শনিবার, ১ সেপ্টেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে হচ্ছেটা কী

অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ ভিসি বললেন ইউজিসিতে জামায়াতের লোক

রাহাত খান, বরিশাল

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. এস এম ইমামুল হকের বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহারসহ একাধিক আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। ৩ ও ৪ মার্চ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের তিন সদস্যের অডিট কমিটি বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৭-১৮ অর্থবছরের সংশোধিত ও ২০১৮-১৯ অর্থবছরের মূল বাজেট পরীক্ষা করে ১৮টি আর্থিক অনিয়ম চিহ্নিত করে। এর মধ্যে ১০টি অনিয়মের সঙ্গে ভিসি ও ট্রেজারার সরাসরি সম্পৃক্ত বলে ওই অডিট রিপোর্ট বিশ্লেষণে উঠে আসে।

২০১১ সালে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হয়। প্রফেসর ইমামুল হক বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় উপাচার্য। ২০১৬ সালের ২৭ মে তিনি যোগদান করেন। ইউজিসির অডিট দল যে ১৮টি অনিয়ম চিহ্নিত করেছে এর মধ্যে অন্যতম হলো নিয়ম অনুযায়ী কোনো পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক প্রথম বর্ষের ভর্তি ফরম বিক্রির মোট অর্থ বিশ্ববিদ্যালয়ের তহবিলে জমা করে সর্বোচ্চ ৬০ ভাগ টাকা ভর্তিসংক্রান্ত কাজে খরচের বিধান আছে। বাকি ৪০ ভাগ টাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব তহবিলে জমা রাখতে হবে। কিন্তু ২০১৫-১৬ অর্থবছরে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক প্রথম বর্ষ ভর্তি ফরম বিক্রি বাবদ মোট আয়ের ৮২ ভাগ ভর্তি পরীক্ষাসংক্রান্ত কাজে খরচ দেখানো হয়েছে। অডিট বিশ্লেষণে দেখা যায়, ২০১৫-১৬ অর্থবছরে ভর্তি ফরম বিক্রির অর্থ থেকে প্রায় অর্ধ কোটি টাকা অতিরিক্ত খরচ দেখানো হয়েছে। এত বিপুল পরিমাণ অর্থ খরচ হওয়া অস্বাভাবিক বলে জানিয়েছেন ভর্তিসংক্রান্ত কাজে সম্পৃক্ত একজন শিক্ষক। তার দাবি, ইউজিসির নির্ধারণ করে দেওয়া ৬০ ভাগ অর্থের মধ্যে সমুদয় খরচ করার পরও বিপুল অঙ্ক বেঁচে যায়, যা ভিসি, ট্রেজারার, ডিনসহ সংশ্লিষ্টরা পরে ভাগাভাগি করেন। সে ক্ষেত্রেও ইউজিসির নির্ধারণ করে দেওয়া ৬০ ভাগের বেশি অর্থ খরচ দেখিয়ে ভিসি প্রফেসর ইমামুল হক ও ট্রেজারার প্রফেসর ড. এ কে এম মাহবুব হাসান অন্তত ৫০ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছেন বলে অভিযোগ করেন ওই শিক্ষক।

ভিসি তার দফতরে আপ্যায়ন ব্যয় বাবদ প্রতি মাসে ২৫ হাজার টাকা খরচ করছেন। গত দুই বছরের অধিক সময়ে আপ্যায়ন বাবদ ভিসি মোট ১০ লাখ টাকার বেশি অতিরিক্ত ব্যয় করেছেন, যা বিধিবহির্ভূত বলে ওই প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।

তার বিরুদ্ধে আর্থিক অনিয়ম চিহ্নিত করার বিষয়ে উপাচার্য প্রফেসর ড. এস এম ইমামুল হক বলেন, ইউজিসির অডিট টিমের যেসব বিষয়ে আপত্তি রয়েছে, এর প্রতিটির সুস্পষ্ট জবাব দেওয়া হয়েছে। ওই দলের প্রধান ইউজিসির অর্থ ও হিসাব বিভাগের অতিরিক্ত পরিচালক মো. রেজাউল করিম হাওলাদার জামায়াতের লোক। তাই তিনি তাকে বিপদে ফেলার জন্য এসব অডিট আপত্তি দিয়েছেন।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর