বান্দরবানের লামা উপজেলার ফাইতং ইউনিয়নে জমি নিয়ে বিরোধকে কেন্দ্র করে একই পরিবারের চারজনকে কুপিয়ে এবং তরুণীকে গাছে বেঁধে মধ্যযুগীয় কায়দায় পাশবিক নির্যাতন চালানো হয়েছে। স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় ফাইতং ফাঁড়ি পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে নির্যাতিত মাদ্রাসা ছাত্রীসহ আহতদের উদ্ধার করে পার্শ্ববর্তী চকরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে তাদের ভর্তি করে। ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ দুই হামলাকারীকে গ্রেফতার করেছে। মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলার ফাইতং ইউনিয়নের ফাদুরছড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। অভিযোগে জানা গেছে, ফাইতং ফাদুর ছড়া গ্রামে মৃত তফুর আলীর পুত্র আবদুল করিমের সঙ্গে একই এলাকার নুরুল ইসলামের পুত্র মো. ফারুক পক্ষের মধ্যে দীর্ঘ সাত বছর ধরে জায়গা-জমি নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় শালিসি বৈঠকে ও থানার বিচারে আবদুল করিম পক্ষ রায় পায়। স্থানীয় বিচার শালিস না মেনে ফারুক বান্দরবান জেলা জজ আদালতে মামলা করে অসহায় কৃষক পরিবারকে হয়রানি করে আসছিল। এতে ক্ষান্ত না হয়ে মঙ্গলবার দুপুরে চকরিয়াসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে অস্ত্রধারী ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসী এনে আবদুল করিমের জমি জোরপূর্বক জবর দখলে নেওয়ার চেষ্টা করে। একপর্যায়ে প্রকাশ্য দিবালোকে হামলাকারী ফারুক ও তার ভাই সাইফুল, বারেকসহ ভাড়াটিয়া শতাধিক সন্ত্রাসীবাহিনী নিয়ে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাট চালায়। হামলাকারীরা গৃহকর্তা আবদুল করিম, তার স্ত্রী ছফুরা খাতুন (৫০), মৃত আলী আহমদের পুত্র নুর মোহাম্মদকে (৪০) হাত বেঁধে মারধর করে এবং করিমের মাদ্রাসা পড়ুয়া মেয়ে জোহাইরা বেগমকে (১৭) গাছের সঙ্গে হাত-পা ও মুখ বেঁধে নির্যাতন করে। এ সময় ফারুক ও তার সঙ্গীরা করিমের বাড়িতে রক্ষিত স্থানীয় ফাইতং বায়তুল মামুর মসজিদের ১ লাখ টাকাসহ বাড়ির নগদ টাকা, স্বর্ণালঙ্কার এবং মালামালসহ মোট পাঁচ লক্ষাধিক টাকার জিনিসপত্র নিয়ে যায় বলে অভিযোগ।

লামা থানায় দায়ের করা মামলার তদন্তকারী অফিসার পুলিশের উপপরিদর্শক জয়নাল আবেদীন বলেন, হামলাকারীরা মাদ্রাসা ছাত্রী জোহাইরা বেগমকে রশি দিয়ে গাছের সঙ্গে বেঁধে নির্যাতনের একপর্যায়ে তার শ্লীলতাহানিরও চেষ্টা চালায়। এই দৃশ্য সহ্য করতে না পেরে স্থানীয় লোকজন ফাইতং পুলিশ ফাঁড়িকে খবর দিলে পুলিশ আহত ও নির্যাতিতদের উদ্ধার করে। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে অভিযুক্ত ফারুক ও ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসী বাদশাকে গ্রেফতার করে এবং অন্য হামলাকারীরা পালিয়ে যায়।