রবিবার, ২৬ আগস্ট, ২০১৮ ০০:০০ টা

ঢাকা-চট্টগ্রাম পৃথক রেললাইন চায় চবক

রুকনুজ্জামান অঞ্জন

ঢাকা-চট্টগ্রাম পৃথক রেললাইন চায় চবক

সমুদ্রপথে আনা কনটেইনার পরিবহনের জন্য ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম পর্যন্ত পৃথক রেললাইন চেয়েছে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ (চবক)। চবক বলছে, রেলওয়ের এখন যে অবকাঠামো, তাতে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকা যাত্রী পরিবহনে সুবিধা থাকলেও তা অপ্রতুল। একই রেললাইন দিয়ে যাত্রীর পাশাপাশি কনটেইনার পরিবহন হলে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে যাবে। তাই চট্টগ্রাম বন্দর থেকে ঢাকায় পণ্য পরিবহনের জন্য নতুন সরাসরি পৃথক রেললাইন দরকার।

নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ে গত ১৪ আগস্ট পাঠানো চিঠিতে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়ার অনুরোধ জানানো হয়। চিঠিতে বলা হয়, রেলপথে কনটেইনার পরিবহনের মাধ্যমে চট্টগ্রাম বন্দর বিশ্বের অন্যান্য বন্দরের মতো গতিশীল হতে যাচ্ছে। সম্প্রতি রেলযোগে ঢাকায় কনটেইনার পরিবহনের লক্ষ্যে বন্দরের অভ্যন্তরে প্রথম আরএমজি স্থাপন করা হয়েছে। ফলে রেলে কনটেইনার পরিবহনের কাজ আরও দ্রুততর হয়েছে। এ ছাড়া নির্মিতব্য টার্মিনাল যেমন বে-টার্মিনাল, লালদিয়া টার্মিনাল, পতেঙ্গা টার্মিনাল থেকেও রেলে পণ্য পরিবহনে অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে। অদূর ভবিষ্যতে চট্টগ্রাম বন্দর রেলযোগে কনটেইনার পরিবহনের সক্ষমতা অর্জন করলেও পাশাপাশি রেলের অবকাঠামোগত পরিবর্তন না হলে কনটেইনার পরিবহনে কোনো উন্নতি সম্ভব হবে না।

অবশ্য রেলের কর্মকর্তারা বলছেন, প্রায় ৪ হাজার কোটি টাকা খরচ করে ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথের বেশির ভাগ অংশই এখন ডাবল লাইনে (বিদ্যমান একটি লাইনের পাশে আরেকটি লাইন) রূপান্তর করা হয়েছে। এতে রেলপথের সর্বোচ্চ ব্যবহারের ওপর গুরুত্ব দিচ্ছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ।

রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের এক কর্মকর্তা জানান, ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথে কনটেইনারবাহী একটি ট্রেনের গড় পরিচালন সময় ২২-২৪ ঘণ্টা। এখন বেশির ভাগ অংশ ডাবল লাইন হয়ে যাওয়ায় কনটেইনারবাহী ট্রেনের পরিচালন সময় ৭-৮ ঘণ্টায় নামিয়ে আনা সম্ভব। ফলে আমদানি ও রপ্তানিকারকরা দ্রুততম সময়ের মধ্যে মালামাল পরিবহন করতে পারবেন। এ ছাড়া কনটেইনার পরিবহনে পৃথক কোম্পানি গঠনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলেও জানান রেলের কর্মকর্তারা।

চবক চেয়ারম্যান কমোডর জুলফিকার আজিজ পিএসসি, বিএন চিঠিতে বলেন, চট্টগ্রাম বন্দর গত বছর ২৫ দশমিক ৬৬ লাখ টিইইউ (টুয়েন্টি ফিট ইকুইভেলেন্ট) কনটেইনার হ্যান্ডলিং করেছে। প্রক্ষেপণ অনুযায়ী ২০২০ সালে বার্ষিক ২৯ লাখ ও ২০৩৬ সালে ৫৬ লাখ টিইইউ কনটেইসার হ্যান্ডলিংয়ের সক্ষমতা অর্জন করবে। গত বছর বন্দরের মাধ্যমে ৬৩২ লাখ মেট্রিক টন কার্গো হ্যান্ডলিং করা হয়েছে; যা ২০৪৩ সালে ১ হাজার ২৪০ লাখে উন্নীত হবে বলে আশা করা যায়। বর্তমান অবকাঠামো দ্বারা উল্লিখিত পরিমাণ কনটেইনার ও কার্গো হ্যান্ডলিং চট্টগ্রাম বন্দরের পক্ষে করা সম্ভব হবে না। এ লক্ষ্যে বন্দরে কৌশলগত মাস্টারপ্ল্যান অনুযায়ী ধারণক্ষমতা এবং কনটেইনার ও কার্গো হ্যান্ডলিং বাড়ানোর জন্য বে-টার্মিনাল নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ অবস্থায় এখন থেকেই চট্টগ্রাম বন্দর থেকে ঢাকায় কনটেইনার পরিবহনের জন্য পৃথক রেললাইন বসানোর প্রকল্প হাতে নেওয়া সময়ের দাবি।

সর্বশেষ খবর