বুধবার, ৩ অক্টোবর, ২০১৮ ০০:০০ টা

ডিজিটাল আইনের আংশিক পরিবর্তনে সংকট দূর হবে না : ড. ইফতেখার

নিজস্ব প্রতিবেদক

টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেছেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে এত বেশি সংখ্যক নিবর্তনমূলক, সংবিধান ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী ধারা রয়েছে যে, কোনো ধরনের আংশিক পরিবর্তনে উদ্ভূত নিরাপত্তাহীনতার অবসান হবে না। বরং মতপ্রকাশ ও বাক্-স্বাধীনতাবিরোধী এবং আইনের জবাবদিহিতাহীন অপব্যবহারের সুযোগ সৃষ্টিকারী সব ধারা বাতিল করে আইনটি নতুন করে ঢেলে সাজানো ছাড়া এক্ষেত্রে কোনো বিকল্প নেই। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন নিয়ে তিনি এক বিবৃতিতে গতকাল একথা বলেন।

টিআইবির নির্বাহী পরিচালক বলেন, আমরা বিশ্বাস করতে চাই, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন নিয়ে সম্পাদক পরিষদের প্রতিনিধিদের সঙ্গে ৩০ সেপ্টেম্বর সরকারের মন্ত্রী-উপদেষ্টাদের বৈঠক ও মন্ত্রিপরিষদে সম্পাদকদের উদ্বেগের বিষয় উপস্থাপনের ঘোষণা ইতিবাচক পদক্ষেপ। কিন্তু সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের ব্যাপক উৎকণ্ঠা ও সুস্পষ্ট পরামর্শ পাশ কাটিয়ে অস্বাভাবিক দ্রুততায় আইনটি সংসদে অনুমোদন দেওয়ার পর আলোচনার মাধ্যমে বিতর্ক নিরসনের ইঙ্গিত আমাদের আরও উদ্বিগ্ন করছে। তিনি আরও বলেন, আইনটির খসড়ার ওপর দফায় দফায় বৈঠক হয়েছে এবং সংশ্লিষ্ট অংশীজনরা তাদের উৎকণ্ঠার কথা জানিয়ে সুস্পষ্ট পরামর্শ দিয়েছেন। সেসব বিষয় আমলে নেওয়ার থাকলেও তা হয়নি। এই বাস্তবতায় তাড়াহুড়া করে কোনো সমঝোতায় পৌঁছানোর চেষ্টা বা দাবি মানা হয়েছে এমন ধারণা সৃষ্টির প্রচেষ্টা করা হলে তা হবে হতাশাব্যঞ্জক ও আত্মঘাতী। তিনি বলেন, সম্পাদক পরিষদ ও গণমাধ্যমের অন্যান্য প্রতিনিধিসহ সংশ্লিষ্ট অন্য অংশীজনদের উদ্বেগের যথাযথ নিরসন সম্ভব হবে কিনা তা প্রশ্ন সাপেক্ষ। আরও মনে রাখতে হবে যে, এই নিবর্তনমূলক আইনের বিভিন্ন ধারা এবং এর যথেচ্ছ অপব্যবহারের যে বিস্তৃত সুযোগ আইন প্রয়োগকারীর ওপর ন্যস্ত করা হয়েছে এর ফলে গণমাধ্যমের পাশাপাশি দেশের সব মানুষ নিরাপত্তাহীনতার হুমকিতে রয়েছে। ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, এমন বাস্তবতায় আমরা আশা করি, সরকার গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ ও জনগণের সাংবিধানিক অধিকার, বিশেষ করে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার প্রতি সম্মান দেখিয়ে আইনটির বিতর্কিত সব ধারা প্রত্যাহার করে নতুন করে ঢেলে সাজাবার উদ্যোগ নেবে। আমরা আরও বলতে চাই যে ডিজিটাল নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে অবশ্যই একটি যুগোপযোগী আইনের প্রয়োজন আছে। আমরা দেশে একটি কার্যকর ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন প্রণয়নের বিরোধিতা করছি না। তবে আমরা ডিজিটাল নিরাপত্তার নামে মানুষের বাকস্বাধীনতা ও মত প্রকাশের স্বাধীনতার মতো মৌলিক অধিকার হরণের সুযোগ সৃষ্টির প্রয়াসকে আত্মঘাতী ও অগণতান্ত্রিক বিবেচনা করছি।

সর্বশেষ খবর