বুধবার, ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা

যৌথ নদী উপত্যকা পরিচালন ব্যবস্থা চায় বাংলাদেশ

নয়াদিল্লি প্রতিনিধি

দিল্লিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার সৈয়দ মোয়াজ্জেম আলী বলেছেন, বাংলাদেশ যৌথ নদী কমিশনকে নদী উপত্যকা পরিচালনব্যবস্থায় উন্নীত করতে চায়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাম্প্রতিক পশ্চিমবঙ্গ সফরের সময় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে এ বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। হাইকমিশনার গতকাল দিল্লিতে মহিলা সাংবাদিকদের প্রেস ক্লাবে বার্তা আলাপ করছিলেন। সেখানে বলেন, ‘এতদিন যৌথ কমিশনে কেবল টেকনিক্যাল বিষয়েই আলোচনা হয়ে আসছিল। এখন সেই আলোচনাকে আরও ব্যাপক করার জন্য এ প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।’

হাইকমিশনার বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও মোদির আলোচনায় উভয় দেশের অভিন্ন নদীগুলোয় যৌথভাবে ড্রেজিং করার কথাও উঠেছে। উভয় প্রধানমন্ত্রী এতে সহমত হয়েছেন। এতে নদীগুলোয় পানি প্রবাহ বাড়ানো যাবে।’ তিনি এও ইঙ্গিত দেন যে, উভয় দেশের মধ্যে যৌথ নদী কমিশনের বৈঠক নিয়ে নিশ্চয় কথাবার্তা হয়ে থাকবে। হাই কমিশনারকে প্রশ্ন করা হয়, পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা বলেছেন, মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির প্রস্তাবমতো তিস্তার বিকল্প হিসেবে তোর্ষা-রাইডাক ও সংকোষ থেকে বাড়তি পানি তিস্তায় আনা যেতে পারে। হাইকমিশনার বলেন, ‘তিস্তার পানি বণ্টনের সঙ্গে এর পার্থক্য রয়েছে। এটা ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়। মুখ্যমন্ত্রীও মনে করেন তিস্তায় পানি নেই। তাই বাড়তি পানি আনার প্রস্তাব দিচ্ছেন।’ হাইকমিশনার আশা প্রকাশ করেন, যেহেতু পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন এখনো তাদের সরকারের এক বছর মেয়াদ বাকি আছে, তাই তার মধ্যে আমরা আশা করছি তিস্তা পানি বণ্টন চুক্তি হয়তো সম্পন্ন হতে পারে।

 তিনি বলেন, ‘ব্রহ্মপুত্র নদের থেকেও পানি ভিন্ন বাঁধে স্থানান্তরিত করা হচ্ছে বলে যে সংবাদ রয়েছে তাতে আমরাও উদ্বিগ্ন। এজন্যই তো আমরা নদী উপত্যকা পরিচালনা করার কথা বলছি।’

সৈয়দ মোয়াজ্জেম আলী বলেন, আসামে কোনো বাংলাদেশি রয়েছেন বলে আমরা বিশ্বাস করি না। তা ছাড়া সেখানে যারা বহু বছর ধরে বাস করছেন, তারা সেখানকার নাগরিক। এখন পর্যন্ত কেন্দ্রীয় সরকার এ বিষয়ে বাংলাদেশ সরকারকে কিছুই জানায়নি। ভারতীয় গণমাধ্যমে অবৈধ বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীদের ফের নেওয়া হচ্ছে বলে যে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে সে বিষয়ে হাইকমিশনার বলেন, ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে আনুষ্ঠানিক বোঝাপড়া রয়েছে। তাতে উভয় দেশেই যদি কেউ মেয়াদের বাইরে থেকে থাকেন তাদের চিহ্নিত করা হয় এবং নিজ নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হয়। যেমন অপরাধীদেরও ফেরত পাঠানো হয়। এর সঙ্গে আসামের নাগরিক আইনবলে নাগরিকত্ব দেওয়ার কোনো সম্পর্ক নেই। বা নাগরিক তালিকা তৈরি করার সঙ্গে কোনো সম্পর্ক নেই।

তিনি এও জানান, ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং আগামী মাসে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে ঢাকা যাবেন। তখন উভয় দেশের মধ্যে বিদ্যমান বোঝাপড়া নিয়ে পর্যালোচনা হবে।

তিনি বলেন, ‘এ মুহূর্তে বাংলাদেশের পক্ষে বড় সংকট রোহিঙ্গা শরণার্থীদের কারণে সৃষ্ট সমস্যা সমাধান করা। এর জন্য আমরা চাই ভারত সরকার মিয়ানমার সরকারের ওপর চাপ তৈরি করুক।’ তিনি বলেন, ভারত সরকার আগের চেয়ে এখন অনেক বেশি উদ্যোগী। বিশেষ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজের মিয়ানমার সফর উল্লেখ করার মতো। এর ব্যাখ্যা করে বলেন, ‘ভারত-বাংলাদেশ-মিয়ানমার বিমসটেক ব্যবস্থাপনার অংশীদার। তাই রোহিঙ্গা শরণার্থী সমাধান না হলে বিমসটেক যোগাযোগব্যবস্থা সফল হবে না।’ আসছে নভেম্বরে বিমসটেক শীর্ষ সম্মেলন কাঠমান্ডুতে হওয়ার কথা।

সর্বশেষ খবর