মঙ্গলবার, ২১ আগস্ট, ২০১৮ ০০:০০ টা

বছরে গড় আয় বাড়ছে ১১৬ ডলার

বদলে যাচ্ছে মানুষের জীবনমান, শিগগিরই মাথাপিছু আয় ২০০০ ডলার

মানিক মুনতাসির

বছরে গড় আয় বাড়ছে ১১৬ ডলার

বদলে যাচ্ছে মানুষের জীবন মান। দেশের মানুষের গড় আয় বাড়ছে দ্রুত গতিতে। গত মাসে অনুষ্ঠিত জেলা প্রশাসক সম্মেলন-২০১৮ এ উত্থাপিত পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের এক প্রতিবেদনে দেওয়া  তথ্যমতে, প্রতি বছর মানুষের গড় আয় বাড়ছে ১০০ ডলারেরও বেশি। সে হিসাব অনুযায়ী, ২০১২-১৩ অর্থবছরে মানুষের গড় আয় ছিল ১০৫৪ মার্কিন ডলার। আর সর্বশেষ ২০১৭-১৮ অর্থবছরে এ আয় দাঁড়িয়েছে ১৭৫২ মার্কিন ডলারে। গত ছয় বছরে আয় বেড়েছে ৬৯৮ ডলার। প্রতি বছর আয় বেড়েছে ১১৬ মার্কিন ডলার। আগামী বছরের শেষদিকে এই আয় দুই হাজার মার্কিন ডলারের কাছাকাছি পৌঁছে যাবে বলে মনে করে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়। গড় আয় বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে দেশের জীবন মানও বদলে যাচ্ছে বলে মনে করে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়। এতে মানুষের গড় আয়ুও বাড়ছে। দারিদ্রের হার কমছে। মানুষের ক্রয় ক্ষমতা বাড়ছে। ফলে মানুষের ধীরে ধীরে উন্নত জীবন ব্যবস্থার দিকে ধাবিত হচ্ছে। শুধু তাই নয়, মানুষের আয় বৃদ্ধির ফলে খাদ্যভ্যাসেরও পরিবর্তন ঘটছে।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো বিবিএসের হিসাব অনুযায়ী, স্বাধীনতার ৪৭ বছরে দেশের মানুষের মাথাপিছু আয় অন্তত ১৬ গুণ বেড়েছে। ১৯৭২-৭৩ অর্থবছরে মানুষের মাথাপিছু আয় ছিল ৮৮ মার্কিন ডলার। এক দশক পর ১৯৮২-৮৩ অর্থবছরে সেটা বেড়ে দাঁড়ায় ১৮৯ ডলারে। পরের দশকে ১৯৯২-৯৩ অর্থবছরে সেটা ২৮৫ মার্কিন ডলারে, ২০০২-০৩ অর্থবছরে ৪৭১ ডলারে দাঁড়ায়। ২০১২-১৩ অর্থবছরে ১০৫৪ ডলারে আর সর্বশেষ গত ২০১৬-১৭ অর্থবছরে ১৬১০ ডলার এবং বর্তমানে ২০১৭-১৮ অর্থবছরে তা ১৭৫২ ডলারে দাঁড়িয়েছে। শুধু মাথাপিছু আয় নয়, অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নের অন্যান্য সূচকেও বাংলাদেশ অভূতপূর্ব সাফল্য অর্জন করেছে বলে মনে করে সংস্থাটি। মাথাপিছু আয়ের ভিত্তিতে বাংলাদেশ ইতোমধ্যে উন্নয়নশীল দেশের কাতারে প্রবেশ করেছে বলে স্বীকৃতি দিয়েছে বিশ্বব্যাংক। ১৯৭৩ সালে বিশ্বব্যাংকের উপস্থাপিত একটি হিসাবে দেখা যায়, তখন মাথাপিছু আয় ছিল ১২০ ডলার। বিশ্বব্যাংকের হিসাবে ২০১৭ সাল শেষে এ দেশের মানুষের মাথাপিছু আয় দাঁড়িয়েছে ১৪৯৬ ডলারে। যদিও বিবিএস হিসাবে ১৬১০ ডলার। বিবিএসের সর্বশেষ ২০১৬-১৭ সালের খানা আয়-ব্যয়ের তথ্য অনুযায়ী, এখানে মাথাপিছু আয় দাঁড়িয়েছে ১৬১০ ডলারে। বিবিএস ও বিশ্বব্যাংকের হিসাবের পদ্ধতি আলাদা হওয়ায় এই পার্থক্য। বিশ্বব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ১৯৭১ সালে দেশের মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) ছিল ৮ দশমিক ৭৫ বিলিয়ন ডলার। ২০১৬-১৭ অর্থবছরে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৭৩ বিলিয়ন ডলার। স্বাধীনতার বছর দেশের ৮০ ভাগ মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাস করত। সর্বশেষ হিসাবে ২৪ দশমিক ৩ শতাংশ মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাস করছে। মানুষের গড় আয়ু বেড়ে ৭১ দশমিক ৩ বছরে উন্নীত হয়েছে। অথচ ১৯৭১ সালে গড় আয়ু ছিল ৪৭ বছরের একটু বেশি।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর