শুক্রবার, ১৭ আগস্ট, ২০১৮ ০০:০০ টা
অষ্টম কলাম

গুপ্তধনের খবর ছিল পুরোই গুজব

নিজস্ব প্রতিবেদক

গুপ্তধনের খবরটি অবশেষে গুজব বলে প্রমাণিত হলো। রাজধানীর মিরপুরের সেই বাড়িতে পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর গুপ্তধনের সন্ধানের দীর্ঘ অপেক্ষার অবসান ঘটে। বিশেষজ্ঞরা প্রযুক্তির সহায়তা নেওয়ার পর নিশ্চিত হন গুপ্তধনের খবরটিকে মিথ্যা। খননের প্রায় ২৫ দিন পর গতকাল দুপুরে গুপ্তধনের সন্ধানে মিরপুর ১০ নম্বর সেকশনের সি ব্লকের ১৬ নম্বর সড়কের ১৬ নম্বর বাড়িতে ঢাকা জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তাজওয়ার আকরাম সাকাপি ইবনে সাজ্জাদের উপস্থিতিতে শুরু হয় মাটি পরীক্ষার কাজ। এ সময় বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষক জসিম উদ্দিন ও ভূ-তত্ত্ব জরিপ অধিদফতরের পরিচালক আবদুল বাকি মজলিস মাটি পরীক্ষা করে দেখেন। তারা জিপিআর মেশিনে বাড়িটির মেঝে স্ক্যান করে জানান যে, এখানে কোনো ধাতব বস্তু নেই। প্রায় ৪ ঘণ্টা পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর বিকাল ৪টার দিকে গুপ্তধনের খবরটি গুজব বলে নিশ্চিত করা হয়। এরপর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট বাড়িটিতে করা সিলগালা খুলে দেন। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তাজওয়ার আকরাম সাকাপি ইবনে সাজ্জাদ এ প্রতিবেদককে বলেন, বিশেষজ্ঞদের পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর আমরা নিশ্চিত হয়েছি যে এখানে কোনো গুপ্তধন নেই। গুজব ছড়িয়ে পড়ার পর বাড়িটিতে মানুষের যেভাবে ভিড় জমত তা থেকে বাড়ির মালিককে নিরাপত্তা দিতেই আমাদের এই অভিযান চলে। সেখানে যে কোনো গুপ্তধন নেই তার দালিলিক প্রমাণাদি বাড়ির মালিকের কাছে দু-চার দিনের মধ্যে হস্তান্তর করা হবে। পুলিশ জানায়, রাজধানীর মিরপুরের ওই বাড়ির মেঝেতে গুপ্তধন আছে এমন সংবাদ দিয়ে গত ১০ জুলাই মিরপুর মডেল থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করে কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার বাসিন্দা তৈয়ব। পরদিনই ওই এলাকায় গুপ্তধনের গুঞ্জন শুরু হয়। আর তখনই সেখানে বাড়ানো হয় পুলিশি পাহারা। গুপ্তধনের বাড়িটি এক পলক দেখতে বিভিন্ন স্থান থেকে আসা মানুষেরও ভিড় জমতে থাকে। এমন পরিস্থিতিতে নিরাপত্তা ও গুপ্তধন উদ্ধারের জন্য গত ১৪ জুলাই একই থানায় আরেকটি জিডি করেন বাড়িটির বর্তমান মালিক মনিরুল ইসলাম। দুই জিডির পরিপ্রেক্ষিতে গত ২১ জুলাই বাড়িটির একটি ঘরের ৪ ফুট খনন করা হয়। এদিন সেখানে গুপ্তধন উদ্ধার না হওয়ায় পরদিন ফের খননের সিদ্ধান্ত হলেও পরে তা স্থগিত করা হয়। জানানো হয়, মাটি পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর গুপ্তধনের বিষয়টি নিশ্চিত হয়ে ফের খনন করা হবে। জানা যায়, বাড়িটির আগের মালিক বিমানের সাবেক কর্মকর্তা দিলশান খান। তিনি ১৯৭১ সালে পাকিস্তান চলে যান। ২০১০ সালে বাড়িটি মনিরুল ইসলাম কিনে নেন।

সর্বশেষ খবর