শুক্রবার, ১০ আগস্ট, ২০১৮ ০০:০০ টা

মার্কিন রাষ্ট্রদূতের গাড়িতে হামলা নিয়ে বদিউলের ব্যাখ্যা

নিজস্ব প্রতিবেদক

গত ৪ আগস্ট সুজন সম্পাদকের বাসায় নৈশভোজ শেষে ফেরার পথে বিদায়ী মার্কিন রাষ্ট্রদূত মার্শা বার্নিকাটের গাড়িবহরে হামলা চালায় দুর্বৃত্তরা। গতকাল এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে সেই ঘটনার একটি বিবরণী গণমাধ্যমের কাছে তুলে ধরেন সুশাসনের জন্য নাগরিক-সুজন সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার। 

বিজ্ঞপ্তিতে তিনি বলেন, মার্শা বার্নিকাট আমার মোহাম্মদপুরের বাসায় নৈশভোজ শেষে ফেরার পথে বাসার সামনে সশস্ত্র দুর্বৃত্ত কর্তৃক আক্রমণের শিকার হন। দুর্বৃত্তরা আমার বাড়িতেও হামলা চালায়। এই হামলার ঘটনা নিয়ে স্বার্থান্বেষী মহল নানাভাবে ষড়যন্ত্রতত্ত্বের গল্প ফাঁদছে এবং বিভিন্ন অপপ্রচার চালাচ্ছে। তিনি বলেন, মার্শা বার্নিকাটকে আমি এবং আমার স্ত্রী ব্যক্তিগতভাবে বহুদিন থেকে চিনি। গত ৩ জুলাই এক অনুষ্ঠানে আমি তাকে বিদায়ের আগে আমার পরিবারের সঙ্গে একটি নৈশভোজে অংশ নিতে আমন্ত্রণ জানাই। রাষ্ট্রদূত তাতে সম্মতি দেন। আমি তার প্রটোকল কর্মকর্তাকে একটি ই-মেইল পাঠালে ফিরতি ই-মেইলে আমাকে ৪ আগস্ট সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় নৈশভোজটি আয়োজনের সময় দেন। দূতাবাসের প্রটোকল অনুযায়ী নৈশভোজের স্থান, সময় ও অংশগ্রহণকারীদের তালিকা ই-মেইলে তাদের পাঠানো হয়। নৈশভোজের সময়, উদ্দেশ্য ও উপস্থিত অতিথিদের তালিকা নিয়ে স্বার্থান্বেষী মহলের অপপ্রচার যে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও মিথ্যা তা এই ই-মেইলগুলো দেখলেই যে কেউ বুঝতে পারবেন। সুজন সম্পাদক বলেন, আমার বাসায় নৈশভোজে যোগ দেন বার্নিকাট ছাড়াও ড. কামাল হোসেন ও তার স্ত্রী ড. হামিদা হোসেন এবং এম হাফিজউদ্দিন খান। এ ছাড়া আমি, আমার স্ত্রী, পুত্র, পুত্রবধূ ও দুই কন্যাসহ মোট ১০ জন। রাত ১১টার সময় রাষ্ট্রদূত যখন আমার বাসা থেকে চলে যাওয়ার উদ্দেশ্যে তার গাড়িতে উঠতে যাচ্ছিলেন, তখন ৩০/৪০ জন দুর্বৃত্ত তার গাড়িতে হামলা করে। তারা তার গাড়ি এবং আমার ছেলের ওপরে আক্রমণ করে। দুর্বৃত্তরা বার্নিকাটের গাড়ির পিছনে পিছনে ধাওয়া করে এবং ইটপাটকেল ছুড়ে মারে। তারা পিস্তল ও লাঠিসোঁটা বহন করছিল। রাষ্ট্রদূতের গাড়িতে আগুন দেওয়ার উসকানি দিচ্ছিল। গাড়ি দ্রুত স্থান ত্যাগ করার পর দুর্বৃত্তরা আমার বাসায় হামলা চালায়। জানালার কাচ ভাঙচুর করে। গেট ভেঙে বাসায় ঢোকার চেষ্টা করে। আমরা সঙ্গে সঙ্গে ‘৯৯৯’ নম্বরে কল করি। দুর্বৃত্তরা প্রায় আধা ঘণ্টা বাসার সামনে অবস্থান করে ও তাণ্ডব চালায়, দেখে নেওয়ার হুমকি দেয়।

তিনি বলেন, ঘটনার পর দিন ৫ আগস্ট সকালে মোহাম্মদপুর থানায় গিয়ে একটি অভিযোগ দায়ের করি। এ ছাড়া চিঠিতে ঘটনাটি সম্পর্কে একটি মামলা গ্রহণ এবং আমার পরিবারকে নিরাপত্তা দেওয়ার অনুরোধ করি। তিনি বলেন, নৈশভোজটির তারিখ নির্ধারণ করা হয় নিরাপদ সড়কের দাবিতে কিশোর বিক্ষোভ শুরুর ২০ দিন আগে। মহল বিশেষ এটিকে নিয়ে একটি ষড়যন্ত্রতত্ত্ব হাজির করার অপচেষ্টায় লিপ্ত হয়েছে। নৈশভোজটিকে ‘ষড়যন্ত্র সভা’, ‘গোপন বৈঠক’ বলে অভিহিত করছে।

তিনি বলেন, রাষ্ট্রদূতের ওপরে হামলা বাংলাদেশের ভাবমূর্তি এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্কের জন্য যেমন ক্ষতিকর, তেমনি এটিকে নিয়ে অপপ্রচার ও ষড়যন্ত্রের আশ্রয় নেওয়াও অসৎ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। আমি এই ঘটনার দ্রুত বিচার চাই।      

সর্বশেষ খবর