মঙ্গলবার, ৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা
প্রকৃতি

মহাবিপদাপন্ন বড় কাঠবিড়ালি

মোস্তফা কাজল

মহাবিপদাপন্ন বড় কাঠবিড়ালি

সাত কারণে মহাবিপদাপন্ন অবস্থায় রয়েছে বড় কাঠবিড়ালি নামের বন্য প্রাণীটি। এক সময় বাংলাদেশের অনেক বন ও জঙ্গলে দেখা মিলত এ প্রাণীটির। এখন আর তেমন একটা দেখা মেলে না। পৃথিবীতে যত প্রকারের কাঠবিড়ালি রয়েছে তার মধ্যে আমাদের দেশের এই প্রজাতি সবচেয়ে বড়। বন্যপ্রাণী বিশেষজ্ঞদের তথ্য মতে, হবিগঞ্জ জেলার বন বিভাগের আওতাধীন রেমা-কালেঙ্গা বন্যপ্রাণী অভয়াশ্রমে কালেভদ্রে দেখা মেলে এই স্তন্যপায়ী  প্রাণীটির। বন বিভাগ পরিচালিত এক জরিপ প্রতিবেদনে বড় কাঠবিড়ালি সম্পর্কে উঠে এসেছে নানা ধরনের তথ্য। তবে বন বিভাগ এ প্রাণী রক্ষায় নিয়েছে নানা ধরনের পদক্ষেপ। আন্তর্জাতিক প্রকৃতি ও প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণ সংঘের (আইইউসিএন) রেডলিস্ট অনুযায়ী, এ প্রাণীটি প্রধানত সাত কারণে ‘মহাবিপদাপন্ন’ প্রাণী হিসেবে স্থান করে নিয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে, ক্রমাগতভাবে বন ধ্বংস, বনের প্রাকৃতিক প্রতিবেশ ব্যবস্থা বিনষ্ট করা, বনের পুরনো এবং দীর্ঘদেহী বৃক্ষগুলো উজাড়, বনে নতুন করে বসতি স্থাপন, দীর্ঘদিন ধরে বনে বাস করা বিভিন্ন জনগোষ্ঠীর মানুষরা বন্যপ্রাণীদের গোপনে শিকার বা হত্যা করা অন্যতম কারণ বলে বিবেচিত হচ্ছে। বন্যপ্রাণী বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক মো. কামরুল হাসান বলেন, বাংলাদেশের কাঠবিড়ালি পৃথিবীর মধ্যে সবচেয়ে বড় আকারের হয়। রেমা-কালেঙ্গার গভীর বনে এ প্রাণীর দেখা মেলে। স্থানীয়রা এ কাঠবিড়ালিকে ‘রাম কটা’ বলেন। সিলেট অঞ্চলের স্থানীয়রা কাঠবিড়ালিকে ‘কটা’ বলে থাকেন। বাংলাদেশ ছাড়াও ভারত, নেপাল, ভুটান, শ্রীলঙ্কা, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড, ভিয়েতনাম, মিয়ানমার, চীনসহ দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোতে এ প্রাণীটির বৈশ্বিক অবস্থান রয়েছে। এ ছাড়াও লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানে এ প্রাণীটির বসবাস রয়েছে। অনেকে বলে থাকেন বড় কাঠবিড়ালি নাকি লাউয়াছড়াতে মাঝে মাঝে খুঁজে পাওয়া যায়। বড় কাঠবিড়ালির আকার-আকৃতি ও শারীরিক গঠন সম্পর্কে প্রাণী বিশেষজ্ঞ কামরুল হাসান বলেন, এ প্রাণীর দৈর্ঘ্য মাথাসহ ২৩ ইঞ্চি পর্যন্ত হয়। এদের লেজ প্রায় ২০ ইঞ্চি পর্যন্ত লম্বা হয়। এ প্রাণীর পুরো শরীর কালো রঙের হয়। মাথা থেকে লেজ পর্যন্ত পুরোটা কালো রঙে ঢাকা থাকে। তবে লেজের কেশরে হালকা হলুদাভ রঙের আভা দেখা যায়। বাংলাদেশে ৯ প্রজাতির কাঠবিড়ালির মধ্যে এটি সবচেয়ে বড়। বিভিন্ন গাছের ফলমূল, কচি-পাতা প্রভৃতি এ প্রাণীর খাদ্য। 

সর্বশেষ খবর