বুধবার, ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা
যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিবেদন

রোহিঙ্গাদের ওপর নৃশংসতা পরিকল্পিত ও সমন্বিত

কূটনৈতিক প্রতিবেদক

রোহিঙ্গাদের ওপর মিয়ানমার বাহিনীর নৃশংসতাকে পরিকল্পিত ও সমন্বিত হিসেবে অভিহিত করেছে যুক্তরাষ্ট্র। কোনো ধরনের ঘোষণা ছাড়াই যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দফতরের ওয়েবসাইটে সোমবার রাতে উত্তর রাখাইন রাজ্যে নৃশংসতার তথ্য লিপিবদ্ধকরণ শীর্ষক একটি প্রতিবেদনের সারাংশ প্রকাশিত হয়। প্রতিবেদনে রোহিঙ্গাদের ওপর মিয়ানমার সেনাবাহিনীর চার ধরনের নিপীড়নের বর্ণনা রয়েছে—১. পবিত্র কোরআন শরিফ পুড়য়ে ফেলা বা তাতে মূত্র ত্যাগ, ২. রোহিঙ্গাদের শিরশ্ছেদ বা অঙ্গহানি করা, ৩. শিশুদের পিটিয়ে মেরে ফেলা ও ৪. প্রসবকালে বা সন্তান জন্ম দেওয়ার পরপরই রোহিঙ্গা নারী ও শিশুদের ওপর হামলে পড়া।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিবেদনে রোহিঙ্গা নিপীড়নকে গণহত্যা বা মানবতাবিরোধী অপরাধ হিসেবে অভিহিত করা হয়নি। অথচ সম্প্রতি জাতিসংঘের সত্যানুসন্ধানী দল মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের ওপর গণহত্যা, মানবতাবিরোধী অপরাধ ও যুদ্ধাপরাধের প্রতিবেদন দেওয়ার পর নিরাপত্তা পরিষদের আলোচনায় যুক্তরাষ্ট্রের স্থায়ী প্রতিনিধি নিকি হ্যালি বলেছিলেন, যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিবেদনও সত্যানুসন্ধানী দলের প্রতিবেদনের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ। যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা রয়টার্সকে বলেছেন, তথ্য-উপাত্ত লিপিবদ্ধ করাই তাদের উদ্দেশ্য ছিল। গণহত্যা হিসেবে অভিহিত করার উদ্দেশ্যে তারা এটি করেননি। রয়টার্স জানায়, যুক্তরাষ্ট্র সরকারের তদন্তকারীরা রোহিঙ্গাদের ওপর মিয়ানমার সামরিক বাহিনীর গণহারে হত্যা, ধর্ষণসহ অন্যান্য নৃশংসতায় সুপরিকল্পিত ও সমন্বিত উদ্যোগ খুঁজে পেয়েছেন। কর্মকর্তারা বলেছেন, সোমবার প্রকাশিত তাদের প্রতিবেদন মিয়ানমার কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা বা অন্য শাস্তিমূলক ব্যবস্থাকে যৌক্তিক প্রমাণ করতে ব্যবহার করা হবে। বাংলাদেশের আশ্রয় শিবিরে মিয়ানমারের এক হাজারেরও বেশি রোহিঙ্গা নারী ও পুরুষের সাক্ষাৎকারের ভিত্তিতে ওই প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে। তাতে দেখা গেছে, রাখাইনে সাম্প্রতিক সহিংসতার মাত্রা ছিল ব্যাপক ও ভয়াবহ। ওই সহিংসতায় প্রাণে বেঁচে যাওয়া ব্যক্তিরা সেনাদের হাতে শিশুদের হত্যা, নিরস্ত্র ব্যক্তিদের লক্ষ্য করে গুলি এবং হতাহতদের গণকবর দেওয়ার বিবরণ দিয়েছেন। রোহিঙ্গা নারীদের প্রকাশ্যে ধর্ষণসহ অন্যান্য যৌন নির্যাতনের বর্ণনাও দিয়েছেন তারা।

সর্বশেষ খবর