শনিবার, ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা
বাংলাদেশ-ভারত তেললাইন

পাইপলাইন নির্মাণ কাজ শুরু চলতি মাসে

জিন্নাতুন নূর

বাংলাদেশ-ভারত দুই দেশের মধ্যে ইলেকট্রিসিটি গ্রিড নির্মাণের পর এবার দুই দেশের মধ্যে আন্তদেশীয় তেল পাইপলাইন নির্মাণের কাজ শুরু হচ্ছে চলতি মাসে। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ১৮ সেপ্টেম্বর দুপুর ১২টায় ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে স্ব স্ব দেশের পাইপলাইন নির্মাণের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন। বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি) কর্তৃপক্ষ গতকাল বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। এ পাইপলাইনটি নির্মাণ হলে ভারত থেকে বাংলাদেশে ডিজেল আমদানিতে পরিবহনগত যে সমস্যা আছে তা অনেকটাই দূর হবে। এ ছাড়া পরিবেশ দূষণ কমার পাশাপাশি সড়কে দুর্ঘটনাও কমে আসবে। প্রথমে দিনাজপুরের পার্বতীপুর তেল ডিপো পর্যন্ত এ পাইপলাইন নির্মাণ করা হলেও ভবিষ্যতে রংপুরে বিপিসির তেল ডিপো পর্যন্ত এ লাইন সম্প্রসারণের পরিকল্পনা আছে। এ ছাড়া সৈয়দপুরে নির্মিত একটি বিদ্যুৎ কেন্দ্রে ব্যবহারের জন্যও এ পাইপলাইনে সরবরাহকৃত তেল ব্যবহার করা হবে বলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে। বিপিসি চেয়ারম্যান মো. আকরাম আল হোসাইন বলেন, ১৮ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ-ভারতের দুই প্রধানমন্ত্রী ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এ পাইপলাইন নির্মাণকাজের ভিত্তিপ্রস্তর উদ্বোধন করবেন। এটি নির্মাণের পুরো খরচই ভারত বহন করবে। বাংলাদেশে এ পাইপলাইন নির্মাণ হলে দেশের উত্তরাঞ্চলে ডিজেল পরিবহনে বিদ্যমান যে সমস্যা আছে তা অনেকটাই কমে আসবে। পরিবহনগত সুবিধার পাশাপাশি পরিবেশ দূষণও কম হবে। জানা যায়, পাইপলাইন নির্মাণের জন্য দুই দেশের দুই প্রকল্প পরিচালক কাজের তদারকি করবেন। বাংলাদেশের যে স্থানের ওপর দিয়ে লাইন তৈরি করা হবে তা অধিগ্রহণের পর দায়িত্বপ্রাপ্ত নির্মাণ প্রতিষ্ঠানের কাছে জমি হস্তান্তর প্রক্রিয়া সময়মতো শেষ হলে নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যেই পাইপলাইন নির্মাণ শেষ হবে বলে বিপিসি কর্তৃপক্ষ আশা করছেন। ভারত থেকে ডিজেল আমদানির লক্ষ্যে নুমালিগড় রিফাইনারি লিমিটেডের সঙ্গে ২০১৭ সালের অক্টোবরে বিপিসির ১৫ বছরের একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। ডিজেল পরিবহনে পশ্চিমবঙ্গের শিলিগুড়ি থেকে বাংলাদেশের পার্বতীপুরে ১৩৫ কিলোমিটার পাইপলাইন নির্মাণকাজের জন্য চুক্তি হয়। এর মধ্যে ভারতের অংশে ৫ কিলোমিটার ও বাংলাদেশ অংশে ১৩০ কিলোমিটার পাইপলাইন নির্মাণ হবে। ভারত থেকে বাংলাদেশে বছরে ১ মিলিয়ন টন ডিজেল সরবরাহের লক্ষ্যে এ পাইপলাইন নির্মাণ করা হচ্ছে। নুমালিগড়ের শিলিগুড়ি মার্কেটিং টার্মিনাল থেকে বিপিসির পার্বতীপুর ডিপোতে এ তেল পৌঁছে দেওয়া হবে। এর আগে চট্টগ্রাম থেকে নদী বা রেলপথে ফতুল্লা হয়ে দিনাজপুরে তেল সরবরাহ করা হতো। এতে অনেক সময় লাগত। কিন্তু এ পাইপলাইন নির্মাণ হলে দ্রুত সময়ে ভারত থেকে বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলে তেল পৌঁছানো সম্ভব হবে। বিপিসিসূত্রে জানা যায়, এ পাইপলাইন নির্মাণে মোট খরচ হবে ৩৬০ কোটি রুপি। চুক্তি অনুযায়ী কাজ শুরুর ২৭ মাসের মাথায় এর নির্মাণকাজ শেষ করার কথা। বর্তমানে ভারত প্রতি মাসে নুমালিগড় থেকে বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলে ১০ থেকে ১২ হাজার কিলো লিটার ডিজেল পাঠাচ্ছে। এ পাইপলাইন তৈরি হলে চট্টগ্রাম থেকে নদী ও সড়কপথে ডিজেল আমদানির ঝামেলা অনেকটাই কমে যাবে।

সর্বশেষ খবর