বৃহস্পতিবার, ১৮ অক্টোবর, ২০১৮ ০০:০০ টা

অক্টোবরেই পানিশূন্য তিস্তা!

একের পর এক জেগে উঠছে বালুচর

রেজাউল করিম মানিক, লালমনিরহাট

অক্টোবরেই পানিশূন্য তিস্তা!

খরস্রোতা তিস্তা এই অক্টোবর মাসেই পানিশূন্য হয়ে পড়েছে। বর্ষা মৌসুম শেষ না হতেই যৌবন হারিয়ে ধু-ধু বালুচরে পরিণত হয়েছে দেশের অন্যতম বৃহৎ এ নদী। পানি উন্নয়ন বোর্ড বলছে, তিস্তা ব্যারেজ পয়েন্টে এখন পানি প্রবাহ গড়ে রয়েছে প্রায় ১৫ হাজার কিউসেক। কিন্তু প্রতিদিনই কমছে পানি, জেগে উঠছে একের পর এক বালুচর।

পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্র জানায়, চলতি অক্টোবরের মাঝামাঝিতেই তিস্তার পানি প্রবাহ কমতে শুরু করেছে। গতকাল ব্যারেজ পয়েন্টে পানির প্রবাহ ছিল ১৪ হাজার ৮০০ কিউসেক। পর্যাপ্ত পানির অভাবে তিস্তা ব্যারেজের সেচ কার্যক্রম ভেঙে পড়বে। তাই আসন্ন সেচ মৌসুমে তিস্তার পানির হিস্যা পাওয়া জরুরি। আর এক মাস পরেই সেচ নির্ভর ইরি-বোরো ও রবি আবাদের কার্যক্রম শুরু হবে। ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারী প্রকৌশলী এ এস এম আমিনুর  রশিদ জানান,  তিস্তা সেচ প্রকল্পসহ তিস্তা নদীকে বাঁচিয়ে রাখতে ন্যূনতম পানির প্রয়োজন প্রায় ২০ হাজার কিউসেক। অথচ বর্ষা শেষ না হতেই গত ১০ দিনে ব্যারেজের মূল গেটের পানি প্রবাহ এসে দাঁড়িয়েছে ১৪ হাজার ৮০০ কিউসেকে, যা দিয়ে তিস্তা ব্যারেজের সেচ কার্যক্রম চালানো কঠিন। কৃষকদের মতে, বোরো রোপণ থেকে গাছের শীষ হেলে না পড়া পর্যন্ত জমিতে সেচ দিতে হয়। এ কারণে তিস্তা ব্যারেজ সেচ প্রকল্পের আওতাভুক্ত এলাকার কৃষকরা তিস্তার সেচের উপরই নির্ভর করে থাকেন।

ওয়াকেবহাল সূত্র জানায়, ভারতের গজলডোবার প্রবেশ মুখে ও লালমনিরহাটের দোয়ানিতে ব্যারেজ নির্মাণ করে এ নদীর দুর্বার গতিকে রোধ করা হয়েছে। বছরের পর  বছর ধরে বিভিন্ন ক্যানেলের মাধ্যমে তিস্তার স্রোত ঘুরিয়ে দিয়ে তার বুক থেকে তুলে নেওয়া হয়েছে পানি প্রবাহ। ফলে মরে গেছে তিস্তা, দীর্ঘ এ তিস্তার বুক জুড়ে শুষ্ক মৌসুমে থাকছে শুধুই বালুচর। সেই ধারাবাহিকতায় এখন প্রতিদিনই পানি হ্রাস পাচ্ছে। খরসে াতশ্বিনী তিস্তা নদীর নাব্য এখন এতোটাই হ্রাস পেয়েছে যে, আসন্ন রবি মৌসুমে দেশের সর্ববৃহৎ সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারাজের সেচ কার্যক্রম চালানো কঠিন হয়ে পড়বে।

সর্বশেষ খবর