শুক্রবার, ১২ অক্টোবর, ২০১৮ ০০:০০ টা

১৪ দলের জনসভাকে কেন্দ্র করে এমপি ও বিরোধীদের সংঘর্ষ

নাটোর প্রতিনিধি

নাটোরের বড়াইগ্রামে ১৪ দলের জনসভাকে কেন্দ্র করে স্থানীয় আওয়ামী লীগে কোন্দল বেড়েছে। দীর্ঘ প্রায় চার বছর ধরে বড়াইগ্রাম উপজেলা চেয়ারম্যান ও গুরুদাসপুর পৌর মেয়র সমর্থকদের সঙ্গে নাটোর-৪ (বড়াইগ্রাম-গুরুদাসপুর) আসনের এমপি অধ্যাপক আবদুল কুদ্দুস সমর্থকদের বিরোধ চলে আসছে। সর্বশেষ বুধবার বিকালে ও রাতে পৃথক তিন স্থানে ১৪ দলের সমম্বয়ক স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিমের জনসভাকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের হামলায় আহত হন নগর ইউপি চেয়ারম্যান নিলুফার ইয়াসমিন ডালু (৪২), বনপাড়া পৌর কাউন্সিলর মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শরীফুন্নেছা শিরিন (৪০), উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মানিক রায়হান (২৭), সাবেক ছাত্রলীগ নেতা জিল্লুর রহমান জিন্নাহ (৩৪), জোনাইল যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক রবিউল করিম (৩৫), ওয়ার্ড সহসভাপতি আলাউদ্দিন প্রামাণিক (৪৭), মহিলা আওয়ামী লীগ কর্মী জুলেখা বেগম (৩৫), সখিনা বেগম (৫০), সুমি আক্তারসহ (৩২) ১২ নেতা-কর্মী। তারা বড়াইগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও স্থানীয় ক্লিনিকে চিকিৎসা নিয়েছেন। এর মধ্যে রবিউল করিমের অবস্থা গুরুতর। তিনি বনপাড়া পাটোয়ারী জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। জানা যায়, বিকালে বড়াইগ্রাম পাইলট উচ্চবিদ্যালয় মাঠে ১৪ দলের সমাবেশে যাওয়ার সময় লক্ষ্মীকোল এলাকায় বড়াইগ্রাম উপজেলা চেয়ারম্যান ডা. সিদ্দিকুর রহমান পাটোয়ারী সমর্থিত মিছিলের মধ্য দিয়ে এমপি কুদ্দুস অনুসারী ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা যাওয়ার সময় মোটরসাইকেলের ধাক্কায় আহত হন চার-পাঁচ জন। এ সময় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লে পৌর গেটে দুই পক্ষের সংঘর্ষে আহত হন এমপি কুদ্দুস অনুসারী ইউপি চেয়ারম্যান ডালু, ছাত্রলীগ নেতা মানিক ও জিন্নাহ এবং ডা. সিদ্দিক অনুসারী পৌর কাউন্সিলর শিরিন ও তিন মহিলা আওয়ামী লীগ কর্মী। অন্যদিকে রাত ১০টার দিকে জোনাইল চৌমহান বাজারে ডা. সিদ্দিকের মিছিলে যোগ দেওয়ার অপরাধে এমপি কুদ্দুসের অনুসারীরা সিদ্দিক সমর্থকদের উওপর হামলা চালান। এতে আহত হন যুবলীগ নেতা রবিউল, আওয়ামী লীগ নেতা আলাউদ্দিন, কর্মী গোলাম রাব্বানী ও মোহাব্বত আলী। বড়াইগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দিলিপ কুমার দাস জানান, থানায় এ ব্যাপারে এখন পর্যন্ত কেউ কোনো অভিযোগ নিয়ে আসেনি। উপজেলা চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য-জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদক ডা. সিদ্দিকুর রহমান বলোন, ‘১৪ দলের সমাবেশের আগের দিন আমার সমর্থনে সব ফেস্টুন প্রতিপক্ষরা ভেঙে ফেলেছে। ৫১টি বাসযোগে ২৫ হাজারের বেশি মানুষ নিয়ে আমি সমাবেশে প্রবেশ করতে চাইলে প্রধান গেটে বাধাপ্রাপ্ত হই। আর তখন কিছুটা বিশৃঙ্খল পরিবেশের সৃষ্টি হলে সমাবেশ সফল করার লক্ষ্যে আমার নেতৃত্বে পরিস্থিতি শান্ত হয়। কিন্তু রাতে আবারও পরিকল্পিতভাবে আমার ফেস্টুন ভেঙে ফেলা, নেতা-কর্মীদের ওপর সশস্ত্র হামলা ও ভয়ভীতি দেখানোটা উচিত হয়নি।’ শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের মধ্য দিয়ে নৌকা প্রতীকের জন্য কাজ করতে তিনি সবার প্রতি আহ্বান জানান। অধ্যাপক আবদুল কুদ্দুস বলেন, ‘লাখো মানুষের ঢল দেখে ঈর্ষান্বিত হয়ে প্রতিপক্ষরা সমাবেশ পণ্ড করার চেষ্টা চালানোয় ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীরা প্রতিহত করার চেষ্টা করেছেন। আমার জানা মতে, আমার সমর্থকরা কারও ওপর হামলা করেনি। বরং হামলার শিকার হয়েছে।’

সর্বশেষ খবর