সোমবার, ২২ অক্টোবর, ২০১৮ ০০:০০ টা
চীনা কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি সই

দেশেই তৈরি হবে প্রিপেইড মিটার

নিজস্ব প্রতিবেদক

বাংলাদেশেই তৈরি করা হবে বিদ্যুতের প্রিপেইড মিটার। রাষ্ট্রীয় বিদ্যুৎ বিতরণ প্রতিষ্ঠান ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি ও চীনের হেক্সিং ইলেকট্রিক্যাল কোম্পানি যৌথভাবে এ মিটার তৈরি করবে। এ লক্ষ্যে গতকাল রাজধানীর বিদ্যুৎ ভবনে দুই প্রতিষ্ঠানের মধ্যে যৌথ মূলধনি কোম্পানি গঠনের চুক্তি সই হয়। চুক্তিতে পিডিবির সচিব আবদুল মোতালেব এবং হেক্সিংয়ের পক্ষে চেয়ারম্যান জো ইয়াং চেং সই করেন।

চুক্তি সই অনুষ্ঠানে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ, বিদ্যুৎ সচিব ড. আহমদ কায়কাউস, পিডিবির চেয়ারম্যান খালেদ মাহমুদ, হেক্সিং ইলেকট্রিক্যাল কোম্পানির চেয়ারম্যান  জো ইয়াং চেং, ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির চেয়ারম্যান ও অতিরিক্ত সচিব মাকসুদা আক্তার উপস্থিত ছিলেন। প্রসঙ্গত, দেশে বিদ্যুতের প্রিপেইড মিটারের জন্য খুলনার সাচিবুনিয়ায় ভাড়া করা কারখানায়ই কার্যক্রম শুরু করা হচ্ছে। তবে এ উদ্যোগকে আরও সম্প্রসারিত করে ভবিষ্যতে বড় পরিসরে মিটার তৈরির কারখানা গড়ে তোলা হবে। বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী বলেন, এ ধরনের উদ্যোগ এই প্রথম নেওয়া হয়েছে। অন্য কোম্পানিগুলোকে তিনি এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে বলেন, অনেক কোম্পানি এগিয়ে এলে মিটারের দাম কমে আসবে। প্রতিযোগিতার বাজার তৈরি হবে।

ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক শফিক উদ্দিন বলেন, আগামী বছর জানুয়ারি থেকেই মিটার উৎপাদন শুরু করার পরিকল্পনা করা হয়েছে। এর আগে সব মিটারই আমদানি করা হতো। এখন থেকে আমদানির পরিমাণ কমে যাওয়ায় রাষ্ট্রীয় অর্থের সাশ্রয় হবে। ধীরে ধীরে সব গ্রাহকের আঙিনায় প্রিপেইড মিটার বসানো হবে। এতে ব্যবহারের আগেই গ্রাহককে বিদ্যুতের বিল পরিশোধ করতে হবে। ফলে বিদ্যুৎ বিল শতভাগ আদায়ের পাশাপাশি বিল তৈরি ও সরবরাহ ব্যয় কমে যাবে। এতে বিতরণ কোম্পানিগুলো দুই দিক থেকে লাভবান হবে। বিদ্যুৎ বিভাগ সূত্রে জানা যায়, এখন দেশে মোট বিদ্যুতের গ্রাহকের সংখ্যা তিন কোটি ১০ লাখ। কিন্তু প্রিপেইড মিটার বসানো হয়েছে মাত্র ১৫ লাখ ৮০ হাজার গ্রাহকের আঙিনায়। সরকার বিতরণ কোম্পানিকে যে লক্ষ্য স্থির করে দিয়েছে তাতে বলা হয়েছে, ২০২০ সালের মধ্যে ৭৫ লাখ গ্রাহকের আঙিনায় মিটার বসাতে হবে। অর্থাৎ সরকারের পরিকল্পনা সফল করতে হলে দুই বছরে ৫৯ লাখ ২০ হাজার গ্রাহকের আঙিনায় মিটার বসাতে হবে। কিন্তু এত অল্প সময়ে এত বেশি মানুষের ঘরে ঘরে প্রিপেইড মিটার বসানো সম্ভব নয় বলে মনে করা হচ্ছে। ওয়েস্ট জোন ও হেক্সিং যৌথভাবে যে সমীক্ষা চালিয়েছে, তাতে দেখা যায় প্রতিটি মিটার আমদানি করতে এখন ব্যয় হচ্ছে সাড়ে চার হাজার টাকা। কিন্তু দেশে তৈরি করা হলে প্রতি মিটারের দাম পড়বে চার হাজার টাকা। অর্থাৎ প্রতি মিটারে সাশ্রয় হবে ৫০০ টাকা। তবে উৎপাদন বৃদ্ধি করা গেলে আরও কম খরচে মিটার উৎপাদন সম্ভব। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, একেবারে নতুন হওয়ায় বাংলাদেশে প্রিপেইড মিটারের বড় বাজার রয়েছে। তিন কোটি গ্রাহক আর চার হাজার টাকা ধরে হিসাব করলে দেশে প্রিপেইড মিটারের ১২ হাজার কোটি টাকার ব্যবসা রয়েছে।

 

সর্বশেষ খবর