রবিবার, ১৪ অক্টোবর, ২০১৮ ০০:০০ টা

পদ্মাতীরে উৎসব আজ

চলমান কাজের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী

মুন্সীগঞ্জ ও মাদারীপুর প্রতিনিধি

পদ্মাতীরে উৎসব আজ

পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজ নিয়ে পদ্মার দুই তীর মুন্সীগঞ্জ, মাদারীপুর ও শরীয়তপুরে আজ উৎসবের আমেজ। দক্ষিণাঞ্চলের কোটি মানুষের স্বপ্নের পদ্মা সেতুর চলমান কাজের উদ্বোধন উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ আসছেন পদ্মাপাড়ে। প্রধানমন্ত্রী ঘুরে দেখবেন পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজের মান আর অগ্রগতি। এ ছাড়া সুধী সমাবেশ আর জনসভায় বক্তব্য রাখবেন তিনি। এতে দক্ষিণের জেলা মুন্সীগঞ্জ, শরীয়তপুর আর মাদারীপুরের নেতা-কর্মী আর জনসাধারণের মধ্যে  প্রাণচাঞ্চল্য দেখা দিয়েছে। আয়োজকরা আশা করছেন, জনসভায় লক্ষাধিক মানুষের জমায়েত হবে।

মাদারীপুর জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বেলা ১১টায় মাওয়া প্রান্তের পদ্মা সেতুর নামফলক উন্মোচন, মহাসড়কের ঢাকা-মাওয়া অংশের উদ্বোধন, মাওয়া প্রান্তে পদ্মা রেল সংযোগ প্রকল্পের নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করবেন। পরে তিনি মাওয়ার টোলপ্লাজার সামনে সুধী সমাবেশে বক্তব্য রাখবেন। এরপর তিনি সোয়া ১২টার দিকে শরীয়তপুরের জাজিরা প্রান্তে গিয়ে পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের নির্মাণ কাজের উদ্বোধন, পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্পের সার্বিক অগ্রগতি পরিদর্শন, মূল নদী শাসন কাজ সংলগ্ন স্থায়ী নদী তীর প্রতিরক্ষামূলক কাজের উদ্বোধন, পদ্মা সেতুর জাজিরা প্রান্তের নামফলক উন্মোচন এবং পাঁচ্চর-ভাঙ্গা ১ হাজার ৩৯০ মিটার ছয় লেন সড়কের কাজের উদ্বোধন করবেন। এরপর বিকাল ৩টায় মাদারীপুরের কাঁঠালবাড়ী ঘাট এলাকায় আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় যোগ দেবেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃঢ়চেতা সিদ্ধান্তে নিজস্ব অর্থায়নে নির্মাণাধীন বহুল আকাঙ্ক্ষিত পদ্মা সেতু আজ দৃশ্যমান বাস্তবতা। ইতিমধ্যে সেতুর নির্মাণ কাজের সার্বিক অগ্রগতি হয়েছে প্রায় ৬০ ভাগ। প্রধানমন্ত্রীর আগমন উপলক্ষে পদ্মা সেতুর উভয় প্রান্ত প্রস্তুত রয়েছে। কয়েক দফায় সভাস্থল পরিদর্শন করেছেন একাধিক মন্ত্রী, এমপি ও সেনাবাহিনীসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের গতকাল দুপুরে মুন্সীগঞ্জের লৌহজং উপজেলার ঢাকা-মাওয়া মহাসড়কের পদ্মা সেতু টোলপ্লাজা সংলগ্ন প্রধানমন্ত্রীর সভা মঞ্চ পরিদর্শন করেন। এ সময় তিনি বলেন, পদ্মা সেতু নির্মাণে যেসব সফলতা, অবদান ও কৃতিত্ব সব বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার। দৃশ্যমান পদ্মা সেতু শেখ হাসিনার একক সাহসী নেতৃত্বের সোনালি ফসল। মন্ত্রী হিসেবে তিনি অত্যন্ত সংকটে দায়িত্ব দিয়েছিলেন আমাকে। তখন বিশ্বব্যাংক সেতু নির্মাণ উদ্যোগ থেকে সরে গিয়েছিল। আমাকে যে দায়িত্ব দিয়েছেন তা আমি অক্ষরে অক্ষরে পালনের চেষ্টা করেছি। আমি একা নই, এখানে একটি টিম কাজ করেছে। টিমে সচিব, পিডি, সেনাবাহিনী, উভয় পারের জনগণ, সাংবাদিক, জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন ও আনসারদের মূল্যবান অবদান ছিল।

তিনি আরও বলেন, হলি আর্টিজান হামলার পর পদ্মা সেতুতে হামলার ষড়যন্ত্র ছিল। সেনাবাহিনীর উপস্থিতি এক্ষেত্রে কতটা কাজে লেগেছে তা হাড়ে হাড়ে আমি টের পেয়েছি। বিদেশি প্রকৌশলী, পরামর্শকরা চলে যেতে চেয়েছিলেন। এরকম প্রতিকূল পরিবেশে সেনাবাহিনী সদস্যরা সাহস জুগিয়েছেন। এই সত্যতা অস্বীকার করার কিছু নেই। সেতু নির্মাণে পদ্মা পাড়ের শিবচর, জাজিরা, লৌহজং, শ্রীনগর উপজেলার জনগণ, স্থানীয় এমপিসহ জনপ্রতিনিধি সীমাহীন কষ্ট স্বীকার করেছেন। শত শত বছরের বাপ-দাদার ভিটেমাটি ছেড়ে দিতে হয়েছে এই সেতুর জন্য।

মাদারীপুর জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি সাহাবুদ্দিন আহম্মেদ মোল্লা জানান, প্রধানমন্ত্রীর এ সফর বিশেষ বার্তা বহন করবে দক্ষিণাঞ্চলবাসীর জন্য। আমরা এ সভা থেকে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনেরও দিকনির্দেশনা পাব।

মাদারীপুর পুলিশ সুপার সুব্রত কুমার হালদার জানান, প্রধানমন্ত্রীর আগমন নিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী থেকে নেওয়া হয়েছে জোরালো নিরাপত্তা ব্যবস্থা। আমরা আট স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করেছি। বিভিন্ন বাহিনীর সদস্যরা পোশাক পরিহিত ও সাদা পোশাকে দায়িত্ব পালন করবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর