শুক্রবার, ২১ সেপ্টেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা

আমিরাতে ভালো নেই স্বল্প পুঁজির ব্যবসায়ীরা

মুহাম্মদ সেলিম, সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে ফিরে

সংযুক্ত আরব আমিরাতে (ইউএই) ভালো নেই স্বল্প পুঁজির প্রবাসী বাংলাদেশি ব্যবসায়ীরা। দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশি শ্রমিক ক্যাটাগরির ভিসা বন্ধ থাকা, আয়ের চেয়ে ব্যয় বেড়ে যাওয়াসহ নানা কারণে অর্থনৈতিক মন্দায় পতিত হয়েছেন প্রবাসী ব্যবসায়ীরা। ফলে ব্যবসার মূলধন হারিয়ে অনেক প্রবাসী বাংলাদেশি ব্যবসায়ী পথে বসেছেন। অনেকে ছেড়েছেন আমিরাত। যারা এখনো ‘অর্থনৈতিক যুদ্ধ’ করে ব্যবসা আগলে ধরে রেখেছেন, তাদের অবস্থা খুবই করুণ। তারা আমিরাতে নানা আইনি জটিলতার কারণে হজম করছেন বিভিন্ন যন্ত্রণা। এ অবস্থা চলতে থাকলে ব্যবসার পুঁজি হারিয়ে আরব আমিরাত ছাড়তে হতে পারে অনেক বাংলাদেশি ব্যবসায়ীকে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে বাংলাদেশি কমিউনিটির এক নেতা বলেন, ‘বর্তমানে আমিরাতের ব্যবসায়িক অবস্থা খুবই করুণ। আগের তুলনায় তিন ভাগের এক ভাগও ব্যবসা হচ্ছে না। কিন্তু ব্যবসা না হলেও লাইসেন্স ফি, ভিসা ফি, দোকান ভাড়া বেড়েছে আগের তুলনায় অনেক। এর ওপর যুক্ত হয়েছে পণ্য কেনা-বেচার ওপর নতুন করে পাঁচ শতাংশ ভ্যাট। তাই সারা মাস ব্যবসা করেও লাভের মুখ দেখছেন না স্বল্প পুঁজির ব্যবসায়ীরা।’ জানা যায়, কয়েক বছর ধরে ব্যবসায় মন্দার মধ্যে যাচ্ছে মধ্যপ্রাচ্যের অন্যতম ধনী রাষ্ট্র আমিরাত। ব্যবসায় মন্দা ভাব আসার কারণগুলোর মধ্যে রয়েছে প্রতিবেশী কয়েকটি দেশে আমিরাত থেকে পণ্য আমদানি বন্ধ করে দেওয়া, লাইসেন্স ফিসহ অন্যান্য সরকারি খরচ বৃদ্ধি, পণ্য কেনা-বেচার ওপর পাঁচ শতাংশ ভ্যাট সংযোজন, সৌদি আরবসহ পার্শ্ববর্তী দেশের ক্রেতা কমে যাওয়া অন্যতম। এ ছাড়া বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদের ওপর মড়ার উপর খাঁড়ার ঘায় পরিণত হয়েছে দীর্ঘদিন ধরে শ্রমিকসহ বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে ভিসা বন্ধ থাকা। এসব কারণে ব্যবসার লোকসান গুনতে হচ্ছে ব্যবসায়ীদের। পুঁজি হারাচ্ছেন অনেক ব্যবসায়ী। অনেকে বসেছেন পথে। আবুধাবীর বাংলাদেশি এক ব্যবসায়ী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশি শ্রমিকদের ভিসা বন্ধ থাকায় স্বল্প পুঁজির ব্যবসায়ীরা চরম বেকায়দায় পড়েছেন। বাংলাদেশি শ্রমিকদের ভিসা বন্ধ থাকার কারণে অনেক বেশি বেতন দিয়ে অন্য দেশ থেকে শ্রমিক আনতে বাধ্য হচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। কূটনৈতিক তৎপরতা বৃদ্ধি করে ফের শ্রমিকদের ভিসা চালু করা গেলে রক্ষা পেতেন অনেক প্রবাসী ব্যবসায়ী।’ দুবাইর একটি অভিজাত বিপণিবিতানে কথা হয় প্রবাসী এক বাংলাদেশি ব্যবসায়ীর সঙ্গে।

 তিনি বলেন, একসময় তার তিনটি দোকান ছিল। কিন্তু ব্যবসায় লোকসান গুনতে গুনতে তিনি দুটি দোকান বিক্রি করে দিয়েছেন। বর্তমানে যে একটি দোকান চালু রয়েছে তার অবস্থাও খুবই করুণ। মাস শেষে পুঁজি থেকে লাভ বের করে আনা অনেক কষ্টকর ব্যাপারে হয়ে দাঁড়িয়েছে। বাংলাদেশি আরেক কমিউনিটি নেতা বলেন, ইউএই এক্সপোর কারণে আমিরাত সরকার অনেক নিয়ম ও আইন শিথিল করেছে। কূটনৈতিক তৎপরতা বৃদ্ধি করে এ সুযোগ কাজে লাগালে বন্ধ থাকা ভিসা সহজে চালু করা যাবে। তাই সরকারের উচিত অগ্রাধিকার ভিত্তিতে আমিরাতের সঙ্গে কূটনৈতিক তৎপরতা বৃদ্ধি করা।

সর্বশেষ খবর