বুধবার, ১০ অক্টোবর, ২০১৮ ০০:০০ টা

রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে তফসিলের সিদ্ধান্ত

১৫ অক্টোবর ভোটের প্রস্তুতি নিয়ে ইসির আনুষ্ঠানিক বৈঠক

গোলাম রাব্বানী

রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেই একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এ ক্ষেত্রে ৩০ অক্টোবরের মধ্যে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ করে যে কোনো দিন সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হতে পারে। এ জন্য সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি তুলে ধরতে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ করার সময় চেয়েছে সাংবিধানিক এই সংস্থাটি। নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে বঙ্গভবনে চিঠিও দেওয়া হয়েছে। ইসির একজন সিনিয়র সহকারী সচিব স্বাক্ষরিত এই চিঠি সোমবার বঙ্গভবনে পাঠানো হয়েছে বলে একটি সূত্র নিশ্চিত করেছে। জানা গেছে, অক্টোবরের শেষ সপ্তাহে তথা ২৮ থেকে ৩০ অক্টোবরের মধ্যে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ করার জন্য ইসির পক্ষ থেকে সময় চাওয়া হয়েছে। তবে রাষ্ট্রপতি যখন সময় দেবেন তখনই কমিশন বঙ্গভবনে যাবে সাক্ষাৎ করতে। প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদার নেতৃত্বে চার নির্বাচন কমিশনার ও ইসির সচিব রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে যেতে পারেন। এদিকে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি নিয়ে আগামী ১৫ অক্টোবর নির্বাচন কমিশন আনুষ্ঠানিকভাবে বৈঠকে বসছে। ওই দিন বেলা ১১টায় রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে এ বৈঠক হবে। সংবিধান অনুযায়ী আগামী ৩০ অক্টোবর থেকে ২৮ জানুয়ারির মধ্যে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে নূরুল হুদার কমিশনের। এ জন্য নভেম্বরের শুরুতে তফসিল দিয়ে ডিসেম্বরের মধ্যে ভোট করতে চায় ইসি। ইসির কর্মকর্তারা বলেছেন, প্রথা অনুযায়ী রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ করে কমিশন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকে। এ ছাড়া ভোটের কয়েকটি সম্ভাব্য তারিখও রাষ্ট্রপতির কাছে উপস্থাপন করা হতে পারে। এ ক্ষেত্রে একাদশ সংসদ নির্বাচনের ভোট গ্রহণের জন্য ২০ ডিসেম্বর, ২৭ ডিসেম্বর বা ৩ জানুয়ারি প্রাথমিক তারিখ চিন্তা করা হচ্ছে। ২০ ডিসেম্বর ভোট হলে নভেম্বরের শুরুতে তফসিল হবে। ২৭ ডিসেম্বর ভোট হলে নভেম্বরের মাঝামাঝিতে তফসিল এবং ৩ জানুয়ারি ভোট হলে নভেম্বরের তৃতীয় সপ্তাহে তফসিল হতে পারে। তারা বলেন, দশম সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগে ২০১৩ সালের ১৯ নভেম্বর রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ করে তৎকালীন কাজী রকিব কমিশন। পরে ২৫ নভেম্বর প্রধান নির্বাচন কমিশনার জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিয়ে সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেন। ভোটের প্রস্তুতি বৈঠকের বিষয়ে ইসির সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ রবিবার বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, একাদশ সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে নির্বাচন কমিশন ব্যাপক প্রস্তুতি নিচ্ছে। ইতিমধ্যে ৮০ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে। আর বাকি ২০ ভাগ কাজ তফসিল ঘোষণার পর করা হয়ে থাকে। তিনি বলেন, ‘তফসিলের আগের কাজ মোটামুটি আমরা গুছিয়ে এনেছি। নির্বাচনী কাজের প্রস্তুতি আগামী ১৫ অক্টোবর নির্বাচন কমিশনের আনুষ্ঠানিক বৈঠকে উপস্থাপন করা হবে।’ নির্বাচন কমিশনের সিনিয়র কর্মকর্তারা বলেছেন, ৩০ অক্টোবর নির্বাচনকালীন সরকারের সময় শুরুর পর ভোটের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হবে। ভোটের সার্বিক প্রস্তুতি নিয়ে অক্টোবরের শেষে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ করবে ইসি। এরপর ভোটের তারিখ নির্ধারণ করে তফসিলের সিদ্ধান্ত নেবে তারা। ডিসেম্বরের শেষ দিকে সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানে নভেম্বরের শুরুতে তফসিল ঘোষণা করা হতে পারে। ভোট গ্রহণের জন্য ২০ ডিসেম্বর, ২৭ ডিসেম্বর বা ৩ জানুয়ারি প্রাথমিক তারিখ চিন্তা করা হচ্ছে। তবে ২৭ ডিসেম্বর ভোট হওয়ার বিষয়টি মিডিয়ায় আসায় নভেম্বরের শুরুতে তফসিল দিয়ে ২০ ডিসেম্বরও ভোট করার কথা ভাবছে কমিশন। এ ক্ষেত্রে তফসিল ঘোষণা থেকে ভোট গ্রহণ পর্যন্ত ৪৪ থেকে ৪৭ দিন হাতে রেখে ৮ নভেম্বরের মধ্যে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করতে পারে ইসি।

সর্বশেষ খবর