বুধবার, ১০ অক্টোবর, ২০১৮ ০০:০০ টা

মুক্তিযুদ্ধের প্রেক্ষাপটে ‘ঠিকানা’

সাংস্কৃতিক প্রতিবেদক

মুক্তিযুদ্ধের প্রেক্ষাপটে ‘ঠিকানা’

১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে বাঙালির আত্মত্যাগের ঘটনা নিয়ে কলকাতার উৎপল দত্ত রচনা করেছেন ‘ঠিকানা’ নামের একটি নাটক। স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় ১৯৭১ সালের ২ আগস্ট নাটকটি কলকাতায় মঞ্চায়ন হয়। আর দলের ২৮তম প্রযোজনা হিসেবে শিল্পকলা একাডেমিতে নতুন করে এই নাটকটি মঞ্চায়ন করেছে লোক নাট্যদল (বনানী)। ১১ দিনের গঙ্গা-যমুনা নাট্য ও সাংস্কৃতিক উৎসবের পঞ্চম দিন গতকাল সন্ধ্যায় জাতীয় নাট্যশালার পরীক্ষণ থিয়েটার হলে মঞ্চায়ন হয় নাটকটি। নাটকটির নির্দেশনায় ছিলেন লোক নাট্যদল (বনানী)-এর সদস্য ড. প্রণবানন্দ চক্রবর্তী। বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন সোহেল মাসুদ, মিনহাজুল হুদা দীপ, আরিফ আহম্মেদ, ইউজিন গোমেজ, তনয় মজুমদার, আবদুল্লাহ আল হারুন, ড. প্রণবানন্দ চক্রবর্তী প্রমুখ। একটি ছোট্ট শহরে একটি ছোট্ট রেস্টুরেন্ট চালান একসময়ের কারখানা শ্রমিক রশিদা নানী। তিনি রেস্টুরেন্ট ব্যবসার আড়ালে মূলত মুক্তিযোদ্ধাদের সাহায্য করেন। হঠাৎ করে চা খাওয়ার জন্য সেখানে আসে টহলরত একদল সৈন্য। তাদের মধ্যে লে. বোখারি একজন। নদীর পাড়ে প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে নিখোঁজ হন লে. বোখারি। রেস্টুরেন্টের চারজন খদ্দের ও রশিদা খাতুনের বিরুদ্ধে লে. বোখারিকে হত্যার অভিযোগ আনা হয় । এর মধ্যে বোখারির লাশ পাওয়া যায় নদীর চরে। জানা যায়, তিনি খুন হননি আত্মহত্যা করেছেন। কারণ তিনি শাহেদা নামের এক বাঙালি নারীর প্রেমে পড়েছিলেন, যার প্রেমিক ছিল ছাত্র নেতা কায়কি। প্রথম ক্র্যাক ডাউনে কায়কিকে হত্যা করেছিল পাকিস্তানি আর্মিরা। কায়ফি বেঁচে আছে বলে শাহেদাকে মিথ্যা কথা বলে তার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক তৈরি করতে চায় বোখারি। কিন্তু সব জানার পরে শাহেদা প্রত্যাখ্যান করে বোখারিকে।

যার কারণেই আত্মহত্যা করে বোখারি। টর্চার সেলে রশিদা খাতুনের ওপর নির্মম অত্যাচার চালানোর পরও মুক্তিযোদ্ধাদের ঠিকানা দেননি। এভাবেই এগিয়ে যায় নাটকটির কাহিনী।

অন্যদিকে একই সময়ে জাতীয় নাট্যশালার মূল মিলনায়তনে মঞ্চায়ন হয় ভারতের নাটকের দল প্রাচ্য প্রযোজিত নাটক ‘লালসালু’। বাংলাদেশের প্রখ্যাত উপন্যাসিক সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহর মূল গল্প অবলম্বনে নাটকটির নাট্যরূপ দিয়েছেন কৌশিক চট্টোপাধ্যায় ও নির্দেশনায় অবন্তী চক্রবর্তী। এ ছাড়া স্টুডিও থিয়েটার হলে মঞ্চায়ন হয় জাগরণী থিয়েটারের নাটক ‘আমি ও শ্যামা’। নাটকটির রচনা ও নির্দেশনায় ছিলেন অনিকেত পাল।

উৎসবের অংশ হিসেবে এর আগে বিকালে জাতীয় নাট্যশালার মুক্তমঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক আয়োজন। এতে অংশ নেয় শিশু সংগঠন কচিকাঁচার মেলার দনিয়া শাখা। পথনাটক পরিবেশন করে নাটকের দল রঙ্গনা। দলীয় আবৃত্তি পরিবেশন করে ত্রিলোক বাচিক পাঠশালা ও বৈকুণ্ঠ আবৃত্তি একাডেমি। দলীয় সংগীত পরিবেশন করে পদাতিক সংগীত সংসদ ও মিরপুর সাংস্কৃতিক একাডেমি। দলীয় নৃত্য পরিবেশন করে নাচের দল নৃত্যাক্ষ। একক আবৃত্তি পরিবেশন করেন শিমুল মুস্তাফা, মাসুদুজ্জামান, কাজী মাহতাব সুমন। একক সংগীত পরিবেশন করেন কানন বালা সরকার ও শান্তা সরকার।

সর্বশেষ খবর