মঙ্গলবার, ২১ আগস্ট, ২০১৮ ০০:০০ টা

লাখ টাকার গরুতে আগ্রহ

নিজস্ব প্রতিবেদক

লাখ টাকার গরুতে আগ্রহ

আজ কোরবানি ঈদের আগের দিন। রাত পোহালেই পবিত্র ঈদুল আজহা। সাধারণত ঈদের আগের দিনই কোরবানি পশু কেনার শেষ দিন। রাজধানীর সব হাটে এখন বিপুলসংখ্যক গরুর সমাগম। এখনো ঢাকার বাইরের বিভিন্ন জেলা থেকে পশু নিয়ে আসছেন বিক্রেতারা। গতকাল রাজধানীর বিভিন্ন পশুর হাট ঘুরে দেখা গেছে, প্রতিটি হাটেই ক্রেতাদের ভিড়। হাটগুলো কোরবানির পশুতে   কানায় কানায় ভরা। এবার দেশি গরুর সংখ্যা বেশি দেখা গেছে। বিক্রেতা ও ক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ৬০ হাজার থেকে লাখ টাকার গরুর চাহিদাই বেশি। ক্রেতারা এসব গরু কিনতে বেশি আগ্রহী। লাখ টাকার বেশি দামের পশু অনেকে দরদাম করলেও কেনার আগ্রহ দেখায় না।

রাজধানীর অন্যতম প্রবেশপথ শনির আখড়ায় বসেছে বড় হাট। এ হাটে দক্ষিণ ও পূর্ব অঞ্চলের বিভিন্ন জেলা থেকে এসেছে নানা ধরনের পশু। গরু-ছাগল এসেছে বিপুল। গতকাল বেলা ১২টায় গিয়ে দেখা গেছে, পশুবাহী প্রচুর ট্রাক আসছে। শনির আখড়ার গোয়ালবাড়ী মোড় থেকে মূল সড়কের দুই পাশে শত শত পশু রাখা হয়েছে। মূল সড়কের দুই পাশে প্রায় এক কিলোমিটার পর্যন্ত বিস্তৃত এ হাটে ক্রেতাদের ভিড়ও লক্ষ্য করা গেছে। দনিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে কথা হয় সালাম মিয়া নামে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে। তিনি এসেছেন বিক্রমপুর থেকে সাতটি গরু ও ১১টি ছাগল নিয়ে। তার সঙ্গে ভাই ও ছেলে আছে। তারা এসেছেন গতকাল রাতে। গরু একটাও বিক্রি করেছেন কিনা জানতে চাইলে বলেন, সকালে একটি ৬৫ হাজার টাকায় বিক্রি হয়েছে। বাকিগুলো দরদাম করছেন ক্রেতারা। মূল সড়ক থেকে নিচে সংযোগ সড়কে বসা হাটে বিক্রেতারা আসছেন প্রচুর। এ হাটের অধিকাংশ গরুই দেশি ও স্থানীয়ভাবে লালন-পালন করা বলে জানালেন তারা।

দুপুরের কড়া রোদ উপেক্ষা করে রাজধানীর মতিঝিলে কমলাপুর পশুর হাটে ভিড় করেছেন ক্রেতারা। সকাল থেকেই জমজমাট এই গরুর হাট। বিভিন্ন জায়গা থেকে বিপুলসংখ্যক গরু এসেছে এ হাটে। ট্রাক ভরে এখনো গরু ও ছাগল আসছে। অবশ্য গরুর সংখ্যাই বেশি। হাট ঘুরে দেখা গেছে, ক্রেতারা দেখেশুনে পছন্দের গরুটিই দরদাম করছেন। পছন্দ হলে মূল্য ও হাসিল পরিশোধ করে খুশিমনে পশু নিয়ে বাড়ি ফিরছেন তারা। অনেকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শেষ দিনের ফাঁদে পড়তে চান না তারা। প্রতি বছর শেষ দিন গরুর দাম বাড়বে বা দাম কমবে এ দ্বন্দ্ব কাজ করে। ফলে অনেক সময় দেখা যায় গরু থাকে না। ক্রেতাদের অনেক বেশি দামে কিনতে হয়। আবার এর বিপরীত ঘটনাও ঘটে। প্রথমদিকে বেশি দাম চেয়ে শেষ দিন বিক্রি করতে না পেরে লোকসান দিতে হয় বিক্রেতাদের। এবার এই ফাঁদে কেউ পড়তে চান না বলে হাটের একাধিক ক্রেতা ও বিক্রেতা জানালেন। তাই গরু বিক্রি হচ্ছে বিপুল।

রাজধানীর গাবতলী হাটের প্রধান আকর্ষণ ছিল মানিকগঞ্জের রাজাবাবু নামের বিশালদেহি ষাঁড়। এ ষাঁড়টির ওজন প্রায় ২ হাজার ১০০ কেজি। ঈদুল আজহা উপলক্ষে রাজধানীর সব কোরবানির গবাদিপশুর হাটে আসছে বিশাল বিশাল আকারের গরু। গতকাল ভোরে হাট ছাপিয়ে বেড়িবাঁধ পর্যন্ত বিস্তৃত হয় হাটের পরিধি। রাজাবাবুর মালিক পরিষ্কার বেগম জানান, তিন বছর ১০ মাস বয়সী গরুটির দাম ৩০ লাখ টাকা। গতকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত দাম উঠেছে সাড়ে ১৮ লাখ টাকা। এ ছাড়া মিরপুর ১২ নম্বর সেকশন বকুলতলা গরুর হাট ঘুরে দেখা গেছে গরু আরও গরু। দাম সহনীয়। ক্রেতারও কমতি ছিল না। এদিকে হাটের সার্বিক পরিস্থিতি মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র চন্দ গাবতলী হাট ঘুরে দেখেছেন। গতকাল সরেজমিন হাট ঘুরে দেখা যায়, গরু-ছাগলে সয়লাব। এ ছাড়া সকালে তুলনামূলক ক্রেতা কম ছিল। এ পর্যন্ত যেসব গরু বিক্রি করতে দেখা গেছে, এর মধ্যে ছোট ও মাঝারি আকারের গরুর কেনাবেচাই বেশি হয়েছে। কিন্তু বেশি দামের বড় গরুর দিকে ক্রেতার ঝোঁক ছিল কম। ঈদের কয়েকটি পশুর হাট ঘুরে দেখা যায়, হাটে পশু নিয়ে ক্রেতার জন্য অপেক্ষা করছেন বিক্রেতারা। অনেকের মতে, রাখার স্থানের সমস্যার কারণে ঢাকার অধিকাংশ মানুষ সাধারণত দেরি করেই পশু কিনে থাকেন।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর