শনিবার, ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা
প্রকৃতি

ধলাকোমর মুনিয়া

দীপংকর ভট্টাচার্য লিটন, শ্রীমঙ্গল

ধলাকোমর মুনিয়া

ইংরেজি নাম white-rumped munia. বাংলায় ধলাকোমর মুনিয়া বা সাদাকোমর মুনিয়া। তবে সাধারণত মানুষ মুনিয়া বলেই ডাকে। এদের বৈজ্ঞানিক নাম Lonchura striata. এরা Estrildidae গোত্রের এক প্রজাতির ছোট তৃণচর পাখি। বাংলাদেশ ছাড়াও ভারত, দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বিভিন্ন দেশে এদের দেখা যায়। এ পর্যন্ত ধলাকোমর মুনিয়ার সাতটি উপপ্রজাতি শনাক্ত করা হয়েছে। সম্প্রতি মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল উপজেলার সন্ধানী এলাকা থেকে স্থানীয় শৌখিন ফটোগ্রাফার খোকন থৌনাউজমের ক্যামেরায় ধরা পড়ে এই ধলাকোমর মুনিয়া পাখিটি। পাখি বিশারদরা জানান, ধলাকোমর মুনিয়া সাদাকোমর ও কালো লেজবিশিষ্ট ছোট আকারের পাখি। এর দৈর্ঘ্য প্রায় ১০ সেমি। ওজন মাত্র ১২ গ্রাম। গায়ের রং গাঢ় কালচে বাদামি ও সাদার প্রাধান্য। হঠাৎ দেখলে সাদা-কালোই মনে হবে। প্রাপ্তবয়স্ক পাখির পুরো পিঠ কালচে বাদামি। আর কোমর সাদা। দেহের পেছনে সূক্ষ্ম ফিকে শরযুক্ত লম্বা দাগ রয়েছে। লেজ ও ডানার ওপরের অংশ কালো। এদের ঠোঁট দুই রঙের। ওপরের ঠোঁট কালো এবং নিচের ঠোঁট স্পষ্ট নীলচে ধূসর। চোখ লালচে বাদামি। স্ত্রী ও পুরুষ পাখির চেহারা একই রকম। অপ্রাপ্তবয়স্ক পাখির কোমর হালকা রঙের এবং দেহতলে বাদামি ছোপ থাকে। এরা মাঝারি ঝোপ, বনের ভিতরের পরিষ্কার জায়গা, তৃণভূমি ও ক্ষুদ্র ঝোপে বিচরণ করে। একসঙ্গে ১০-১৫টি পাখি দল বেঁধে চলাফেরা করে। মাটিতে লাফিয়ে লাফিয়ে বা ঘাসের মধ্যে এরা খাবার খুঁজে বেড়ায়। এরা ঘাসবীজ, বাঁশবীজ ও পোকা খেয়ে জীবন ধারণ করে। মে থেকে আগস্ট মাস এদের প্রজননকাল। এ সময় তারা ছোট ছোট গাছের উঁচু শাখায় বড় আকারের ঘাস বা বাঁশপাতা দিয়ে ছোট্ট গোল বাসা বানায়। আর ওই বাসায় ঢোকার পথ রাখে সরু নলের মতো। ডিম দেয় ৩ থেকে ৮টি। ডিম ফুটতে সময় লাগে ১৩ থেকে ১৪ দিন। বাবা-মা উভয়েই বাচ্চাদের পোকামাকড় খাইয়ে বড় করে তোলে। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. মনিরুল এইচ খান বলেন, আমাদের দেশে অন্যান্য মুনিয়ার চেয়ে ধলাকোমর মুনিয়া কম দেখা যায়। পাহাড়ি এলাকা ও এর আশপাশেই এদের বেশি পাওয়া যায়। এরা এখনো আশঙ্কাজনক পর্যায়ে যায়নি। বাংলাদেশের বন্যপ্রাণী আইনে এ প্রজাতিটি সংরক্ষিত।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর