বৃহস্পতিবার, ১৮ অক্টোবর, ২০১৮ ০০:০০ টা

সৌদি সাংবাদিক খাশোগি হত্যার রহস্য উন্মোচন

সন্দেহভাজন খুনিদের ছবি প্রকাশ তুরস্কের

প্রতিদিন ডেস্ক

সৌদি সাংবাদিক খাশোগি হত্যার রহস্য উন্মোচন

সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদের এক দেহরক্ষী (গোল চিহ্নিত) জামাল খাশোগির অন্যতম সন্দেহভাজন খুনি। তুরস্ক গতকাল এই ছবিসহ কয়েকজনের পরিচয় প্রকাশ করে — ইন্টারনেট

সৌদি সাংবাদিক জামাল খাশোগি হত্যার রহস্য একে একে বেরিয়ে আসছে। সর্বশেষ তথ্যানুযায়ী, তাকে হত্যার আগে পৈশাচিকভাবে নির্যাতন করা হয়েছিল। এরপর তাকে কেটে টুকরো টুকরো করা হয়। সূত্র : রয়টার্স।

তুরস্ক সরকার সমর্থিত দৈনিক পত্রিকা ইয়েনি সাফাকের বরাত দিয়ে গতকাল বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হত্যার আগে ভয়াবহ নির্যাতনের এক পর্যায়ে সাংবাদিক জামাল খাশোগির আঙ্গুল কেটে ফেলা হয়। ইয়েনি সাফাক দাবি করেছে, তারা খাশোগিকে নির্যাতন ও হত্যার সময়ের একাধিক অডিও রেকর্ড শুনেছে। নির্যাতনের পর তাকে হত্যা করা হয়। এদিকে ওয়াশিংটন পোস্টের খবরে বলা হয়েছে, খাশোগিকে  কেটে টুকরো করা হয়। উল্লেখ্য, গত ২ অক্টোবর খাশোগি তুরস্কের ইস্তাম্বুলে  সৌদি কনস্যুলেট ভবনে ব্যক্তিগত নথিপত্র আনার প্রয়োজনে প্রবেশ করেন। সেখান থেকে তিনি আর  বেরিয়ে আসেননি। খাশোগি ওয়াশিংটন পোস্টে কলাম লিখতেন। তার কলামে সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের কঠোর সমালোচনা করা হতো। যুবরাজ মোহাম্মদ সালমান গত বছরের জুনে ক্ষমতা নেওয়ার পর খাশোগি গ্রেফতার আতঙ্কে দেশ  ছেড়ে যুক্তরাষ্ট্রে স্বেচ্ছা নির্বাসনে যান। তুর্কি পুলিশের দাবি, খাশোগিকে কনস্যুলেট ভবনের ভিতরে হত্যা করা হয়েছে। এই হত্যা মিশনে অংশ নেয় রিয়াদ থেকে ইস্তাম্বুলে আসা ১৫ সদস্যের সৌদি  স্কোয়াড। এই সদস্যের একজন সৌদি ফরেনসিক বিভাগের লেফটেন্যান্ট কর্নেল সালাহ মুহাম্মদ আল-তুবায়গি। ওয়াশিংটন পোস্টে আগেই মার্কিন ও তুর্কি একাধিক কর্মকর্তার নাম উল্লেখ না করে জানিয়েছে, অডিও-ভিডিও  রেকর্ড থেকে বোঝা যায়, খাশোগিকে কনস্যুলেট ভবনের ভিতর হত্যা করা হয়েছে। পরে তাকে কেটে টুকরো করা হয়। তবে মিডল ইস্ট আই ওয়েবসাইটে তুর্কি সূত্রকে উদ্ধৃত করে বলা হয়েছে, সেখানে খাশোগিকে জিজ্ঞাসাবাদের  কোনো চেষ্টা ছিল না। সৌদি দল গিয়েছিল তাকে হত্যা করতে। ওই সূত্র আরও জানিয়েছে, হত্যায় সাত মিনিট সময় লেগেছে। সৌদি ফরেনসিক বিভাগের সালাহ মুহাম্মদ আল-তুবায়গি যখন খাশোগির দেহ কেটে টুকরো টুকরো করছিলেন ‘তখনো বেঁচে ছিলেন’ খাশোগি। বলা হচ্ছে, হত্যার সময় তুবায়গি গান শুনছিলেন। এদিকে তুর্কি সূত্রকে উদ্ধৃত করে মার্কিন সংবাদমাধ্যম নিউইয়র্ক টাইমস জানিয়েছে, সন্দেহভাজনদের মধ্যে অন্তত চারজনের সঙ্গে সৌদি যুবরাজের সরাসরি সংশ্লিষ্টতা রয়েছে, তার মধ্যে মোহাম্মদ বিন সালমানের  দেহরক্ষী মাহের আবদুল আজিজ মুতরেবও রয়েছেন। তিনি একসময় লন্ডনস্থ সৌদি দূতাবাসে কূটনীতিক হিসেবে নিয়োজিত ছিলেন। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তুর্কি কর্তৃপক্ষ তাকে এখন খুঁজছে। সম্প্রতি সৌদি যুবরাজের মাদ্রিদ, প্যারিস ও যুক্তরাষ্ট্র সফরে তোলা ছবিতে মুতরেবকে পাহারারত অবস্থায় দেখা গেছে।

সর্বশেষ খবর