শনিবার, ১৩ অক্টোবর, ২০১৮ ০০:০০ টা
গৃহবধূ সেতু বর্মণ হত্যা

ময়নাতদন্ত রিপোর্ট পাওয়ার পরও রহস্য

মাহবুব মমতাজী

গৃহবধূ সেতু বর্মণ (১৯) হত্যা সংক্রান্ত ময়নাতদন্ত রিপোর্ট পাওয়ার পরও রহস্য রয়েই গেছে। রিপোর্টে শ্বাসরোধ করে হত্যার কথা বলা হলেও কে বা কারা হত্যাকারী এবং কেন এই হত্যাকাণ্ড— তা জানা যায়নি।

প্রসঙ্গত, গত বছরের ১১ আগস্ট গাজীপুরের মেয়ে সেতু বর্মণের লাশ উদ্ধার করা হয় রাজধানীর সূত্রাপুরের শ্বশুরবাড়ি থেকে। এ ঘটনায় সূত্রাপুর থানায় অপমৃত্যুর মামলা হয় এবং সেতুর স্বামী বিশ্বনাথ চন্দ্র মালোকে (৩০) গ্রেফতার করা হয়। এর এক বছর পর ময়নাতদন্তের রিপোর্ট প্রকাশ করা

হয়। সম্প্রতি স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ ময়নাতদন্ত রিপোর্ট দিয়ে বলেছে, সেতুকে শ্বাসরোধে খুন করা হয়। গত ২৩ সেপ্টেম্বর সেতুর বাবা ক্ষিতীশ চন্দ্র বর্মণ বাদী হয়ে বিশ্বনাথকে আসামি করে সূত্রাপুর থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। দুই দিনের মাথায় ২৫ সেপ্টেম্বর সেতুর স্বামী বিশ্বনাথকে ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন করলে ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে আদালত। রিমান্ড আবেদনে বলা হয়, সেতু হত্যাকাণ্ডে বিশ্বনাথ জড়িত থাকার যথেষ্ট প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে। কিন্তু রিমান্ড শেষে হত্যার কোনো কারণ কিংবা ক্লু খুঁজে পাননি তদন্ত কর্মকর্তা। বিশ্বনাথের দাবি, বিয়ের পর থেকে সেতুর সঙ্গে তার ভালো সম্পর্ক যাচ্ছিল না। এ নিয়ে তাদের মধ্যে মনোমালিন্য চলছিল। সেতু যখন আত্মহত্যা করেন, তখন বিশ্বনাথ বাসায় ছিলেন না। সূত্রাপুর থানা পুলিশ বলছে, বিয়ের ৪০ দিনের মাথায় সেতুর লাশ তার শ্বশুরবাড়ি থেকে উদ্ধার করা হয়। ঘটনার এক বছর পর জানা গেল যে- সেতুকে খুন করা হয়। সেতুকে কেন খুন করা হয়, সে ব্যাপারে এখন পুলিশ জানার চেষ্টা করছে। জানা গেছে, সেতুরা পাঁচ বোন। গাজীপুরের একটি কলেজে উচ্চ মাধ্যমিকে পড়ার সময় বিশ্বনাথের সঙ্গে গত বছরের ১১ আগস্ট ২ লাখ ৮০ হাজার টাকা যৌতুকে তার বিয়ে হয়। সেতুর বাবা ক্ষিতীশ চন্দ্র এলাকায় মাছ বিক্রি করে সংসার চালান। গত ১১ আগস্ট সেতুর বাবাকে রাত ১০টার দিকে সূত্রাপুর থেকে এক লোক ফোনে জানান- সেতু আত্মহত্যা করেছে। খবর পেয়ে সূত্রাপুরের বাসায় আসার পর স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ মর্গে গিয়ে তিনি মেয়ের লাশ দেখেন।

ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজের চিকিৎসক হারুন-উর-রশীদ জানিয়েছেন, সেতুকে যে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছিল, তাতে কোনো সন্দেহ নেই। কারণ সেতুর শরীরে জখমের দাগ ছিল। গলায় অর্ধচন্দ্রাকৃতির কোনো দাগ ছিল না। ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কোতোয়ালি জোনের সিনিয়র সহকারী কমিশনার (এসি) বদরুল আলম রিয়াদ এ প্রতিবেদককে বলেন, সেতুর মৃত্যু রহস্য উদ?ঘাটনের জন্য ঘটনাস্থলের সাক্ষীদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তদন্ত অব্যাহত রয়েছে। মৃত্যুর কারণ উদঘাটনে চলা তদন্তে বেশ কিছু অগ্রগতি রয়েছে। আমরা সেই বিষয়গুলো খুব শিগগির প্রকাশ করব।

সর্বশেষ খবর