ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের বিতর্কিত ধারাগুলো সংশোধনের দাবিতে সম্পাদক পরিষদের সাত দফা দাবির প্রতি পূর্ণ সমর্থন জানিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি। গতকাল দুপুরে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি এক সংবাদ সম্মেলনে এ সমর্থন জানায়। এ ছাড়া এ বিষয়ে সম্পাদক পরিষদকে বিনামূল্যে আইনি সহযোগিতা দেওয়ার কথা জানান সমিতির সভাপতি জয়নুল আবেদীন। এ ছাড়া ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের বিতর্কিত ৯টি ধারা সংশোধন চেয়ে লিগ্যাল নোটিস পাঠিয়েছে সুপ্রিম কোর্টের এক আইনজীবী। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে জয়নুল আবেদীন বলেন, বিভিন্ন মহলের ব্যাপক আপত্তি ও মতামত উপেক্ষা করে পাস হওয়া ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন নিয়ে তীব্র ক্ষোভ ও অসন্তোষ বিরাজ করছে। এই আইন পূর্বের ৫৭ ধারার চেয়েও উদ্বেগজনক। বর্তমান আইনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে অপরিসীম ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া সংবিধান প্রদত্ত অনুচ্ছেদ ৩৯(১) এবং ৩৯(২) এর সব অধিকার হরণ করা হয়েছে। তাই আমরা সম্পাদক পরিষদের সাত দফা সমর্থন করছি। তিনি বলেন, এই আইন নিয়ে জনমনে আতঙ্কের সৃষ্টি হয়েছে। সব মহলের মধ্যে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা দেখা দিয়েছে। আইনটি সংবাদ মাধ্যমের স্বাধীনতার প্রতি বাস্তব হুমকি। সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি আরও বলেন, আমরা দেশ ও গণতন্ত্র, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা এবং মানুষের সাংবিধানিক অধিকার রক্ষার লক্ষ্যে এই আইনের নিবর্তনমূলক ধারা অনতিবিলম্বে বাতিলের জোর দাবি করছি। এ সময় সমিতির সম্পাদক এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন বলেন, এ আইনে দেশের যে কোনো নাগরিক হয়রানির শিকার হলে তাদের সহযোগিতা দেওয়া হবে। সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন সমিতির সহসভাপতি গোলাম মোস্তফা, গোলাম রহমান ভূঁইয়া, কোষাধ্যক্ষ নাসরিন আক্তার, সিনিয়র সহসম্পাদক কাজী মো. জয়নুল আবেদীন, সদস্য মাহফুজ বিন ইউসুফ, ব্যারিস্টার শফিউল আলম মাহবুব, আহসান উল্লাহ, মেহেদী হাসানসহ বিএনপি সমর্থিত আইনজীবীরা।
লিগ্যাল নোটিস : সদ্য পাস হওয়া ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ৯টি ধারা সংশোধন চেয়ে সরকারকে আইনি নোটিস পাঠিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের এক আইনজীবী। আগামী ৩০ দিনের মধ্যে ধারাগুলো সংশোধনের উদ্যোগ না নিলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে ওই নোটিসে জানানো হয়েছে। গতকাল আইনজীবী এস এম জুলফিকার আলী জুনু রেজিস্ট্রি ডাকযোগে এ নোটিস পাঠান। তথ্যমন্ত্রী, আইনমন্ত্রী, মন্ত্রী পরিষদ সচিব, তথ্য সচিব, আইন সচিবকে নোটিসের জবাব দিতে বলা হয়েছে। নোটিসে বলা হয়েছে, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ৮, ২১, ২৫, ২৮, ২৯, ৩১, ৩১, ৪৩ ও ৫৩ ধারা গণমাধ্যমের স্বাধীনতা এবং বাকস্বাধীনতা সুরক্ষার অন্তরায় বলে সাংবাদিক নেতারা বিভিন্ন সমাবেশ, মানববন্ধন ও সেমিনারে দাবি করেছেন। এসব সভা-সমাবেশ থেকে এ ধারাগুলো বাতিল ও সংশোধনের দাবি করেছেন তারা। একই সঙ্গে ধারাগুলো সংবাদকর্মীদের স্বাধীনভাবে সংবাদ পরিবেশনে এবং প্রকাশে অন্তরায় হবে বলেও বিশিষ্ট সম্পাদকরা অভিমত প্রকাশ করেছেন। এ অবস্থায় আগামী ৩০ দিনের মধ্যে ধারাগুলো বাতিল করে আইনটি সংশোধন না করলে হাই কোর্টে রিট দায়ের করা হবে বলেও তিনি জানান।
