বৃহস্পতিবার, ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা

আওয়ামী লীগ জাপায় প্রার্থীর ছড়াছড়ি

জামায়াতকে ছাড় নয় বিএনপির

শাহ্ দিদার আলম নবেল, সিলেট

আওয়ামী লীগ জাপায় প্রার্থীর ছড়াছড়ি

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সিলেট-৫ (কানাইঘাট ও জকিগঞ্জ) আসনে আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির একডজন নেতা দলীয় মনোনয়নপ্রত্যাশী। অন্যদিকে এ আসনে দলীয় প্রার্থী দেখতে চায় বিএনপি। নির্বাচনী জোটের কারণে জামায়াতে ইসলামীকে এ আসন কিছুতেই ছাড় দিতে রাজি নয় দলটি। ফলে জামায়াত এ আসনটি দাবি করলে বিএনপির সঙ্গে দ্বন্দ্ব তৈরি হতে পারে।

গত নির্বাচনে জোটের কারণে আসনটি জাতীয় পার্টিকে ছেড়ে দেওয়া হয়। আওয়ামী লীগের প্রার্থী ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি মাসুক উদ্দিন আহমদ। এ সম্পর্কে মাসুক উদ্দিন বলেন, ‘নেত্রী চাইলে আমি নির্বাচন করতে প্রস্তুত রয়েছি।’ এ আসনটিতে আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশী সাবেক ছাত্রনেতা মোস্তাক আহমদ। ১৯৭৮ সালে উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মোস্তাক পরবর্তীতে সিলেট এমসি কলেজে ছাত্রলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক ও মদন মোহন কলেজে প্রথমে সাধারণ সম্পাদক, পরে সভাপতি হন। জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি। সুপ্রিম কোর্টে বঙ্গবন্ধু আইনজীবী পরিষদের সাবেক সহসভাপতি মোস্তাক আহমদ এরশাদবিরোধী আন্দোলনে আড়াই বছর কারাভোগ করেছেন। ১৯৯১ সালে প্রথমবারের মতো দলীয় মনোনয়ন চেয়েছিলেন। তবে শেষ পর্যন্ত হাফিজ মজুমদারকে সমর্থন দিয়ে সরে দাঁড়ান তিনি। তিনি দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় কাজ করে যাচ্ছেন। মেয়র নির্বাচনেও তিনি আওয়ামী লীগের প্রার্থীর পক্ষে দিনরাত কাজ করেছেন। মোস্তাক আহমদ বলেন, ‘বিগত নির্বাচনগুলোতে দলীয় মনোনয়ন চেয়েছি আমি। তবে দল যাকে মনোনয়ন দিয়েছে, তার পক্ষে কাজ করেছি। এবার এলাকার মানুষ চাইছে আমি যেন প্রার্থী হই। আমিও মানুষের সুখে-দুঃখে পাশে আছি।’ আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মধ্যে আরও রয়েছেন সাবেক সংসদ সদস্য হাফিজ আহমেদ মজুমদার, যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য আহমদ আল কবীর, জেলা কৃষক লীগের সভাপতি আবদুল মুমিন চৌধুরী ও ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের সাবেক কাউন্সিলর ফয়জুল মুনীর চৌধুরী। অষ্টম ও নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এ আসনটি জামায়াতকে ছেড়ে দিয়েছিল বিএনপি। আগামী নির্বাচনে আসনটিতে বিএনপি থেকে মনোনয়ন পাওয়ার চেষ্টা করছেন কানাইঘাট উপজেলা পরিষদের দুবারের চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী, জেলা বিএনপির সিনিয়র সহসভাপতি আবুল কাহির চৌধুরী ও কানাইঘাট উপজেলা বিএনপির সভাপতি মামুনুর রশীদ মামুন। তিনি বলেন, ‘দল যদি এবার নির্বাচনে অংশ নেয়, তবে এ আসনটিতে অবশ্যই বিএনপির কাউকে মনোনয়ন দিতে হবে। অতীতের মতো এবার অন্য কোনো দলকে ছাড় দিলে নেতা-কর্মীরা মেনে নেবে না।’ আশিক চৌধুরী বলেন, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হিসেবে আমি এলাকার জন্য কাজ করেছি, করছি। মানুষের দাবি হিসেবে সংসদ নির্বাচনে দলের প্রার্থী হতে চাই।’ আওয়ামী লীগের মতোই সিলেট-৫ আসনে প্রার্থীজট রয়েছে জাতীয় পার্টিতেও। গত নির্বাচনে এ আসনে আওয়ামী লীগ ছাড় দেওয়ায় বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সংসদ সদস্য হন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপদেষ্টা সেলিম উদ্দিন। এলাকার উন্নয়নে বেশকিছু কাজ করছেন তিনি। সেলিম এবারও প্রার্থী হতে চান। সেলিম উদ্দিন বলেন, ‘দল চাইলে সিলেট-৫ ও সিলেট-৬ দুটি আসনেই নির্বাচন করতে প্রস্তুত রয়েছি।’ আসনটিতে জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় সদস্য জাকির হোসাইন প্রার্থী হওয়ার জোর চেষ্টা চালাচ্ছেন। গত কয়েক বছর ধরে নিয়মিত এলাকায় আসা-যাওয়ার মধ্যে রয়েছেন তিনি। যুক্তরাজ্যের বিশিষ্ট শিল্পপতি জাকির এলাকার গরিব-অসহায় মানুষের জন্যও কাজ করে চলেছেন। জাকির হোসাইন বলেন, ‘প্রবাসী হলেও নিয়মিত এলাকায় যোগাযোগ রয়েছে আমার। নেতা-কর্মীরাও আমাকে প্রার্থী হিসেবে দেখতে চাইছেন।’ এ আসনে জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় সদস্য সাইফুদ্দিন খালেদ, সাব্বির আহমদ ও মতিন চৌধুরীও দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছেন। সিলেট-৫ আসনে অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন জামায়াত নেতা মাওলানা ফরিদ উদ্দিন চৌধুরী। বিএনপির সঙ্গে নির্বাচনী জোট বজায় থাকলে এবারও তিনি এ আসনে প্রার্থী হতে পারেন বলে গুঞ্জন রয়েছে। তবে এবার স্থানীয় বিএনপির প্রবল বিরোধিতার মুখে পড়তে হতে পারে তাকে। এ আসনে আঞ্জুমানে আল ইসলাহর সভাপতি মাওলানা হুসাম উদ্দিন চৌধুরীও সংসদ সদস্য পদে প্রার্থী হতে চাইছেন।

সর্বশেষ খবর