সোমবার, ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা
কৃষি সংবাদ

বরেন্দ্র এলাকায় মাল্টা চাষ

বাবুল আখতার রানা, নওগাঁ

বরেন্দ্র এলাকায় মাল্টা চাষ

ঠা ঠা বরেন্দ্র ভূমি হিসেবে পরিচিত নওগাঁর সাপাহার, পোরশা, নিয়ামতপুর, মহাদেবপুর, পত্নীতলা, ধামইরহাট উপজেলায় মাল্টা চাষের দিকে ঝুঁকে পড়েছেন কৃষক। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের সহযোগিতা ও ব্যক্তিগত উদ্যোগে গত দুই বছরে প্রায় শতাধিক বিঘা জমিতে মাল্টার বাগান গড়ে উঠেছে। পোরশা উপজেলার তেঁতুলিয়া গ্রামের কৃষক ওবায়দুল্লাহ শাহ। আমবাগানে লোকসান হওয়ায় অন্য ফসলের চিন্তা করেন তিনি। মিলেও যায় তাই। টেলিভিশনে মাল্টা চাষের প্রতিবেদন দেখে তিনি উৎসাহিত হন। এরপর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের সহযোগিতায় প্রথমে ৬০০ মাল্টা গাছের চারা রোপণ করেন গত বছর। এরপর এক বছরের মাথায় প্রতিটি গাছে ফুল এবং ২০০টি গাছে ফল ধরে। প্রতিটি গাছে ৪০ থেকে ৭০টি মাল্টা ধরেছে। আর কয়েক দিন পর তিনি ৭০ থেকে ৮০ হাজার টাকার মাল্টা বিক্রি করবেন— এমনটি আশা করছেন। আগামী বছর ৩ থেকে ৪ লাখ টাকার মাল্টা বিক্রি করবেন। ছাউল গ্রামের আবুবক্কর মণ্ডল জানান, দুই বছর আগে ময়মনসিংহ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এনে আমবাগানের মধ্যে ৭০০টি মাল্টার চারা লাগান। এর মধ্যে ভিয়েতনামের ৫০০টি, ২০০টি বারি-১ জাতের। প্রায় ৪০০ গাছে মাল্টা ধরেছে।

মাল্টা লাভজনক হলে আমবাগান কেটে ফেলবেন তিনি। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক মনোজিত কুমার মল্লিক জানান, পোরশা, সাপাহার, নিয়ামতপুর, মহাদেবপুর, বদলগাছী, ধামইরহাট ঠা ঠা বরেন্দ্র ভূমি হিসেবে পরিচিত। এসব উপজেলায় অধিকাংশ জমিতে আমন ধান ছাড়া অন্য কোনো ফসল উৎপাদন হয় না। ইতিমধ্যে জেলায় শতাধিক বিঘা জমিতে মাল্টা চাষ করা হয়েছে। গত বছর পোরশা উপজেলায় মাল্টার ২০টি প্রদর্শনী করে কৃষকদের উৎসাহিত করা হয়। এরপর তারা মাল্টা চাষে উদ্বুদ্ধ হন। অনেক কৃষক কৃষি বিভাগ থেকে চারা নিয়ে জমিতে মাল্টা চাষ করেছেন। আম চাষের পাশাপাশি মাল্টা চাষ বেশ লাভজনক হওয়ায় কৃষকরা মাল্টা চাষের দিকে ঝুঁকবেন। বদলগাছী হর্টিকালচারের সিনিয়র উদ্যানতত্ত্ববিদ আনারুল হাসান জানান, মাল্টা চাষে বিপ্লব ঘটানো ও বিদেশ থেকে আমদানি কমাতে মাল্টা-১ জাতের তিন হাজার গাছ বিক্রি করা হয়েছে। জেলায় গত তিন বছরে একশটি মাল্টার প্রদর্শনী প্লট তৈরি করা হয়েছে। প্রতি প্লটে গাছ লাগানো হয়েছে ৩০-৩৫টি। প্রায় ৯৫টি গাছই বেঁচে রয়েছে। নওগাঁর জেলা প্রশাসক মিজানুর রহমান জানান, মাল্টা চাষ জেলায় অপার সম্ভাবনাময় থাকায় কৃষি বিভাগকে মাল্টা চাষিদের সার্বক্ষণিক সহযোগিতা দেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। যেভাবে মাল্টা চাষ শুরু হয়েছে যদি এই ধারাবাহিকতা বজায় থাকে তাহলে মাল্টা চাষে নওগাঁয় বিপ্লব ঘটানো সম্ভব।

সর্বশেষ খবর