বৃহস্পতিবার, ১৮ অক্টোবর, ২০১৮ ০০:০০ টা
প্রকৃতি

বিলুপ্ত লাজুক মেটে তিতির

মোস্তফা কাজল

বিলুপ্ত লাজুক মেটে তিতির

আন্তর্জাতিক প্রকৃতি ও প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণ সংঘ (আইইউসিএন)-এর প্রতিবেদনে ‘মেটে তিতির’ পাখিটিকে বাংলাদেশ থেকে বিলুপ্ত হয়েছে বলে উল্লেখ থাকলেও তার দেখা মিলেছে। কয়েক দিন আগে কুষ্টিয়া জেলার গড়াই নদী সংলগ্ন হরিপুর চরে এই মেটে তিতির সন্ধান পেয়েছে ‘কিচিরমিচির’ নামের একটি সংগঠন। পাখিটির দেখা পাওয়াতে পাখিপ্রেমীদের মধ্যে আশার সঞ্চার হয়েছে। দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে, ‘কিচিরমিচির’ সংগঠনের বার্ডওয়াচার সদানন্দ মণ্ডল বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, বসবাসের অভাব ও পাখি শিকারিদের দৌরাত্ম্যে মেটে তিতির পাখিটি বাংলাদেশ থেকে বিলুপ্ত হয়েছিল। ফের পাখিটি বাংলাদেশে দেখা মিলছে। পাখিটি বড়ই লাজুক।  দৈর্ঘ্য ৩৩ সেন্টিমিটার। ওজন ২৭৫ গ্রাম। প্রাপ্তবয়স্ক পাখির পিঠে রয়েছে হালকা পীত, তামাটে, ধূসর-বাদামি ও বাদামি ডোরা, কালো চক্ষু-রেখা; পিঙ্গল-বাদামি চোখ, সরু কালো ডোরাকাটা হয়ে থাকে এই পাখি। পাখিটির পা লালচে হওয়াতে কাশ ঘাসের লালচে কাণ্ড ও তামাটে নলঘাসের সঙ্গে অদ্ভুতভাবে মিশে যায়। উপরন্তু বুকের ধূসর ডোরাকাটা দাগগুলো যেন মাটি আর শুকনো ঘাসের সঙ্গে মিলেমিশে একাকার। ফলে পাখিটি ছদ্মবেশে ঘাসবনের মধ্যে চলাফেরা করে।  যে কেউ সামনে দাঁড়িয়ে থাকলেও খুঁজে বের করতে বেগ পেতে হবে। পাখিটি দেশে মেটে তিতি নামে পরিচিত।

গত ১২ আগস্ট রাজশাহীর পদ্মার চরে ও পরবর্তীতে কুষ্টিয়ার গড়াই তীরবর্তী চরাঞ্চলে এদের দেখা পাওয়াতে পাখিপ্রেমীদের মনে এ পাখির অস্তিত্ব সম্পর্কে নতুন আশার সঞ্চার করেছে। বছরের মার্চ থেকে সেপ্টেম্বর এদের প্রজনন মৌসুম। পুরুষ পাখি জোরালো কণ্ঠে ডেকে উঠে এলাকায় তার আধিপত্যের জানান দেয়, পাশাপাশি স্ত্রী-পাখিকে আকর্ষণ করে। জোড়া বাঁধার পর ঘাসপাতা দিয়ে তৈরি বাসায় সচরাচর ৮-৯টি ডিম পাড়ে। টানা ১৮-১৯ দিন ডিমে তা দেওয়ার কাজটি স্ত্রী পাখি করে। পুরুষ পাখিও সেই সময়টা তার আশপাশেই থাকে। বিপদ আসন্ন দেখলে ডেকে উঠে স্ত্রীটিকে সতর্ক করে দেয়। এদের প্রধান খাবার ঘাসের ডগা, ঘাসবীজ ও  পোকামাকড়।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর