মঙ্গলবার, ২ অক্টোবর, ২০১৮ ০০:০০ টা

নির্বাচনী মাঠ সাজাচ্ছে পুলিশ

আনিস রহমান

নির্বাচনী মাঠ সাজাচ্ছে পুলিশ

আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে মাঠ সাজাচ্ছে পুলিশ প্রশাসন। নির্বাচন ঘিরে যেসব এলাকায় সহিংস ঘটনা ঘটতে পারে কিংবা ঘটনা ঘটার আশঙ্কা রয়েছে সেসব এলাকা চিহ্নিত করে সেখানে পুলিশের জনবল বাড়ানো হচ্ছে। বিশেষ করে যেসব এলাকায় বিএনপি ও জামায়াতের প্রভাব বেশি, সহিংসতার সম্ভাবনা রয়েছে সেসব এলাকায় নিরাপত্তা জোরদারে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েনের ছক তৈরি করা হচ্ছে। এমনকি ২০১৫ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের সময় দেশের যেসব জেলা ও উপজেলায় সহিংসতা হয়েছিল সেগুলোকে চিহ্নিত করে পুলিশ ওই এলাকাগুলোতে সর্বোচ্চ নিরাপত্তাবলয় তৈরি করার পরিকল্পনা গ্রহণ করছে। পুলিশের লক্ষ্য আগামী নির্বাচনকে সম্পূর্ণ সহিংসতামুক্ত করা। পুলিশ সদর দফতর সূত্র জানায়, নির্বাচনের সময় ঘনিয়ে আসায় কিছুদিন ধরে পুলিশ মাঠ সাজাতে কাজ শুরু করে। বিভিন্ন জেলার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করার পাশাপাশি পুলিশ প্রশাসন ওই জেলাগুলোতে জনবলের তথ্য তুলে আনছে। সদর দফতর সূত্র জানায়, তথ্য সংগ্রহ করতে গিয়ে দেখা যাচ্ছে অনেক গুরুত্বপূর্ণ জেলায় প্রয়োজনের তুলনায় জনবলের সংখ্যা অপর্যাপ্ত এবং অনেক কম। আবার অনেক জেলায় চাহিদার বিপরীতে অধিক সংখ্যক পুলিশ সদস্য আছে। বিশেষ করে দক্ষিণাঞ্চলের জেলা বরিশালে প্রায় ৯ হাজার পুলিশ সদস্যের ঘাটতি রয়েছে। অন্যদিকে ঢাকায় তার উল্টো চিত্র। এখানে চাহিদার চেয়ে অনেক বেশি সংখ্যক পুলিশ সদস্য কাজ করছেন। একাধিক পুলিশ কর্মকর্তা বলছেন, এই ভারসাম্যহীনতার কারণ হচ্ছে সবাই ঢাকাকেন্দ্রিক চাকরি করতে চায়। এজন্য চাহিদার তুলনায় ঢাকায় জনবল বেশি। পুলিশ কর্মকর্তারা জানান, বহু পুলিশ সদস্য এখন প্রশিক্ষণে আছে। নির্বাচনের আগেই তাদের প্রশিক্ষণ শেষ হবে। যেসব জেলায় তুলনামূলক পুলিশ সদস্য কম সেখানেই তাদের পদায়ন করা হবে। জেলার পুলিশ সুপাররা ইতিমধ্যে জেলা নির্বাচন অফিসে নিয়মিত যোগাযোগ রেখে মাঠপর্যায়ের তথ্য সংগ্রহ করছেন। পুলিশ সূত্র জানায়, আগামী নির্বাচনে সহিংসতা হতে পারে এমন জেলা যেমন ২০১৫ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের আগে যেসব জেলায় সহিংসতা হয়েছিল বিশেষ করে জয়পুরহাট, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, বগুড়া, গাইবান্ধা, রংপুর, রাজশাহী, সাতক্ষীরা, দিনাজপুর, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, লক্ষ্মীপুরসহ অন্তত ২০টি জেলাকে অগ্রাধিকার দিয়ে এসব জেলায় নিরাপত্তা জোরদারে পুলিশ বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে। এসব জেলা মূলত জামায়াত-শিবির এবং বিএনপি অধ্যুষিত। কারণ গত নির্বাচনের আগে ও পরে এসব জেলায় বিভিন্ন থানা এলাকায় ব্যাপক সহিংসতা হয়েছিল। মানুষ মারা গিয়েছিল। আগামী নির্বাচনে যাতে এসব জেলায় কোনোরকম সহিংসতা না হয় সেদিকে বিশেষ নজর রাখছে পুলিশ সদর দফতর।

এসব বিষয় ছাড়া নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে যোগাযোগ করে পুলিশ প্রশাসন সারা দেশে যেসব জেলায় ঝুঁকিপূর্ণ ভোট কেন্দ্র এর সংখ্যা সম্পর্কে নিশ্চিত হয়ে সেগুলোতেও বাড়তি ও জোরালো নিরাপত্তার ওপর জোর দিচ্ছে। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে পুলিশ সদর দফতরের উপ-মহাপুলিশ পরিদর্শক (অপস) আনোয়ার হোসেন জানান, যেহেতু জাতীয় নির্বাচন সামনে তাই পুলিশ নির্বাচনকেন্দ্রিক প্রাথমিক কাজ শুরু করেছে। নির্বাচন কমিশনের চাহিদা অনুযায়ী পুলিশ তাদের সব রকম সহায়তা দেওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে।

সর্বশেষ খবর