শনিবার, ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা
ডেনমার্কে ৪১ বছর

হারিয়ে যাওয়া মিন্টুকে আপন করে নিল পাবনাবাসী

পাবনা প্রতিনিধি

৪১ বছর পর বাবা-মা ও স্বজনদের খোঁজে পাবনায় আসা ড্যানিশ দম্পতিকে বরণ করে নিলেন পাবনাবাসী। ডেনমার্ক থেকে আসা মিন্টু কার্টসটেন সনিক এখনো তার স্বজনদের সন্ধান না পাওয়ায় গতকাল সকালে আমরা পাবনাবাসী নামের একটি সংগঠন পাবনা প্রেস ক্লাবে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তাদের বরণ করে নেয়। তপু আহমেদের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. আনোয়ারুল ইসলাম, পাবনা রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি হাবিবুর রহমান স্বপন, পাবনা বিজ্ঞান  ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সভাপতি আওয়াল কবির জয়, পাবনা প্রেস ক্লাবের সহসভাপতি আখতারুজ্জামান আখতার, পাবনা ব্যাপ্টিস্ট চার্চের যাজক ইছাহাক সরকার, পাবনা সিটি কলেজের সহকারী অধ্যাপক শামসুন্নাহার বর্ণা, পাবনা মিউজিক্যাল ব্যান্ডস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মাহবুবুল আলম লিটন, পাবনা ড্রামা সার্কেলের সহসাধারণ সম্পাদক সৈকত আফরোজ আসাদসহ সাংস্কৃতিক ব্যক্তিরা। 

অনুষ্ঠানের আয়োজকরা শুরুতেই মিন্টু কার্টসটেন সনিককে বাংলার চিরায়ত পোশাক পাঞ্জাবি, গামছা এবং তার স্ত্রী এনিটি হোলমি হেবকে শাড়ি পরিয়ে দেন। মিন্টু কার্টসটেন সনিক বলেন, আমি যখন ডেনমার্ক থেকে বাংলাদেশে আসি তখন অনেকেই বলেছেন যে, বাংলাদেশিরা খুব খারাপ, ভয়ানক সন্ত্রাসী। কিন্তু বাংলাদেশে আসার পর আমার সেই চিন্তা-ভাবনা পাল্টে গেল। এদেশের লোকজন খুবই ভালো, আমি প্রতি বছর পাবনা আসব এবং এখানে বাড়ি তৈরি করব। আপনারা আমাকে অনেক আপন করে নিয়েছেন। আমি আমার স্বজনদের না পেলেও আমি মনে করি আপনারাই আমার আত্মীয়-স্বজন। মিন্টু (৪৭) মাত্র ৬ বছর বয়সে পাবনার বেড়া উপজেলার নগরবাড়ী ঘাট এলাকা থেকে হারিয়ে যায়। সেখান থেকে ঢাকার ঠাঁটারিবাজার এলাকার চৌধুরী কামরুল হুসাইন উদ্ধার করে রাজধানীর একটি শিশু সদনে আশ্রয় দেয় তাকে। পরে সেখান থেকে ডেনমার্কের এক নিঃসন্তান দম্পতি মিন্টুকে দত্তক নিয়ে যায়। মিন্টু পেশায় একজন চিত্রশিল্পী। ডেনমাকের্র নাগরিক এনিটি হোলমি হেব নামের এক চিকিৎসককে বিয়ে করে সংসার জীবন শুরু করেন। তাদের দাম্পত্য জীবনে এক ছেলে ও মেয়ে জন্ম নেয়। গত ১৫ দিন ধরে পাবনা শহরসহ নগরবাড়ী এলাকায় চষে বেড়াচ্ছেন নিজ বাবা-মা কিংবা স্বজনদের খোঁজে। পাবনা জেলা প্রশাসক জসিম উদ্দিন বলেন, বিভিন্ন গণমাধ্যমে মিন্টুকে নিয়ে সংবাদ প্রকাশ হওয়ার পর ৪১ বছর আগে নগরবাড়ী ঘাট থেকে তাকে উদ্ধারকারী চৌধুরী কামরুল হুসাইন অস্ট্রেলিয়া থেকে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। তিনি দেশে আসবেন বলেও জানিয়েছেন। দেশে আসলে আমরা মিন্টুর প্রকৃত স্বজনদের খুঁজে পাব বলে আশা রাখি। তবে ইতিমধ্যেই নগরবাড়ী এলাকার একজন বৃদ্ধ লোক মিন্টুকে তার আত্মীয় দাবি করে ডিএনএ টেস্ট করাতে রাজি হয়েছেন।

সর্বশেষ খবর