মঙ্গলবার, ১৪ আগস্ট, ২০১৮ ০০:০০ টা

মসুর ডাল পাইকারি ৩৮ খুচরা ৮০ টাকা

নিজস্ব প্রতিবেদক

মসুর ডাল পাইকারি ৩৮ খুচরা ৮০ টাকা

খোসাযুক্ত কিংবা খোসা ছাড়ানো মসুর ডাল (চিকন) আমদানি করে বাজারজাতের জন্য প্রস্তুত করা পর্যন্ত এক কেজির পেছনে আমদানিকারকদের খরচ হয় ৩৮ থেকে ৪০ টাকা। অর্থাৎ আমদানিকৃত ডাল যখন পাইকারি বাজারে ছাড়া হয় তখন সে দামেই বিক্রি হওয়ার কথা। কিন্তু পাইকারি কিংবা খুচরা কোনো বাজারেই তা ন্যায্য দামে বিক্রি হয় না। বিশেষ করে হাতবদল হয়ে খুচরা বাজারে সেই ৩৮ টাকা কেজির মসুর ডালের দাম উঠে ৮০ টাকায়। এমনকি কোনো কোনো সময় এই ডাল ১১০ টাকা কেজিতেও বিক্রি হয়। এটাকে অত্যন্ত অযৌক্তিক বলে মনে করেন বাজার সংশ্লিষ্টরা। যদিও বাংলাদেশ ডাল ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. শফিকুল ইসলাম বলেছেন অন্য কথা। তার মতে, আমদানি খরচের পর আরও অনেক রকমের খরচ থাকে যা এর সঙ্গে যোগ হয়। ফলে পাইকারি বাজারে দাম কিছু বাড়ে। পরবর্তীতে খুচরা বাজারে যে দাম বাড়ে তার সঙ্গে আমদানিকারক কিংবা পাইকার বা আড়তদারদের কোনো সম্পর্ক নেই বলে তিনি মনে করেন। তবে মানভেদে মোটা বা চিকন ডালের দাম প্রতি কেজি ৬০ টাকা থেকে ১১০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয় ঢাকাসহ সারা দেশের বাজারে। বাংলাদেশ ডাল ব্যবসায়ী সমিতির দেওয়া তথ্যমতে, প্রতি বছর দেশে প্রায় ১১ লাখ টন ডালের চাহিদা রয়েছে। এরমধ্যে ৫০ থেকে এক লাখ টন দেশে উৎপাদন হয়। বাকি প্রায় ১০ লাখ টন বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে আমদানি করতে হয়। জানা গেছে, শুধু ডালের দামই নয় একই রকমভাবে আমদানিকৃত নিত্যপণ্য তেল, চিনি ও পিয়াজের দামও অস্বাভাবিক থাকে প্রায় বছরজুড়েই। বর্তমানে ৩০ টাকায় আমদানি করা পিয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা কেজিতে। ৩৫ টাকার চিনি ৬০ টাকা। এবং ৭০-৭৫ টাকার সয়াবিন তেল খুচরা বাজারে বিক্রি হচ্ছে ১০৫ টাকা। এই দাম বৃদ্ধির যৌক্তিক কোনো কারণ নেই। বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, নিত্যপণ্যের বাজারে কোনো আমলের সরকারই নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে পারেনি। বর্তমানে সরকারেরও নিয়ন্ত্রণ নেই নিত্যপণ্যের বাজারে। ফলে ব্যবসায়ীরা তাদের ইচ্ছামতো দাম বাড়ায়। শুধু তাই নয় দাম বাড়ানোর সময় তড়তড় করে বাড়ানো হয়। আর দাম কমানোর সময় কেজিতে ১ টাকা বা ২ টাকা কমিয়ে সরকারের বাহবা নেন সুযোগ সন্ধানী ব্যবসায়ীরা। এজন্য ডালসহ নিত্যপণ্যের বাজারে সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও সংস্থাগুলোরে নিয়ন্ত্রণ ও তদারকি বাড়ানো জরুরি বলে মনে করেন ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জমান। তিনি বলেন, ডালের বাজারে কারও নিয়ন্ত্রণ নেই। একই মানের ডাল বিভিন্ন বাজারে ভিন্ন ভিন্ন রেটে বিক্রি হয়। এক্ষেত্রে খুচরা পর্যায়ের ক্রেতাদের সঙ্গে এক ধরনের প্রতারণা করা হয় বলে তিনি মনে করেন। সাধারণ মানুষকে স্বস্তি দিতে নিত্যপণ্যের বাজারে সরকারের তদারকি বৃদ্ধির তাগিদ দিয়েছেন ইফতেখারুজ্জামান।

সর্বশেষ খবর