বৃহস্পতিবার, ৩০ আগস্ট, ২০১৮ ০০:০০ টা
রাষ্ট্রপক্ষের প্রধান কৌঁসুলি

গ্রেনেড হামলা ষড়যন্ত্রে বাবর জড়িত

নিজস্ব প্রতিবেদক

২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার ঘটনায় দায়ের করা আলোচিত দুই মামলার অন্যতম আসামি বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুত্ফুজ্জামান বাবর এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত ছিলেন না বলে দাবি করেছেন তার আইনজীবী। গতকাল অষ্টম দিনের মতো যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করে বাবরের বেকসুর খালাস চান আইনজীবী নজরুল ইসলাম। পরে আদালতের কার্যক্রম শেষে রাষ্ট্রপক্ষের প্রধান কৌঁসুলি সৈয়দ রেজাউর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, আসামি পক্ষের কোনো যুক্তিই টিকবে না। গ্রেনেড হামলার ষড়যন্ত্রে লুত্ফুজ্জামান বাবর সরাসরি জড়িত ছিলেন। রাষ্ট্রপক্ষ তথ্য-উপাত্ত উপস্থাপনের মাধ্যমে এটা প্রমাণ করতে পেরেছে।  রাজধানীর নাজিম উদ্দিন রোডে পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারের পাশে স্থাপিত বিশেষ এজলাসে ঢাকার ১ নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক শাহেদ নূর উদ্দিনের আদালতে এক সঙ্গেই বিচার চলছে দুটি মামলার। মামলায় এ পর্যন্ত ৪৪ আসামির পক্ষে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ হয়েছে। আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে প্রধান কৌঁসুলি সৈয়দ রেজাউর রহমান ছাড়াও বিশেষ পিপি মো. আবু আবদুল্লাহ ভূঁইয়া, আইনজীবী আকরাম উদ্দিন শ্যামল, ফারহানা রেজা, আমিনুর রহমান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

গতকাল আসামি বাবরের পক্ষে আইনজীবী নজরুল ইসলাম তথ্য-প্রমাণের ওপর যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ করেন। তিনি মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আবদুল কাহ্হার আকন্দের (পিডব্লিও-২২৫) সাক্ষ্য থেকে যুক্তিতর্ক তুলে ধরেন। আইনজীবী নজরুল ইসলাম আদালতে বলেন, ২১ আগস্ট মামলাটি চাঞ্চল্যকর মামলা, এটি অস্বীকার করার কোনো কারণ নেই। তবে এ ঘটনার সঙ্গে লুত্ফুজ্জামান বাবরের কোনো সম্পৃক্ততা নেই। আইনজীবী নজরুল ইসলাম বাবরের বেকসুর খালাস দাবি করেন। পরবর্তী ধার্য তারিখে আইনজীবী এস এম শাহজাহান আইনি পয়েন্টে যুক্তি উপস্থাপন করবেন বলে জানিয়েছেন নজরুল ইসলাম। আগামী ৪ ও ৫ সেপ্টেম্বর এ মামলার পরবর্তী কার্যক্রমের জন্য দিন ঠিক করেছেন বিচারক। সৈয়দ রেজাউর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, আসামি লুত্ফুজ্জামান বাবরের পক্ষে তার আইনজীবী ফ্যাক্টেস্র ওপর যুক্তিতর্ক পেশ শেষ করেছেন। তিনি বলেন, আসামি পক্ষ বাবরের খালাস চেয়ে যেসব যুক্তি তুলে ধরেছে, তা টিকবে না। কারণ আসামি বাবর ২১ আগস্টের ঘটনায় অপরাধমূলক ষড়যন্ত্রে জড়িত ছিলেন। বাবর হাওয়া ভবন ও আবদুস সালাম পিন্টুর সরকারি বাসভবনে ২১ আগস্টে ঘটনার বিষয়ে ষড়যন্ত্রমূলক সভায় সরাসরি অংশ নিয়েছেন, তা সাক্ষ্য ও তথ্য-প্রমাণে উঠে এসেছে। তারেক রহমানের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ বিষয়ে প্রশ্নে সৈয়দ রেজাউর রহমান বলেন, তারেক রহমান ২১ আগস্ট ঘটনার বিষয়ে তার কার্যালয় হাওয়া ভবনে ষড়যন্ত্রমূলক সভায় মিলিত হয়েছেন এবং সে সভার আলোকেই হামলাকারীদের প্রশাসনিক ও আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়েছে। বিষয়টি রাষ্ট্রপক্ষ প্রমাণ করতে পেরেছে।

মামলার নথি সূত্রে জানা গেছে, ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসবিরোধী শান্তি সমাবেশে দলীয় সভাপতি ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার উদ্দেশ্যে গ্রেনেড হামলা চালানো হয়। ওই হামলায় আওয়ামী লীগ নেত্রী আইভি রহমানসহ ২৪ জন নিহত হন।

সর্বশেষ খবর