শনিবার, ২০ অক্টোবর, ২০১৮ ০০:০০ টা

শিশুসহ হাসপাতাল থেকে লাফিয়ে পড়ে মায়ের আত্মহত্যা

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি

মমতাময়ী মা তার নিজ নবজাতককে নিয়েই নিজেকে বিসর্জন দিলেন। ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে প্রসূতির বিল নিয়ে তর্কাতর্কির জের ধরে ঘটনাটি ঘটেছে। ছাদ থেকে লাফিয়ে পড়ে সীমা আক্তার (২৫) ও তার চার দিনের ছেলে শিশুকে নিয়ে আত্মহত্যা করেছেন।

গতকাল সকালে শহরের পুরাতন জেল রোড এলাকার দি ল্যাব এইড ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও স্পেশালাইজড হাসপাতালের সামনে এ ঘটনা ঘটে। তবে প্রসূতি ভর্তি ছিলেন লাইফ কেয়ার হাসপাতালে। এ মর্মান্তিক ঘটনার সঠিক তদন্তের দাবি সাধারণ মানুষের। পুলিশ বলছে, হাসপাতালের বিল নিয়ে হোক আর যে কারণেই হোক এ ঘটনার তদন্ত হবে। সদর উপজেলার বাসুদেব ইউনিয়নের ঘাটিয়ারা ফুলচং গ্রামের মনির মিয়ার স্ত্রী সীমা আক্তার। মনির লেবানন প্রবাসী। এক বছর আগে পারিবারিকভাবে তাদের বিয়ে হয়। গত ১৬ অক্টোবর বিকালে প্রসব বেদনা নিয়ে জেল রোডস্থ লাইফ কেয়ার হাসপাতালে ৩০২ নম্বর বেডে ভর্তি হন তিনি। ওই দিন সন্ধ্যায় সিজারের মাধ্যমে একটি পুত্র সন্তান জন্ম দেন। তিন দিন ধরে তার চিকিৎসা চলছিল। গতকাল সকাল ১০টায় হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র দেওয়ার কথা ছিল। বিল পরিশোধ নিয়ে গত বৃহস্পতিবার রাত থেকে তাকে উদ্বিগ্ন দেখাচ্ছিল। বিল নিয়ে তার মা রেহেনা বেগমের সঙ্গে তর্কাতর্কিও হয়। তবে স্বামীর বাড়ির লোকজন চেয়েছিল স্বাভাবিকভাবে বাচ্চা প্রসব করানোর জন্য। সিজারের মাধ্যমে বাচ্চা জন্ম দেওয়া এবং বিল পরিশোধ নিয়ে চিন্তিত ছিলেন সীমা। জানা গেছে, গতকাল সকালে সাড়ে ৮টায় তার মা হাসপাতালের রুম থেকে নাস্তা আনার জন্য বের হন। রুমে ফিরে দেখেন মেয়ে নেই। পরে অন্যান্য রোগীর স্বজনদের কাছ থেকে জানতে পারেন তার মেয়ে পার্শ্ববর্তী দি ল্যাব এইড হাসপাতালের ছাদ থেকে পড়ে আত্মহত্যা করেছেন। প্রথমে চার দিনের নবজাতক ছেলে ছুড়ে ফেলে দেন মা তারপর নিজে লাফ দিয়ে পড়ে আত্মহত্যা করেন। ওই কক্ষে ভর্তি রোগীর স্বজনরা জানান, সারারাত বাচ্চাটি দুধের জন্য কান্নাকাটি করছিল। সীমা ফোনে কারও সঙ্গে ঝগড়া করছিলেন। তবে হাসপাতালে উপস্থিত সীমার মা রেহানা বেগম কী কারণে তার মেয়ে নবজাতককে নিয়ে লাফিয়ে পড়েছেন— সেটি স্পষ্ট করে বলতে পারেননি। ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানা পুলিশের ১ নম্বর ফাঁড়ির পরিদর্শক (ইন্সপেক্টর) উসমান গনি বলেন, স্বামীর সঙ্গে সীমার কোনো বিষয়ে কলহ চলছিল কিনা সেটি আমরা এখনো জানতে পারিনি। কী কারণে তিনি ছাদ থেকে লাফিয়ে পড়েছেন সেটিও স্পষ্ট নয়। ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. সেলিম উদ্দিন জানান, প্রকৃত কারণ উদঘাটন করে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সর্বশেষ খবর