বৃহস্পতিবার, ৯ আগস্ট, ২০১৮ ০০:০০ টা

শৃঙ্খলার দৃষ্টান্ত স্কাউটদের

ঢাকায় ট্রাফিক জনসচেতনতা

নিজস্ব প্রতিবেদক

শৃঙ্খলার দৃষ্টান্ত স্কাউটদের

রাজধানীতে গতকাল তৎপর রোভার স্কাউটসের এক সদস্য — রোহেত রাজীব

শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে ‘বিশেষ ট্রাফিক পুলিশ সপ্তাহ’ ঘোষণা করে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। এবার বিশেষ এই সপ্তাহে পুলিশের সহায়তায় পাশে দাঁড়িয়েছেন শিক্ষার্থীরাই। তবে এটি আন্দোলনের ব্যানারে নয়, সংগঠনের ব্যানার ও বিশেষ পোশাকে। ট্রাফিক পুলিশকে সহায়তা করতে রাস্তায় নেমেছেন রোভার স্কাউটসের অন্তত ২০০ সদস্য। তারা রাজধানীর বিভিন্ন ট্রাফিক পয়েন্টে অবস্থান নিয়ে জেব্রা ক্রসিং দিয়ে রাস্তা পার হওয়া, ট্রাফিক সিগন্যাল মেনে চলা, দৌড়ে রাস্তা পার না হওয়া, ফুটওভার ব্রিজ ও আন্ডারপাস ব্যবহার করাসহ নানা ধরনের নিয়ম মেনে চলাফেরা করতে সাধারণ মানুষকে উদ্বুদ্ধ করছেন। ঢাকাসহ সারা দেশে রবিবার শুরু হয়েছে ‘বিশেষ ট্রাফিক সপ্তাহ’। ডিএমপির চারটি ট্রাফিক বিভাগের মোট আটটি জোনে ট্রাফিক পুলিশকে সহায়তা করতে বিভিন্ন স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের রোভার স্কাউটস ইউনিটের সদস্যরা কাজ করছেন। এসব সদস্য রাজধানীর ২০টি গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে অবস্থান নেন বলে জানান পুলিশ কর্মকর্তারা। রোদ-বৃষ্টি উপেক্ষা করে বিশেষ ট্রাফিক সপ্তাহের সাত দিনই ট্রাফিক পুলিশের পাশে তাদের থাকার কথা রয়েছে। ট্রাফিক সপ্তাহের চতুর্থ দিন গতকালও রাজধানীর শাহবাগ, কারওয়ান বাজার, বাংলামোটর, উত্তরা, ফার্মগেট ও মিরপুরে দেখা যায়, রোভার স্কাউটস সদস্যরা প্রতিটি সিগন্যালে দাঁড়িয়ে আছেন। এদের কেউ পথচারীদের ফুটপাথ ব্যবহার করতে বলছেন, কেউ জেব্রা ক্রসিং দেখিয়ে দিচ্ছেন, কেউবা মোটরসাইকেল চালকদের হেলমেট ব্যবহারে উদ্বুদ্ধ করছেন। ট্রাফিক সপ্তাহের প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করছেন তারা। শাহবাগে দেখা যায়, সেখানে অবস্থান নেন ঢাকা কলেজ রোভার স্কাউটস গ্রুপ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় রোভার স্কাউটস গ্রুপ ও নাইস অফেন রোভার স্কাউটস গ্রুপের সদস্যরা। আগের তিন দিনের মতো গতকালও তারা দুই শিফটে কাজ করেন। সকালে ৩২ ও বিকালে ২৬ জন। ছাত্রছাত্রী সবাই একসঙ্গে কাজ করেন। স্কাউটস সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, মানুষ চাইলেই ট্রাফিক আইন সম্পর্কে সচেতন হতে পারে। শুধু ট্রাফিক সম্পর্কে নির্দেশনা জানার পাশাপাশি তাদের কাছ থেকে জানা গেল বিদ্যমান ট্রাফিকব্যবস্থার সমস্যাগুলোর কথা। যেমন শাহবাগে বাস থামার নির্দিষ্ট জায়গা নেই, কেউ পেছনে থামায় তো কেউ সামনে। এ ছাড়া জেব্রা ক্রসিংগুলো দৃশ্যমান নয়, তাই অনেকেই বিভ্রান্ত হয়। অনেকেই ফুটওভার ব্রিজ ব্যবহার করতে চায় না, কারণ ফুটওভার ব্রিজ বেশির ভাগ সময়ই থাকে নোংরা ও চলাচলের অযোগ্য। এ ছাড়া পথচারীদের অসচেতনতারও কিছু চিত্র তুলে ধরেন তারা। যেমন কানে হেডফোন লাগিয়ে রাস্তায় চলাচল করা, যেখানে সেখানে রাস্তা পার হওয়া, ফোনে কথা বলতে বলতে রাস্তা পার হওয়া, যেখানে সেখানে পার্কিং ও যে কোনো জায়গায় বাস থেকে নামা বা ওঠা। ডিএমপির যুগ্ম-কমিশনার (ট্রাফিক-দক্ষিণ) মফিজ উদ্দিন আহাম্মেদ এই প্রতিবেদককে জানান, ঢাকার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলোয় রোভার স্কাউটসের সদস্যরা অবস্থান নিয়েছেন। ওইসব এলাকায় তারা জনসচেতনতা সৃষ্টিতে ট্রাফিক পুলিশকে সহায়তায় কাজ করে যাচ্ছেন। ৫ আগস্ট বিশেষ ট্রাফিক সপ্তাহের উদ্বোধন করা হয়। এটি শেষ হবে ১১ আগস্ট।

সর্বশেষ খবর