বুধবার, ৮ আগস্ট, ২০১৮ ০০:০০ টা
একনেকে ১১ প্রকল্প অনুমোদন

পদ্মা ড্রেজিং করে ভূমি উদ্ধারের পরিকল্পনা

নিজস্ব প্রতিবেদক

ঢাকা জেলার দোহার উপজেলার মাঝিরচর থেকে নারিশাবাজার হয়ে মুকসুদপুর পর্যন্ত পদ্মা নদী ড্রেজিং ও বাম তীর সংরক্ষণসহ ১১টি প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)। গতকাল রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে একনেক বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল এসব কথা বলেন। মন্ত্রী আরও জানান, ৬ হাজার ৪৪৮ কোটি ১৪ লাখ টাকা ব্যয়ে ১১টি প্রকল্পের অনুমোদন দিয়েছে একনেক। এর মধ্যে সরকারি তহবিল  থেকে ৬ হাজার ৪১৬ কোটি ১৬ লাখ টাকা এবং বাস্তবায়নকারী সংস্থা থেকে ৭ কোটি ৯৮ লাখ টাকা খরচ করা হবে। তিনি বলেন, পদ্মা নদী ড্রেজিং ও বাম তীর সংরক্ষণ প্রকল্পের মাধ্যমে ভূমি পুনরুদ্ধারের পরিকল্পনা করা হয়েছে। এতে প্রায় ২৫ বর্গ কিলোমিটার (২৫০০ হেক্টর) ভূমি পুনরুদ্ধার করা সম্ভব হবে। সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, প্রস্তাবিত প্রকল্পটি পদ্মা সেতুর ৪ কি.মি. উজান হতে ২৮ কি.মি. উজানে অবস্থিত। ওই এলাকায় নদীর গড় প্রস্থ ১০ কি.মি.। নদীকে ৫/৬ কি.মি.এর মধ্যে প্রবাহিত করার উদ্দেশ্যে ২৪ কি.মি.  ড্রেজিং কার্যক্রম প্রস্তাব করা হয়েছে। ড্রেজড মেটেরিয়াল নদীর দুই পাড়ে ফেলে ভূমি পুনরুদ্ধারের পরিকল্পনা করা হয়েছে। এ প্রকল্পে ব্যয় হবে ১৪৮৩.২৬ কোটি টাকা। এর পুরোটাই জিওবি। পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের আওতায় বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড (বাপাউবো) এটি বাস্তবায়ন করবে। অক্টোবর ২০১৮ হতে জুন ২০২২ সাল পর্যন্ত প্রকল্পের মেয়াদ ধরা হয়েছে। এদিকে দেশের যেসব স্থানে তাঁতশিল্প রয়েছে সেগুলোর জন্য প্রকল্প নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এক্ষেত্রে জামালপুর, দেওয়ানগঞ্জ, ইসলামপুর, সিলেটের মনিপুর এবং চট্টগ্রাম অঞ্চলে তাঁতশিল্প বিকাশে প্রধানমন্ত্রী প্রকল্প নেওয়ার তাগিদ দিয়েছেন পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়কে।

স্বর্ণদ্বীপে পর্যটক টানতে নতুন উদ্যোগ : দেশের অর্থনীতির উন্নয়নে পর্যটন খাতে বিপুল সম্ভাবনা থাকলেও তা কাজে লাগানো যাচ্ছে না। এর পেছনে যে কয়েকটি কারণ রয়েছে তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে  যোগাযোগ অবকাঠামোর নাজুকতা। এ অবস্থা থেকে  বেরিয়ে আসতে নানা উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। তার অংশ হিসেবে নোয়াখালীর নিঝুম দ্বীপ, হাতিয়া, ভাসানচর এবং স্বর্ণদ্বীপে পর্যটক টানতে সড়ক উন্নয়ন করা হচ্ছে। এ জন্য ‘সোনাপুর থেকে চেয়ারম্যানঘাট পর্যন্ত সড়ক উন্নয়ন’ নামের একটি প্রকল্পের অনুমোদন  দেওয়া হয়েছে। এটি বাস্তবায়নে খরচ হবে ১৬৮ কোটি ৬৯ লাখ টাকা।  এ ছাড়া রাজধানীর বিভিন্ন অঞ্চলে বসবে ২ লাখ প্রিপেমেন্ট বিদ্যুৎ মিটার। এজন্য নেওয়া হয়েছে আলাদা প্রকল্প। প্রকল্পের মোট ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছে ১৮৬  কোটি ৫০ লাখ টাকা। চলতি বছর থেকে ২০২০ সালের ডিসেম্বর মেয়াদে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে ডেসকো। সূত্র জানায়, মিরপুর, পল্লবী, আগারগাঁও, কাফরুল, শাহআলী, ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট, গুলশান, বনানী, বারিধারা, বাড্ডা, উত্তরা, উত্তরখান ও দক্ষিণখান এলাকায় বসবে এসব মিটার। এ ছাড়া গাজীপুরের টঙ্গী এলাকাও প্রকল্পের আওতায় রয়েছে। একনেকে অনুমোদিত অন্য প্রকল্পগুলো হলো— অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপনের নিমিত্ত ভূমি অধিগ্রহণ প্রকল্প। ডেসকো এলাকায় স্মার্ট প্রি-পেমেন্ট মিটার সরবরাহ ও স্থাপন প্রকল্প। বাংলাদেশে তাঁতবোর্ডের আওতায় ৫টি বেসিক  সেন্টার ৫টি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, একটি ফ্যাশন ডিজাইন ইনস্টিটিউট এবং ২টি মার্কেট প্রমোশন কেন্দ্র স্থাপন প্রকল্প। ড. এম. এ ওয়াজেদ মিয়া টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ, পীরগঞ্জ, রংপুর স্থাপন প্রকল্প। সরকারি শিশু পরিবার এবং ছোট মণি নিবাস নির্মাণ/ পুনঃনির্মাণ প্রকল্প। হাই-টেক পার্ক, সিলেটের প্রাথমিক অবকাঠামো নির্মাণ প্রকল্প। ফরিদপুর জেলার চরভদ্রাসন উপজেলাধীন পদ্মা নদীর ডান তীর সংরক্ষণ ও ড্রেজিং প্রকল্প। বীরগঞ্জ-খানসামা-দারোয়ানি, খানসামা-রানীবন্দর এবং চিরিরবন্দর-আমতলী বাজার জেলা মহাসড়কে যথাযথ মান ও প্রশস্ততায় উন্নীতকরণ প্রকল্প। কুলাউড়া-পৃথিমপাশা-হাজীপুর-শরীফপুর সড়কের ১৪তম কিলোমিটারে পিসি গার্ডার নির্মাণ ও ৭ দশমিক ৫ কিলোমিটার সংযোগ সড়ক নির্মাণ প্রকল্প।

সর্বশেষ খবর