বৃহস্পতিবার, ৯ আগস্ট, ২০১৮ ০০:০০ টা

পোশাক শ্রমিকের মজুরি হচ্ছে ৮ হাজার টাকা

রুহুল আমিন রাসেল

পোশাক শ্রমিকদের মজুরি বাড়ানো হচ্ছে। আগামী ৩ সেপ্টেম্বর ন্যূনতম মজুরি বোর্ডের সভায় মজুরি ৮ হাজার টাকা নির্ধারণের সুপারিশ করা হতে পারে। সংশ্লিষ্ট সূত্রের তথ্যানুযায়ী, শ্রমিকরা দীর্ঘদিন মজুরি বাড়ানোর দাবি করছেন। বাজারদর ও মূল্যস্ফীতির হিসাব ধরে ন্যূনতম মজুরি সর্বমোট ১৬ হাজার টাকা নির্ধারণের দাবি শ্রমিকদের। তাদের আরেকটি পক্ষ ১২ হাজার ২০ টাকা মজুরি প্রস্তাব করেছে। তবে মালিকরা দিতে চান মাত্র ৬ হাজার ৩৬০ টাকা। সর্বশেষ বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ-সিপিডি ন্যূনতম মজুরি ১০ হাজার ২৮ টাকা প্রস্তাব করেছে। শ্রমিকদের ন্যায্য মজুরি কত হওয়া উচিত, এমন প্রশ্নের জবাবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অর্থনীতি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. সায়মা হক বিদিশা গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ১৬ হাজার টাকার ন্যূনতম মজুরি প্রস্তাবটি মানসম্মত। কিন্তু বর্তমান বাস্তবতায় ১২ হাজার টাকার প্রস্তাবটি মোটামুটি আদর্শ। তবে মাত্র ৬ হাজার ৩৬০ টাকার প্রস্তাবটি অগ্রহণযোগ্য। কারণ, বর্তমানের ৫ হাজার ৩০০ টাকার মজুরি কখনই বাস্তবসম্মত ছিল না। বাংলাদেশ গার্মেন্ট শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের সাধারণ সম্পাদক জলি তালুকদার বলেন, মালিক পক্ষ বিজিএমইএ ও সরকারদলীয় শ্রমিক লীগের প্রস্তাব অগ্রহণযোগ্য। বাংলাদেশ জাতীয় গার্মেন্ট শ্রমিক কর্মচারী লীগের সভাপতি সিরাজুল ইসলাম বলেন, বিজিএমইএর প্রস্তাব অযৌক্তিক। শ্রমিকরা ক্ষুব্ধ। ১২ হাজার ৫০ টাকার প্রস্তাবটি যুক্তিযুক্ত। জানা গেছে, পোশাক শিল্পের প্রায় ৪০ লাখ শ্রমিকের দাবি, ন্যূনতম মজুরি সর্বমোট ১৬ হাজার টাকা। এর মধ্যে মূল বেতন ন্যূনতম হবে ১০ হাজার টাকা। মূল বেতনের ৪০ শতাংশ হিসেবে বাড়ি ভাড়া ৪ হাজার, চিকিৎসা ভাতা ৫৭০ টাকা, যাতায়াত ভাতা ৭৮০ টাকা ও টিফিন ভাতা ৬৫০ টাকা মিলিয়ে শ্রমিকদের মোট মজুরি ১৬ হাজার টাকা প্রয়োজন। বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব লেবার স্টাডিজের (বিলস) নির্বাহী পরিচালক সুলতান উদ্দিন আহমেদ বলেন, সরকারের সর্বশেষ পে-কমিশন মানদণ্ড বিবেচনায় পোশাক শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি সর্বমোট ১৯ হাজার টাকা হওয়া উচিত। শ্রমিক সংগঠনগুলোর সম্মিলিত ১৬ হাজার টাকার প্রস্তাবেই সমর্থন বিলসের। তবে বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুত ও রপ্তানিকারক সমিতি-বিজিএমইএ সভাপতি সিদ্দিকুর রহমানের দাবি— তাদের প্রস্তাবও বাস্তবসম্মত। কারণ, শ্রমিকদেরও চলতে হবে, মালিকদেরও সক্ষমতা থাকতে হবে। এ দুটি দিক বিবেচনায় নিয়ে ন্যূনতম ৭ম গ্রেডের জন্য ৬ হাজার ৩৬০ টাকা মজুরি প্রস্তাব করেছি। এই গ্রেডে সাধারণত অদক্ষ ও প্রশিক্ষণবিহীন শ্রমিকদের নিয়োগ দেওয়া হয়।

সর্বশেষ খবর