শিরোনাম
বুধবার, ১৭ অক্টোবর, ২০১৮ ০০:০০ টা

ভোটের আগে বাড়ছে না গ্যাসের দাম

নিজস্ব প্রতিবেদক

নির্বাচনের আগে আর বৃদ্ধি পাচ্ছে না গ্যাসের দাম। বরং তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আমদানিতে ৩ হাজার ১০০ কোটি টাকা ভর্তুকি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি)। গতকাল বিকালে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে টিসিবি ভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে সংস্থাটির এ সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়। আর এ আদেশ আগামীকাল (১৮ অক্টোবর) থেকে কার্যকর হবে। সংবাদ সম্মেলনে বিইআরসির চেয়ারম্যান মনোয়ার ইসলাম বলেন, চলতি বছরের ১৮ মার্চ গ্যাস ট্রান্সমিশন কোম্পানি (জিটিসিএল) কমিশনে সঞ্চালন ট্যারিফ বৃদ্ধির আবেদন করে। এরপর ২০ মার্চ গ্যাস বিতরণ কোম্পানি তিতাস, বাখরাবাদ, পশ্চিমাঞ্চল ও কর্ণফুলী এবং ২১ মার্চ জালালাবাদ ও সুন্দরবন গ্যাস বিতরণ কোম্পানি কর্তৃপক্ষ পৃথকভাবে তাদের বিতরণ চার্জসহ ভোক্তাপর্যায়ে গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধির জন্য কমিশনের কাছে পৃথক আবেদন করে। এরপর কমিশন আবেদনগুলো বিবেচনা করে জুনে শুনানি করে। গ্যাসের উৎপাদন, এলএনজি আমদানি ও সঞ্চালন ও বিতরণ ব্যয় বৃদ্ধি পাওয়ার পরও সার্বিক দিক বিবেচনা করে বিইআরসি রেগুলেটরি আইন, ২০০৩-এর ধারা ২২ (খ) ও ৩৪ অনুসারে কমিশন ভোক্তাপর্যায়ে বিদ্যমান মূল্যহার পরিবর্তন না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বিইআরসির সদস্য আবদুল আজিজ খান বলেন, এলএনজি আমদানিতে ৩ হাজার ১০০ কোটি টাকা ভর্তুকি প্রয়োজন হবে; যা সরকারি তহবিল থেকে সরবরাহ করা হবে। আর এ পরিমাণ ভর্তুকি দিলে এলএনজি আমদানিতে আর কোনো সমস্যা হবে না। সংবাদ সম্মেলনে আরও জানানো হয়, অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ কর্তৃক জারিকৃত ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৮-এর এস আর ওর মাধ্যমে ১৮ সেপ্টেম্বর থেকে এলএনজি আমদানির শুল্ক প্রত্যাহার করা হয়েছে। এ ছাড়া উক্ত বিভাগ কর্তৃক জারিকৃত ৩ অক্টোবরের আলাদা দুটি এস আর ওর মাধ্যমে ১৮ সেপ্টেম্বর থেকে প্রাকৃতিক গ্যাসের উৎপাদন পর্যায়ে সম্পূরক শুল্ক এবং আমদানি পর্যায়ে অগ্রিম কর ও অগ্রিম মূসক প্রত্যাহার করা হয়েছে। এর প্রেক্ষাপটে বিদ্যমান ‘গ্যাস মূল্যহার বণ্টন’ বিবরণী সংশোধন করে কমিশন আদেশ জারি করার সিদ্ধান্ত নেয়। এর বাইরে কমিশন নিরাপত্তা জামানত, বিল পরিশোধ, বিল পৌঁছানো বিষয়ে আগের নিয়মের পরিবর্তন করেছে। বিতরণ সিস্টেম লস নিরূপণের প্রচলিত পদ্ধতিতে পরিবর্তন আনা হয়েছে। এ ছাড়া গ্যাস সঞ্চালন ও বিতরণ ব্যবস্থাপনায় আরও কিছু সংস্কার কার্যক্রম বাস্তবায়নের আদেশ দেওয়া হয়েছে।

কমিশন এক প্রজ্ঞাপনে জানায়, নিরাপত্তা জামানত হিসেবে তিন মাসের পরিবর্তে দুই মাসের, ছয় মাসের পরিবর্তে চার মাসের বিলের সমপরিমাণ অর্থ নির্ধারণ করা হয়েছে। প্রিপেইড মিটার গ্রাহককে আর নিরাপত্তা জামানত দিতে হবে না। গ্যাসের বিলের কাগজে গ্যাসের মূল্যহার ঘনমিটারে ঘণ্টাপ্রতি ও মাসিক অনুমোদিত লোড, চালনা পদ্ধতি (দৈনিক কর্মঘণ্টা ও মাসিক কার্যদিবস), ডায়ভারসিটি ফ্যাক্টর সরবরাহ চাপ উল্লেখ করতে হবে। সব ধরনের গ্যাস ব্যবহারকারী সরবরাহ মাসের পরবর্তী মাসের শেষ তারিখ পর্যন্ত বিলম্ব মাশুল ছাড়া বিল পরিশোধ করতে পারবেন। আর এই সময়সীমার কমপক্ষে ১৫ দিন আগে গ্রাহকের কাছে বিতরণকারী কোম্পানিকে বিল পৌঁছাতে হবে। ক্যাপটিভ পাওয়ার ও শিল্প গ্রাহকের কো-জেনারেশন স্কিম অব্যাহতভাবে তিন মাস চালু থাকলে পরের তিন মাসের মধ্যে সেই গ্রাহকের তিন মাসের মোট বিলের (সারচার্জ ছাড়া) ওপর শূন্য দশমিক ২৫ শতাংশ হারে ছাড় দেওয়া হবে। এ সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন কমিশনের সদস্য রহমান মুরশেদ, মিজানুর রহমান ও মাহমুদ উল হক ভূঁইয়া।

সর্বশেষ খবর