বুধবার, ১০ অক্টোবর, ২০১৮ ০০:০০ টা
প্রকৃতি

সাদা-কালো জলচর পাখি খোয়াজ

আলম শাইন

সাদা-কালো জলচর পাখি খোয়াজ

পাখির বাংলা নাম ‘খোয়াজ’। ইংরেজি নাম ‘পায়েড অ্যাভোসেট (Pied Avocet)’। বৈজ্ঞানিক নাম, Recurvirostra avosetta। অঞ্চলভেদে ‘ঢেঙ্গা’ নামেও পরিচিত। এটি পরিযায়ী পাখি। বৈশ্বিক বিস্তৃতি দক্ষিণ-পূর্ব সাইবেরিয়া, উত্তর-পূর্ব চীন, পূর্ব-দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে ইউরোপের বিভিন্ন অঞ্চল। আমাদের দেশে পরিযায়ী হয়ে আসে কনকনে শীতে।তবে যত্রতত্র বিচরণ করে না। বিচরণ করে উপকূলীয় অঞ্চলের মোহনাতে। প্রথম দেখা যায় ১৯৮২ সালে। হাতিয়ার পশ্চিমে ঢালচর এলাকায় দেখা যাওয়ার তথ্য রয়েছে। এরা নিরীহ প্রকৃতির। দৃষ্টিনন্দন চেহারা। প্রথম দেখায়ই মোহিত হন যে কেউ। বেশিরভাগ সময় একাকী শিকারে বের হলেও মাঝে-মধ্যে দলবদ্ধভাবে বিচরণ করে। জলচর পাখি হলেও হাঁটু সমান জলে নেমে শিকার ধরে। জলে ভেসে বা সাঁতার কেটে খাবার খোঁজে না। শিকার ধরার কৌশল বেশ চমৎকার। ঠোঁট জলে ডুবিয়ে ডানদিকে জল সরিয়ে শিকার ধরে। এদের ঠোঁটজোড়া দেখার মতোই। জলচর পাখিদের মধ্যে একমাত্র এ পাখিদের ঠোঁটই সরু এবং সুচালো। কণ্ঠস্বরও ব্যতিক্রমী। ‘ক্লু-ইট-ক্লি-ইউ’ সুরে আওয়াজ করে। লম্বায় এরা ৩৫-৪০ সেন্টিমিটার। লম্বা পা, ২৩-২৫ সেন্টিমিটার উঁচু। ঠোঁট লম্বা সরু সুচালো; উপরের দিকে বাঁকানো। গোড়া থেকে ডগা পর্যন্ত কালো। মাথা, ঘাড় কালো।

 পুরো শরীরই সাদা-কালো পালকে আবৃত। তন্মধ্যে গলা থেকে লেজের তলা পর্যন্ত ধবধবে সাদা। সাদা পিঠের দুই পাশে দুটি কালো পট্টি। লম্বা পা জোড়া ধূসরাভ-নীল। স্ত্রী-পুরুষ পাখি দেখতে একই রকম। আকারে স্ত্রী পাখি খানিকটা খাটো। এদের প্রধান খাবার জলজ পোকামাকড়, কেঁচো ইত্যাদি। প্রজনন মৌসুম এপ্রিল থেকে আগস্ট। জলাশয়ের কাছাকাছি খোলা জায়গায় সামান্য খড়কুটা দিয়ে বাসা বাঁধে। ডিম পাড়ে ৩-৪টি। ফুটতে সময় লাগে ২৩-২৫ দিন। শাবক বাসা ছাড়ে ৩৫-৪২ দিনের মধ্যে। প্রজনন সক্ষম হতে সময় লাগে ২-৩ বছর।

সর্বশেষ খবর