বেষ্টনীর সামনে। সব মিলিয়ে উটকে ঐতিহ্য বলে মনে করছেন জাতীয় চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ।